ছবি সংগৃহীত

৬টি উল্লেখযোগ্য আচরণ, যা আপনাকে জানিয়ে দেবে অন্য মানুষের মনের অবস্থা!

Kaniz DIya
লেখক
প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১৫:৪০
আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১৫:৪০

আমরা আমাদের আপনজনদের অনেক বেশি ভালোবাসি। তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সব কিছুর সাথে নিজেদের জড়িয়ে নিই। দাবি করি আমরা তাদের বেশ ভালো বুঝি। আপনজনদের মনের ভাব আগে থেকেই ধরতে পারি। কিন্তু আসলেই কি তা আমরা পারি? আমাদের আপনজনদের মধ্যে অনেকেই হয়তো দুঃখে আছেন কিন্তু আমরা তা ধরতে পারি না। কারণ, হয়তো তিনি আমাদের সামনে প্রকাশ করছেন না। নিজে দুঃখ বুকে চেপে হাসিমুখে আমাদের সামনে আসলে আমরা মনে করি তিনি ভালোই আছেন। আসলেই মানুষ এবং মানুষের মনের ভাব বোঝা বড় দায়। কিন্তু মানুষ যতই তার ভেতরে নিজের মনের ভাব ও মনের কথা লুকিয়ে রাখুক না কেন মানুষটার আচার আচরণে অনেক কিছুই ফুটে ওঠে। আমরা একটু নজর দিলেই বিষয়টি ধরতে পারি। আসুন তবে জেনে নেই কিছু আচার আচরণে মানুষের অপ্রকাশিত মনের ভাব ও মানসিক অবস্থা

‘যে মানুষটি সামান্য কারণে অনেক বেশি হেসে থাকেন’

যে মানুষটি অতি ক্ষুদ্র ও সামান্য কারণে অনেক বেশি হেসে ফেলেন তাকে আমরা ওপর দিয়ে বেশ হাসি খুশী মানুষ হিসেবেই ধরে নিই। মনে করি তার ব্যক্তিত্বই এমন যে তুচ্ছ ব্যপারেও এতো হাসি চলে আসে তার। কিন্তু আমরা কেউই জানি না এই হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তিটিই সবার চেয়ে দুঃখী। সাইকোলজিস্টদের মতে এই ধরণের ব্যক্তিরা সামান্য ব্যপারে এতো বেশি হাসেন কারণ তার জীবনে সুখের হাসি হাসার সুযোগ খুব কম। তারা হাসেন, পৃথিবীকে হাসান। তুচ্ছ ব্যাপারে খুশি হন, কারণ তারা জানেন না সত্যিকারের সুখ কি।

‘যখন একজন মানুষ অতিরিক্ত ঘুমান’

একজন মানুষ অতিরিক্ত ঘুমানো শুরু করলে আমরা তাকে অলস, অকর্মা ইত্যাদি নামে ভূষিত করি। কিন্তু এর আসল কারণ কেউ জানি না বা খুঁজে বের করি না। সাইকোলজিস্টরা বলেন, অতিরিক্ত ঘুমের পেছনে রয়েছে জীবনের একাকীত্ব। যে মানুষটি নিজেকে অনেক বেশি একা ভাবেন ও একাকীত্বে ভোগেন তিনি ঘুমকে সঙ্গী করে নেন। কারণ একমাত্র ঘুমালেই তিনি একাকীত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

‘যে মানুষটি কম কথা বলেন এবং কথা বললে অনেক দ্রুত বলেন’

খেয়াল করে দেখুন তো আপনার আশে পাশের পরিচিত কিংবা আপনজনদের মধ্যে কেউ কম কথা বলা শুরু করেছেন কিনা এবং অল্প কথা বললেও অনেক দ্রুত বলেন কিনা। যদি এমন কাউকে খুঁজে পান তবে বুঝবেন তিনি কিছু লুকোনোর চেষ্টায় আছেন। সাইকোলজিস্টরা মনে করেন, যে ব্যক্তি কোন কথা লুকোতে চান তিনি সব সময় কথা কম বলার চেষ্টা করেন যাতে কথায় কথায় লুকোনো কথাটি বের না হয়ে যায়। এবং যখন কথা বলেন তখন মনে এই চিন্তাটি থাকে বলেই যাই বলেন দ্রুত বলে হাঁফ ছাড়েন।

‘যখন একজন মানুষ অদ্ভুত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে খান’

যদি কখনো লক্ষ্য করেন আপনার সামনে বসা কোনো মানুষ কিংবা বাসাতেই আপনার আপনজনদের কেউ অদ্ভুত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবং হড়বড় করে খাবার খাচ্ছে তখন হুট করে মনে করে বসবেন না সামনে বসা মানুষটি অসামাজিক এবং আপনার আপনজন শুধু শুধু দুষ্টুমি করছেন। এই ধরণের কাজ একজন মানুষ তখনই করেন যখন তিনি খুব বেশি মাত্রায় দুশ্চিন্তায় থাকেন। দুশ্চিন্তা মাথায় ঘুরলে তিনি নিজেও জানেন না তিনি কি কাজ করছেন।

‘যখন কেউ অতি সামান্য বিষয়ে কেঁদে ফেলেন’

কথায় বলে ‘কান্না অনেক মূল্যবান একটি জিনিষ, কারণ মানুষ সবার সামনে হাসতে পারলেও সবার সামনে কাঁদতে পারেন না’। ঠিক তাই, কারণ মানুষ আপনজনের সামনেই কাঁদতে পারেন। কিন্তু এই কান্নার মাধ্যমেও বুঝে নিতে পারবেন মানুষের মনের অবস্থা। যারা অনেক শক্ত প্রকৃতির মানুষ হন তারা সহজে কাদেন না। কিন্তু যারা মনের দিক হতে দুর্বল,তারাই সামান্য ব্যাপারে কেঁদে ফেলেন। আবার কথায় কথায় কেঁদে ফেলা কিন্তু হতে পারে ছলনার লক্ষণ।

‘যখন কেউ খুব সামান্য বিষয়ে অতিরিক্ত রাগ করেন’

রাগ জিনিষটা শুধুমাত্র ঈর্ষা, হিংসা কিংবা প্রতিশোধ অথবা কারো কাজে কিংবা কথায় উঠে এটি সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা। সাইকোলজিস্টগন রাগ ওঠার অন্য একটি কারণ খুঁজে বের করেছেন। যদি কোন মানুষ নিজেকে ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত খুঁজে পান তখন সেই মানুষটি অতি তুচ্ছ বিষয়ে রাগ প্রকাশ করে থাকেন। জীবনে ভালবাসার কমতি তারা পূরণ না করতে পেরে সকল বিষয়ে রাগ ঝেড়ে দেন এবং পরিচিতি পান রাগী ও বদমেজাজি মানুষ হিসেবে। কিন্তু এই মানুষগুলোর মন থাকে সব থেকে নরম এবং ভালোবাসা পেতে ব্যাকুল।