
প্রার্থনারত হাত। ছবি : সংগৃহীত
চাকরির জন্য দোয়া: কী বলে ইসলাম?
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:০১
(প্রিয়.কম) অনেকেরই প্রশ্ন, একজন বেকার মানুষ চাকরির জন্য কী দোয়া করবে বা কোন দোয়া পাঠ করলে দ্রুত ও সহজে চাকরি হবে? প্রথম কথা হচ্ছে, আল্লাহ যাকে পথপ্রদর্শন করেন, কেউ তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না এবং যাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে তাকে কেউ সঠিক পথ দেখাতে পারে না। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া উপাসনার যোগ্য কেউ নেই আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, তোমার রব যার জন্য চান রিজিক প্রশস্ত করে দেন আবার যার জন্য চান সংকীর্ণ করে দেন। তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন এবং তাদেরকে দেখছেন (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত- ৩০)।
আল্লাহই তার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা রিজিক প্রসারিত করে দেন এবং যাকে ইচ্ছা সংকীর্ণ করে দেন। নিশ্চিতভাবে আল্লাহ সব জিনিস জানেন (সুরা আন কাবুত, আয়াত- ৬২)।
এছাড়া পবিত্র কোরআনে আরো ইরশাদ হয়েছে, আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো। এ অবস্থায় যারা সবর করে, এবং যখনই কোন বিপদ আসে বলে-আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে। তাদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও। তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের ওপর বিপুল অনুগ্রহ বর্ষিত হবে, তাঁর রহমত তাদেরকে ছায়াদান করবে এবং এই ধরনের লোকরাই হয় সত্যানুসারী। (সুরা বাকারা, আয়াত- ১৫৫-১৫৭)
মূলত বিষয়টি হচ্ছে আল্লাহপাক তার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করেন তার জন্য রিজিকের দরজাকে প্রশস্ত করে দেন এবং তিনি তাকে প্রাচুর্য দান করেন। সকল মানুষই আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষায় রয়েছেন। হতে পারে আপনার এই চাকরিহীন অবস্থা আপনার রবের পক্ষ থেকে কোনো পরীক্ষা। আপনি যদি ধৈর্য ধারণ করেন এবং আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখেন তাহলে তিনি আপনার কাছ থেকে তার এই পরীক্ষা উঠিয়ে নেবেন এবং আপনাকে চূড়ান্ত সফলতা দান করবেন, যা আপনি কল্পনাও করেননি।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক আরো বলেছেন, আল্লাহ কারোর ওপর তার সামর্থের অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপান না। প্রত্যেক ব্যক্তি যে নেকী উপার্জন করেছে তার ফল তার নিজেরই জন্য এবং যে গোনাহ সে অর্জন করেছে, তার প্রতিফলও তারই বর্তাবে। (হে ঈমানদারগণ, তোমরা এভাবে দোয়া চাও) হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যে সব গুনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো। (সুরা বাকারা, আয়াত- ২৮৬)
সুতরাং জীবন একটি ক্ষণস্থায়ী পরীক্ষা ছাড়া আর কিছুই না। আপনার রব আপনাকে হয়তো আরো নিয়ামত দিয়েছেন। আপনি সেই বিষয়ে শুকরিয়া আদায় করুন। আর আপনার প্রতিপালক আপনার অবস্থা সম্পর্কে খুব ভালো জানেন। তিনি ছাড়া কেউ আপনাকে এই সঙ্কট থেকে উদ্ধার করতে পারবেন না। সুতরাং তার কাছে দোয়া করুন। তিনি অবশ্যই আপনাকে আপনার এই সঙ্কট থেকে উদ্ধার করবেন।
এই ব্যাপারে আল্লাহর শেখানো উত্তম দোয়া হলো- পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক বলেছেন, এ কথা শুনে মূসা তাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান করিয়ে দিল। তারপর সে একটি ছায়ায় গিয়ে বসলো এবং বললো, হে আমার প্রতিপালক! যে কল্যাণই তুমি আমার প্রতি নাজিল করবে আমি তার মুখাপেক্ষী। (সুরা কাসাস, আয়াত- ২৪)
এছাড়া রাসূলের (সা.) বিভিন্ন হাদিসে বিপদকালীন ধৈর্যধারণ করা এবং হতাশ না হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ মহানের কাছে প্রার্থনা করার বিশেষ দিক-নির্দেশনা এসেছে।
প্রিয় ইসলাম/সিফাত বিনতে ওয়াহিদ