ছবি সংগৃহীত

সিল্কি সিল্কের যত্নআত্তি

Tahmina Sultana Chhanda
লেখক
প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০১৩, ২১:১১
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৩, ২১:১১

উত্সবে-অনুষ্ঠানে বাঙালি নারীদের পছন্দের তালিকায় সিল্ক শাড়ির গ্রহণযোগ্যতা বহুকাল আগে থেকেই। আপনার পুরো বাহ্যিক রূপকে জমকালো করে তুলতে পারেন সিল্ক শাড়ির সিল্কি পরশে। কিন্তু আপনার অনেক শখের পুরনো ও দামী শাড়িগুলোকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভাল রাখার জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। সঠিক নিয়মের যত্নের মাধ্যমে একটি শাড়িকে বহুদিন টিকিয়ে রাখা যায়। তবে ভিন্ন ভিন্ন কাপড়ের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা যত্নের পদ্ধতি। কোন শাড়ি কীভাবে রাখবেন, কেমন করে রাখলে বহুদিন ধরে টিকবে এর জন্য রয়েছে কাপড়ভেদে ভিন্ন পদ্ধতি। যেহেতু অভিজাত সিল্ক শাড়ি নিয়ে কথা হচ্ছে তাই আজকে আমরা জানবো সিল্ক শাড়ির যত্নের ব্যাপারে। সিল্কের শাড়ির যত্ন - সিল্কের শাড়ি ড্রাই ক্লিন করতে পারলেই ভালো। বিশেষ করে পানিতে ক্লোরিনের মাত্রা বেশি থাকলে সিল্কের রং হলুদ হয়ে যেতে পারে। - বেশিক্ষণ সিল্কের শাড়ি পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন না। একবার সাবান পানিতে ডুবিয়েই সঙ্গে সঙ্গে তুলে ফেলবেন। সিল্কের শাড়ি খুব জোরে কাচবেন না বা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করবেন না। শুকনো করারা সময় হালকা করে মুড়িয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। খুব জোরে নিংড়াবেন না। - কাচার পর ভালো করে সিল্কের শাড়ি ধুয়ে নিন। কারণ, ডিটারজেন্ট সিল্কের মসৃণভাব নষ্ট করে দিতে পারে। তারপর ২ লিটার পানিতে ১/৪ কাপ ভিনেগার মিশিয়ে ওই মিশ্রণে শাড়িটি একবার ধুয়ে নিন। এতে শাড়িতে কোনো ভিনেগার লেগে থাকলে উঠে যাবে। - সিল্কের শাড়িতে কোনোভাবে দাগ লেগে গেলে তার জন্য ড্রাই ক্লিনিং করুন। বাড়িতে দাগ তুলতে চাইলে পানি ব্যবহার করে ঘষাঘষি করবেন না। এতে দাগ স্থায়ী হয়ে যেতে পারে। ভালো মানের রিমুভার ব্যবহার করতে পারেন। তা ছাড়া সাদা পেট্রোল ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন। - এভাবে পরিষ্কার করার পর সাথে সাথে ইস্ত্রি করে ফেলুন। এতে দাগের চারিদিকের অংশ নষ্ট হবে না। - তেল-মসলাযুক্ত কোনো দাগের ক্ষেত্রে দাগের উপর সঙ্গে সঙ্গে পাউডার ছিটিয়ে দিন। তারপর ব্রাশ দিয়ে অতিরিক্ত পাউডার ঝেড়ে ঠান্ডা বা হালকা গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন। - দাগ ওঠানোর জন্য কখনোই গরম পানি ব্যবহার করবেন না, এতে দাগ আরও বসে যাবে। তারপর বড় তোয়ালে দিয়ে ধীরে ধীরে শাড়ি মুছে নিন। - কড়া রোদে সিল্কের কাপড় শুকাতে দিবেন না। তাহলে কাপড়ের রং নষ্ট হয়ে যাবে। - লন্ড্রিতে সিল্কের শাড়ি ইস্ত্রি করতে দিলে সবচেয়ে ভালো হয়। বাড়িতে ইস্ত্রি করতে চাইলে অল্প ভেজা থাকতে থাকতেই ইস্ত্রি করুন। শাড়ির উলটো দিকে আয়রন করুন। শাড়ির পাড় বা আঁচলে মসলিন কাপড় বসিয়ে তারপর ইস্ত্রি করুন। - প্লাস্টিকের প্যাকেটে সিল্কের শাড়ি স্টোর করবেন না। শাড়িতে ময়েশ্চার ধরে যাবে। - স্যাঁতস্যাঁতে বা পোকামাকড় ভর্তি জায়গায় শাড়ি রাখবেন না। - ভারী কাজ করা সিল্কের শাড়ি হ্যাঙ্গারে না ঝুলিয়ে সোজা করে ভাঁজ করে রাখুন। - সিল্কের শাড়ির মধ্যে ন্যাপথলিন রাখবেন না। এতে শাড়িতে ন্যাপথলিনের গন্ধ বসে যেতে পারে। এর পরিবর্তে দারুচিনি বা লবঙ্গ ব্যবহার করুন। - মাঝে মাঝে শাড়ির ভাঁজ বদলে নতুন করে ভাঁজ করে রাখুন। বছরে অন্তত একবার শাড়ি খোলা হাওয়ায় মেলে রাখুন। আপনার মূল্যবান পুরনো শাড়িগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য বিশেষভাবে যত্নবান ও সচেতন হতে হবে আপনাকে। আজই দেরি না করে আপনার আলমারিতে সংরক্ষণের করা সিল্কের শাড়িগুলো বের করে সঠিকভাবে সাজিয়ে রাখুন। বেশ যত্নের সঙ্গে শাড়িগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। এক্ষেত্রে দামী শাড়িগুলোর গুরত্ব বুঝে আলাদাভাবে রাখুন। আমাদের দেশের আবহাওয়ার আদ্রতা বেশি ফলে কাপড়ে খুব সহজেই ফাংগাস বা ছত্রাক আক্রান্ত করে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে মাঝে মধ্যে কাপড় রোদে দেয়া উচিত। এছাড়া আপনার শাড়ি রাখার আলমারি প্রথমেই নিশ্ছিদ্র করতে হবে। যাতে সেখানে তেলাপোকা, ইঁদুর কিংবা অন্য কোন পোকামাকড় ঢুকতে না পারে। আপনার আলমারিটি যদি কাঠের হয় তাহলে অনেক সময় ঘুণপোকার আক্রমণ হতে পারে। ঘুণপোকা কাপড় কেটে ফেলে। এক্ষেত্রে স্পিরিট, বার্নিশ বা কেরোসিন দিয়ে আলমারির ভেতর মুছে দিলে পোকা ঢুকতে পারবে না।