মুখের যত্ন তো করছেন, কিন্তু খেয়াল রাখা হচ্ছে কি হাত ও পায়ের? সারাদিন এই হাত-পায়ের জোড়া করে যায় কতই না কাজ। পথের ধুলো থেকে শুরু করে কাপড় কাঁচা সাবানের রুক্ষতা - আপনার পা এবং হাতের উপরে কিন্তু অত্যাচার নেহাত কম হয়না। তাই অবশ্যই তাদের প্রয়োজন বাড়তি একটু যত্ন। সৌন্দর্য ধরে রাখতে যত্নের কি আর বিকল্প আছে? আমরা অনেকেই অবশ্য চাইলেও এই বাড়তি যত্নটুকুন করে উঠতে পারিনা। পার্লারে ত্বক চর্চার জন্য হয়তো যাওয়া হচ্ছে, কিন্তু হাত পায়ের যত্ন নিতে পেডিকিউর –মেনিকিউর করানোটা অনেকের জন্যই পরিণত হচ্ছে বাড়তি একটা খরচে। কিংবা মুখে মাখছেন হরেক রকম দামী স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট, কিন্তু হাত পায়ের যত্নে নেহাতই অমনোযোগী অনেকেই। ভালো করে তাকিয়ে দেখুন তো, জুতোর আড়ালে আপনারা পা জোড়া রুক্ষ আর প্রাণহীন কিনা? একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো সারাদিন হরেক কাজ করে যাওয়া হাত দুটোতে তারুণ্যের দীপ্তি আছে কিনা? পার্লারের বাড়তি খরচ নয়, কিংবা দামী কোনও প্রোডাক্ট কেনার হ্যাপাও নয়। এসব ছাড়াই আপনার প্রিয় হাত পায়ের জোড়া এখন থাকবে সুস্থ আর সুন্দর সারাক্ষণ। কি করে? আসুন জেনে নেই তারই বিস্তারিত। ঘরেই খুব সহজে পেডিকিওর-মেনিকিওর করার পদ্ধতি: প্রথমে নখের নেইল পলিশ তুলায় রিমুভার লাগিয়ে তুলে নিন। এবার হাত-পায়ের নখগুলো পছন্দ মতো শেপে কেটে নিন। তারপর নখে ক্রিম লাগিয়ে নিন। একটি পাত্রে গরম পানিতে শ্যাম্পু, লবনও লেবুর রস মিশিয়ে তাতে হাত ও পা ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। তারপর তোয়ালে দিয়ে হাত ও পা মুছে নিন। নখে ক্রিম দিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। সতর্কতার সঙ্গে নখের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে স্ক্রাব ঘষে মৃত কোষ তুলে ফেলুন । এরপর একটি মাস্ক বা স্ক্রাব লাগিয়ে রেখে দিন কিছুক্ষণ। ভালো করে ঘষে মাস্ক তুলে ফেলুন এবং কুসুম গরম পানি দিয়ে সুন্দর করে ধুয়ে ফেলুন। হাত-পা মুছে মশ্চারাইজিং লোশন লাগিয়ে নিন। এই তো হয়ে গেলো আপনার পেডি কিউর- মেনি কিউর! হাত ও পায়ের জন্য ময়েশ্চারাইজারঃ- গোলাপের পাঁপড়ি, ঈষদুষ্ণ পানি, আমন্ড অয়েল, রোজ অয়েল ভিটামিন ই অয়েল, কোকোয়া বাটার মিশিয়ে হালকা আঁচে গরম করুন। ঠাণ্ডা করে এয়ারটাইট জারে রেখে দিন। প্রতিদিন রাতে হাত ও পায়ে ম্যাসাজ করুন। উষ্ণ গরম পানিতে আধ চামচ নারিকেল তেল সামান্য লবণ দিয়ে হাত-পা ডুবিয়ে রাখুন ৫ মিনিট। তারপর দুধের সর, আটা, গ্লিসারিন একসঙ্গে মিশিয়ে ১৫ মিনিট হাতে ও পায়ে লাগিয়ে রেখে হালকা হাতে ঘষে তুলে দিন। ধুয়ে ফেলে মধু, ডিমের হলুদ অংশ, আমন্ড বাটা একসঙ্গে মিশিয়ে আধঘণ্টা লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। অলিভ অয়েল ও গোলাপজল মিশিয়ে লাগিয়ে রাখুন. ময়েশ্চারাইজিং মাস্কঃ- ২ চামচ দুধের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। মুখ ও গলায় ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, ১ টেবিল চামচ ভেজিটেবল অয়েল ও ১ টেবিল চামচ নারিকেলে তেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ ক্রাশড স্ট্রবেরি মিশিয়ে নিন। সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ভিটামিন ই অয়েল মেশান, গলায় ও মুখে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলুন। গ্লিসারিন, গোলাপজল, লেবুর রস সমপরিমাণে নিয়ে মিশিয়ে ফ্রিজে রাখুন। গরমে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজে দিবে। তবে, আর দেরি কিসের? ব্যস্ত সময় থেকে খানিকটা সময় বের করেই নিন না হাত পায়ের যত্নে!