ছবি সংগৃহীত

যে ৭টি সত্যিকারের মিল আছে মানুষ ও ভ্যাম্পায়ারের মাঝে!

দেয়া
লেখক
প্রকাশিত: ১৯ মে ২০১৪, ১৭:২৮
আপডেট: ১৯ মে ২০১৪, ১৭:২৮

(প্রিয়.কম) বই, সিনেমা এবং বিভিন্ন টিভি সিরিয়াল দেখতে দেখতে ভ্যাম্পায়ার কি সে বিষয়ে আমাদের সবারই কিছু না কিছু ধারণা জন্মে গেছে। বাস্তব পৃথিবীতে ভ্যাম্পায়ারের অস্তিত্ব না থাকলেও মাঝে মাঝে মানুষের মাঝেই দেখা যায় ভ্যাম্পায়ারের মতো কিছু বৈশিষ্ট্য না অন্যদের মনে সন্দেহ জাগিয়ে রাখবার জন্য যথেষ্ট! দেখে নিন এমন কিছু পরিস্থিতি যেখানে মানুষ ও ভ্যাম্পায়ারের মাঝে লক্ষ্য করা যায় অস্বাভাবিক মিল! আরও অদ্ভুত কি জানেন? এই মিল গুলো থাকতে পারে আপনার মাঝেও!

১। রসুন-ভীতি

রসুনের গন্ধ ছড়িয়ে ভ্যাম্পায়ার তাড়ানো যায়, ঘরের বাইরে রসুনের মালা ঝুলিয়ে রাখলে সে ঘরে ভ্যাম্পায়ার আসে না- এসব ব্যাপার দেখা যায় বিভিন্ন গল্পে। মূলত রোমানিয়া এবং বিভিন্ন বলশেভিক দেশগুলোতে ভ্যাম্পায়ার নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কারে দেখা যায়, মৃত মানুষের মুখে রসুন দিয়ে তার পরেই তাদেরকে সমাধিস্থ করা হতো, মৃত্যুর পর তারা যাতে ভ্যাম্পায়ারে রূপান্তরিত না হন। যারা রসুন খেতে অস্বীকার করতো, ধরে নেওয়া হতো তারা ভ্যাম্পায়ার। কিন্তু এ সমস্যা মানুষেরও আছে বই কি! রসুনের প্রতি ভীতিকে বলা হয় অ্যালিয়ামফোবিয়া। এ সমস্যা যাদের আছে তারা রসুনের কথা চিন্তা করলেই অস্থির হয়ে পড়েন। খাবারে রসুনের চিহ্ন দেখলেই দূরে পালিয়ে যান তারা। রসুনের কাছে এলে প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হয়ে থাকেন অনেকেই।

২। কামড়ানো

জলাতঙ্ক বা র‍্যাবিস অনেকটাই ভ্যাম্পায়ারের মতো করে তোলে মানুষকে। বিশেষ করে অন্যদেরকে কামড়ে দেবার প্রবণতা দেখা যায় তাদের মাঝে। শুধু তাই নয়, বাদুড়ের কামড় খেয়ে মানুষ ভ্যাম্পায়ার হয়ে যাবে, এই কাহিনীর উৎপত্তিও এখান থেকেই। কারন বাদুড়ের কামড় খেয়ে আসলে খুব সহজে জলাতঙ্ক হতে পারে।

৩। আয়নাভীতি

ভ্যাম্পায়ারদেরকে আয়নায় দেখা যায় না, অর্থাৎ তাদের কোনো প্রতিচ্ছবি নেই। বলা হয় তাদের কোনো সত্ত্বা নেই বলেই তাদের প্রতিচ্ছবিও নেই। মানুষের মাঝে দেখা যায় আয়নার প্রতি এক ধরণের ভীতি, যার নাম ইসোপট্রোফোবিয়া অথবা ক্যাটোপট্রোফোবিয়া। ছোটবেলায় হরর মুভি দেখা, অথবা কোনো আয়না নিয়ে কোনো ভয়ংকর ঘটনার ফলে ট্রমা থেকে এই ফোবিয়া তৈরি হয়। যাদের এই ফোবিয়া আছে, তাদের মনে হয় আয়নার দিকে তাকালে অশরীরী কিছু বের হয় আসবে, অথবা আয়নার ভেতরে এমন কেউ আছে যা তাকে লক্ষ্য করছে।

৪। রক্ত-পিপাসা

১৯৮৫ সালে একজন বিজ্ঞানী দাবি করেন তিনি এমন একটি বংশগত রোগ খুঁজে পেয়েছেন যার সাথে ভ্যাম্পায়ারের কাহিনীর মিল রয়েছে। পোরফিরিয়া নামের এই রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের হিমোগ্লোবিনে অস্বাভাবিকতা দেখা যায় এবং এর উপশম করতে রোগীর মাঝে রক্ত পান করার ইচ্ছে জাগে। তার এই দাবি অবশ্য ভুল প্রমাণিত হয়। কিন্তু পোরফিরিয়ার আসল যেসব উপসর্গ আছে, তার মাঝে একটি হলো খুব কম সময়ের মাঝে সূর্যের আলোয় ত্বকে ফোস্কা পড়ে যাওয়া। আরেকটি উপসর্গ হলো তাদের মুত্রে রক্তের উপস্থিতি, যা থেকে অন্যদের মাঝে সন্দেহ হতে পারে যে রোগী রক্ত পান করছে।

৫। গণনা-ভীতি

গণনার সাথে ভ্যাম্পায়ারের কি সম্পর্ক? আমাদের অনেকেরই জানা নেই, প্রাচীন একটি ধারণা অনুযায়ী রসুনের পাশাপাশি গণনা ব্যাপারটাকেও অপছন্দ করতো ভ্যাম্পায়াররা। এ কারণে ভ্যাম্পায়ার কারো পিছু নিলে তার দিকে একমুঠো চাল বা অন্য কোনো বীজ ছুরে দিতে বলা হতো। কারন প্রতিটি কণা গণনা না করে ভ্যাম্পায়ার সেখান থেকে নড়তে পারতো না। মৃত পরিজনের কফিনের ভেতরে ঢেলে দেওয়া হতো অনেক করে পপির বীজ, যাতে গণনার ভয়ে তাকে কামড়াতে আন আসে ভ্যাম্পায়ার। মানুষের মাঝে এ সমস্যাটি দেখা যায় অ্যারিদমোম্যানিয়া নামের একটি রোগ হিসেবে, যেখানে রোগী তার আশেপাশে সবকিছু গুণতে ব্যস্ত থাকে।

৬। সূঁচালো দাঁত

কামড়ে দেবার সুবিধার্থে ভ্যাম্পায়ারের মুখের ভেতর থাকে সূঁচালো দাঁত। এমন দাঁত মানুষের মাঝেও থাকে। এই চারটি তেকোনা দাঁতকে বলা হয় ক্যানাইন দাঁত। হাইপোহাইড্রোটিক এক্টোডার্মাল ডিসপ্লাসিয়া নামের একটি দুর্লভ বংশগত রোগ আছে যেখানে রোগীর দাঁতের বৃদ্ধি হয় অস্বাভাবিক। তাদের ক্যানাইন দাঁত বাদে অন্য দাঁতগুলো অনেক সময় একেবারেই গজায় না। আর গজালেও সেগুলোও হয় ক্যানাইনের মতো সূঁচালো।

৭। সূর্যের আলোয় ঝলসে যাওয়া

সূর্যের আলো হলো ভ্যাম্পায়ারের অন্যতম দুর্বলতা। সূর্যালোকে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তাদের শরীর। মানুষের মাঝে দুর্লভ একটি জটিলতা দেখা যায় যার নাম জেরোডার্মা পিগমেন্টোসাম অথবা সহজে বলা যায় XP। তাদের জিনের ক্ষমতা থাকে না সূর্যের আলোর অতিবেগুনী রশ্মি সহ্য করার, ফলে মানুষ সূর্যের আলোয় গেলেই তার ত্বকে ফোস্কা পড়ে যায়। একদম কম আলোতে গেলেও তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকি ঘরের ভেতরের আলোতেও মাঝে মাঝে তাদের সমস্যা হয়। শুধু তাই নয়, মাঝে মাঝে তাদের চোখেও দেখা দেয় সমস্যা।