ছবি সংগৃহীত

শবে বরাত কী এবং -এর পরিচয় কী?

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ০১ জুন ২০১৫, ০১:১৪
আপডেট: ০১ জুন ২০১৫, ০১:১৪

শব একটি ফারসী শব্দ এর অর্থ রাত। বারায়াতকে যদি আরবী শব্দ ধরা হয় তাহলে এর অর্থ হচ্ছে সম্পর্কচ্ছেদ, পরোক্ষ অর্থে মুক্তি। যেমন কোরআন মাজীদে সূরা বারায়াত রয়েছে যা সূরা তাওবা নামেও পরিচিত। ইরশাদ হয়েছে, بَرَاءَةٌ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ التوبة: 1 অর্থ : আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা। (সূরা তাওবা, ১) এখানে বারায়াতের অর্থ হল সম্পর্ক ছিন্ন করা। ‘বারায়াত’ মুক্তি অর্থেও আল-কুরআনে এসেছে। যেমন, أَكُفَّارُكُمْ خَيْرٌ مِنْ أُولَئِكُمْ أَمْ لَكُمْ بَرَاءَةٌ فِي الزُّبُرِ . سورة القمر :43 অর্থ : তোমাদের মধ্যকার কাফিররা কি তাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ? না কি তোমাদের মুক্তির সনদ রয়েছে কিতাবসমূহে? (সূরা কামার, ৩৪) আর ‘বারায়াত’ শব্দ যদি ফারসী শব্দ ধরা হয় তাহলে উহার অর্থ হবে সৌভাগ্য। অতএব শবে বরাত শব্দটার অর্থ দাড়ায় মুক্তির রজনী, সম্পর্ক ছিন্ন করার রজনী অথবা সৌভাগ্যের রাত, যদি ‘বরাত’ শব্দটিকে ফার্সী শব্দ ধরা হয়। শবে বরাত শব্দটাকে যদি আরবীতে তর্জমা করতে চান তাহলে বলতে হবে ‘লাইলাতুল বারায়াত’। এখানে বলে রাখা ভাল যে এমন অনেক শব্দ আছে যার রূপ বা উচ্চারণ আরবী ও ফারসী ভাষায় একই রকম, কিন্তু অর্থ ভিন্ন। যেমন ‘গোলাম’ শব্দটি আরবী ও ফারসী উভয় ভাষায় একই রকম লেখা হয় এবং একইভাবে উচ্চারণ করা হয়। কিন্তু আরবীতে এর অর্থ হল কিশোর আর ফারসীতে এর অর্থ হল দাস। সার কথা হল ‘বারায়াত’ শব্দটিকে আরবী শব্দ ধরা হলে উহার অর্থ সম্পর্কচ্ছেদ বা মুক্তি। আর ফারসী শব্দ ধরা হলে উহার অর্থ সৌভাগ্য। শব ফারসি শব্দ। অর্থ রাত বা রজনী। বরাত শব্দটিও মূলে ফারসি অর্থ ভাগ্য। দুশব্দের একত্রে অর্থ হবে ভাগ্য-রজনী। বরাত শব্দটিকে আরবি ভেবে অনকেইে ভুল করে থাকনে। কারণ বরাত বলতে আরবি ভাষায় কোনো শব্দ নইে। যদি বরাত শব্দটি আরবি বারাআত শব্দের অপভ্রংশ ধরা হয় তবে তার অর্থ সর্ম্পকচ্ছেদ বা মুক্তি। কিন্তু কয়কেটি কারণে এ অর্থটি এখানে অগ্রাহ্য। ১. আগরে শব্দটি ফারসি হওয়ায় বরাত শব্দটিও ফারসি, এটাই স্বাভাবকি। ২. শাবানের মধ্যরজনীকে আরবি ভাষার র্দীঘ পরম্পরায় কেউই বারাআতের রাত্রি হিসেবে আখ্যা দেননি। ৩. রমযান মাসের লাইলাতুল ক্দরকে কেউ কেউ লাইলাতুল বারাআত হিসেবে নামকরণ করেছেন, শাবানরে মধ্য রাত্রিকে নয়। আরবি ভাষায় এ রাতটিকে কি বলা হয়? আরবি ভাষায় এ রাতটিকে লাইলাতুন নিছফি মিন শাবান বা শাবান মাসের মধ্য রজনী হিসেবে অভিহিত করা হয়। মাওলানা মিরাজ রহমান