ছবি সংগৃহীত

সুখী ও দীর্ঘ জীবনের প্রতীক "চন্দ্রমল্লিকা"

দেয়া
লেখক
প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ০৩:২৯
আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ০৩:২৯

এখন সেপ্টেম্বর মাস চলছে, আর কিছুদিন পরেই গরম এবং বৃষ্টির অবসান হয়ে একটু একটু করে শীত পড়তে শুরু করবে। আর এই শীতে আপনার বাগানে যোগ করুন রাজকীয় ফুল চন্দ্রমল্লিকা। “ক্রিসান্থেমাম” অথবা শুধুই “মাম” বলে ডাকা হয় এই ফুলকে এবং এ কারনেই পাশ্চাত্যে মা দিবসে এই ফুল মাকে উপহার দেবার প্রথা চালু রয়েছে। শুধু তাই নয়, এর বিভিন্ন রঙের বাহার এবং আকৃতিগত বৈচিত্র্যের জন্য এর বেশ কদর রয়েছে। আদিকালে এর একটিই রূপ থাকলেও পরবর্তীতে এর বিভিন্ন রঙ এবং আকৃতির উদ্ভব হয়। বর্তমানে চীনে প্রায় তিন হাজার প্রজাতির চন্দ্রমল্লিকা চাষ হয় এবং এর চাষ চলে আসছে বিগত আড়াই হাজার বছর ধরে। ঔষধের উপাদান হিসেবে এর ব্যবহার আছে। জাপানে একে বিশেষ দৃষ্টিতে দেখা হয় কারণ কারণ এটা হলো রাজপরিবারের প্রতীক। চন্দ্রমল্লিকা জাপানের জাতীয় ফুল হিসেবে রয়েছে গত ১০০ বছর ধরে এবং সুখী ও দীর্ঘ জীবনের প্রতীক হিসেবে একে দেখা হয়। ১৮শ শতকের শেষ দিকে একে ইউরোপে নিয়ে শঙ্কর করা হয় এবং এ থেকেই এসেছে আজ এর এত বৈচিত্র্য।

চন্দ্রমল্লিকার বিভিন্ন রঙের মাঝে রয়েছে নিখুঁত সাদা থেকে শুরু করে সব রকমের গোলাপি, খয়েরি, ব্রোঞ্জ, হালকা কমলা থেকে শুরু করে উজ্জ্বল লেবু সবুজ। এদের কিছু কিছু থাকে একটি কাণ্ডের ওপর একটিই বড় ফুল। আবার কখনো কখনো একগুচ্ছ ছোট ছোট ফুল দেখা যায়। ফুলের আকৃতি হতে পারে মাকড়সার মতো, বলের মতো অথবা ব্রাশের মতো। গাছের পাতার রয়েছে অন্যরকম ঝাঁঝালো গন্ধ। পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতেই পাতার এই বৈশিষ্ট্য। চন্দ্রমল্লিকা ফুল দিয়ে ঘর সাজানোর একটি বিশেষ সুবিধা হল, এটি গাছ থেকে কেটে নিলেও বেশ কিছু সময় ধরে তাজা থাকে, অন্যান্য ফুলের মতো নেতিয়ে যায় না সহজেই। ঠিকভাবে ফুলদানিতে পানি দিয়ে রাখলে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত একে তাজা রাখা যায়।

যেভাবে ফোটাবেন চন্দ্রমল্লিকাঃ

  • -চন্দ্রমল্লিকার গাছ জন্মানোর সবচাইতে ভালো উপায় হল সাকার সংগ্রহ। একটা বড় চন্দ্রমল্লিকা গাছের কাণ্ডের নিচের দিক থেকে কিছু ছোট ছোট শাখা বের হয় এবং এগুলো মাটির নিচ দিয়ে অগ্রসর হয়। এগুলোকে বলে সাকার। বড় গাছ থেকে এই সাকার আলাদা করে নিয়ে আপনি টবের মাটিতে অথবা বাগানে পুঁতে দিতে পারেন। নার্সারিতেও এই সাকার পাওয়া যায়।
  • -খোলা, রৌদ্রোজ্জ্বল স্থানে সবচাইতে ভালো জন্মায় চন্দ্রমল্লিকা। তবে যথেষ্ট আলো থাকলে ঘরের ভেতরেও টবে এটি জন্মে। খুব বেশি ছায়া থাকলে অবশ্য সমস্যা। সেক্ষেত্রে গাছটি শুকনো এবং আঁকাবাঁকা হয়ে বেড়ে উঠবে আর তেমন ভালো ফুল হবে না।
  • -চন্দ্রমল্লিকার জন্য ব্যবহার করুন কম্পোস্ট এবং সার দেওয়া হালকা দোআঁশলা মাটি যাতে পানি আটকে না থাকে। চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর পর এতে সার দিলে গাছ ভালো থাকবে।
  • -আপনি কি ধরণের ফুল চান তার উপরে নির্ভর করে গাছের যত্ন নিতে হবে। যদি আপনি বেশি ফুল চান তবে গাছ ২০ সেন্টিমিটার বড় হবার পর এর আগার অল্প কিছু অংশ কেটে ফেলুন। আর যদি আপনি বড় ফুল চান তবে ফুলের কুঁড়ি হবার সাথে সাথে কিছু পরিমাণ কুঁড়ি কেটে ফেলুন। এক্ষেত্রে ফুল কম হবে কিন্তু এদের আকৃতি বড় হবে।
  • -চন্দ্রমপ্ললিকায় খুব বেশি পোকা হয় না। সাধারণ কীটনাশক স্প্রে করতে পারেন যদি বেশি বিরক্ত করে। আর কোনও রোগ বালাই হলে আক্রান্ত পাতা বা ফুল উঠিয়ে ফেলে দিলেই সাধারণত রোগের প্রকোপ কমে যায়। তবে এই ছবির মতো হোয়াইট রাস্ট হলে পুরো গাছটাই উঠিয়ে ফেলে দিতে হবে যাতে অন্য গাছে না ছড়ায়।