
ব্যারিস্টার এম আশরাফুল ইসলাম। ছবি: প্রিয়.কম
মুচলেকা নিয়ে পুলিশ কি কাউকে ছাড়তে পারে? (ভিডিও)
আপডেট: ০২ মে ২০১৯, ২১:০৪
(প্রিয়.কম) পুলিশ চাইলে মানবিক দৃষ্টিতে একজন নাগরিককে খুব সহজেই সহযোগিতা করতে পারেন অযথা হয়রানি না করে। আবার রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে চলাফেরা ও বসবাসের ক্ষেত্রে সচেতনতাও জরুরি বলে মনে করেন ব্যারিস্টার এম. আশরাফুল ইসলাম।
২ মে, বৃহস্পতিবার প্রিয়.কমের সঙ্গে আলপচারিতায় এমন কথা বলেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ অফিসারের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা সবচেয়ে জরুরি। আইনজীবী হিসেবে যেমন আমরা আদালতে আইন উপস্থাপন করি। একজন পুলিশ অফিসার তার ক্ষমতা ব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকের উপকার করতে পারেন। এখানে পুলিশ অফিসাররা আইনের বাইরে নয়, আইনের মধ্য থেকেই মানুষকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৯ ধারায় সেটিই বলা আছে। একজন পুলিশ অফিসার যদি মনে করেন কোনো ব্যক্তিকে আটক করে কোর্টে পাঠাবেন; পর্যাপ্ত আইনগত কোনো কারণ ছাড়াই তিনি পাঠাতে পারবেন। আবার আটক হওয়া ব্যক্তিকে মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ অফিসার তার (আটক হওয়া ব্যক্তি) দিকে যদি মানবিক দৃষ্টিতে তাকায়, তাহলে ওই ব্যক্তি জেল খাটবে না। আর যদি না তাকায় তাহলে সে জেল খাটবে, আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক সময় আমরা দেখি অনেককেই গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ আটক হওয়া ব্যক্তির সঙ্গে যদি কথা বলে জানতে পারে যে সে এ রকম অপরাধ এর আগে করেনি এবং এ অপরাধটি ছোট তাহলে মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দিতে পারে।’
‘আইনে কাভার করে এমন মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। ছাড়া পেলে ওই ব্যক্তি আর হয়তো অপরাধ করবে না। কিন্তু যদি পুলিশ তাকে ছেড়ে না দিয়ে কোর্টে পাঠিয়ে দেয়, তাহলে তার জন্য বিপদ। যদি লোকটা গরিব হয়। আমার জানা মতে, বাংলাদেশে খেটে খাওয়া মানুষ বেশি। বিশেষ করে ঢাকা শহরে অনেক গরিব মানুষ বসবাস করেন কাজের তাগিদে। কেউ দিনমজুর, কুলি, দোকানের কর্মচারী, বুক বাইন্ডিংয়ে বাঁধাইয়ের কাজ করেন। রিকশা চালিয়ে সংসার চালান এই শহরে। এই শ্রেণির একজনকে যদি পুলিশ গ্রেফতার করে থানা থেকে কারাগারে পাঠায় তাহলে একজন ম্যাজিস্ট্রেট কাউকে বেইল বন্ড (জামিননামা) ছাড়া ছেড়ে দিতে পারে না।’
‘গ্রামের একজন সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশ যদি এ রকম ব্যবহার করে তাহলে তার কোনো উপায় থাকে না। কারণ ওই ছেলেটি (দিনমজুর) তার রোজগারের সব টাকাই বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তাকে জামিন করানোর জন্য তদবির করার কেউ থাকে না। পারিবারিকভাবে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মানসিকভাবে চিন্তায় পড়ে যায়। এদিক বিবেচনায় অপরাধের মাত্রা দেখে একজন পুলিশ অফিসার মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দিতে পারেন। এটি হবে পুলিশের জন্য মানবিক কাজ।’
মুচলেকা সম্পর্কে ব্যারিস্টার এম. আশরাফুল ইসলামের আরও কথা শুনতে দেখুন ভিডিওটি।
প্রিয় সংবাদ/আজাদ চৌধুরী
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা