ছবি সংগৃহীত

ভালোবাসায় বিশ্বাস ধরে রাখুন ৬টি উপায়ে

তাসনুভা রিয়া
লেখক
প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৪:৫০
আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৪:৫০

'বিশ্বাস' যে কোন সর্ম্পকের ভিত্তি। এই সুন্দর, মজবুত ও দীর্ঘমেয়াদী সর্ম্পকের চাবিকাঠি কিংবা মূলমন্ত্র বলা যায় বিশ্বাসকে। বিশ্বাস ছাড়া একটি সর্ম্পকের স্থায়িত্ব কয়দিনেরই বা হয় বলুন? 'ভালোবাসা আর বিশ্বাস' অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। তবুও নানাকারণে এই বিশ্বাসে চির ধরতে পারে, ছিন্ন হতে পারে সম্পর্কের বন্ধন। হ্যত অকারনেই বিশাল ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয় যা একটা স্বাস্থ্যকর সর্ম্পককে ঠেলে দেয় ঝুঁকির দিকে। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন হ্য় বির্পযস্ত। তাই আসুন জেনে নিই বিশ্বাস ধরে রাখার ৬টি উপায়।

যেভাবে কমাবেন অহেতুক দূরত্ব-

অনেক কারণেই প্রিয় মানুষটির প্রতি প্রশ্নবোধক চিহ্নের উদয় হয়। যেমন- যোগাযোগ কমে যাওয়া, অন্যের কথাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া ইত্যাদি। যদি মনে হয় আপন মানুষটি সময় দিচ্ছেনা,যোগাযোগ কম করছে বা দেখা করতে চাচ্ছেনা ইত্যাদি। সেক্ষেত্রে নিজে নিজে কল্পনার পাহাড় না বানিয়ে তার সাথে এই বিষয়ে সরাসরি কথা বলুন। তবে চিত্‍কার না করে শান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করুন। একটা কথা মনে রাখবেন চিল কান নিয়েছে শুনলেই চিলের পেছনে ছোটা শুরু করবেন না। আগে দেখে দিন কান ঠিক জায়গায় আছে তো?
প্রিয় মানুষটিকে সন্দেহ হচ্ছে? এই নিয়ে ব্যস্ত হবার আগে নিজেকে কয়েকটি প্রশ্ন করে নিন। ভেবে নিন সাম্প্রতিক কালের কোন ভুলবোঝাবুঝি থেকে সৃষ্ট অভিমানই এই দূরত্বের কারন নয় তো? তার সাথে দুরত্ব কমানোর উদ্যোগটা না হয় আপনিই নিন। একসাথে সময় কাটান।

মনে রাখবেনঃ সম্পর্কে কেউ কারো "বস" নয়-

এটা তুমি কেন করেছো?আমি তোমার সাথে আর সর্ম্পক রাখবোনা। এই বলে ধুম করে সর্ম্পক ছেদ করবেন না। সব দোষ তারই- এই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান। তুমি কেন অমুকের সাথে কথা বল? তমুকের সাথে কী তোমার? এইসব বলে চাপ সৃষ্টি করবেন না। কোন এক বিশেষ ব্যক্তির সাথে তার বন্ধুত্ব আপনার খারাপ লাগলে,ভালো না লাগার গুলো বুঝিয়ে বলতে পারেন। তা না করে সিনক্রিয়েট করলে তার আপনার মধ্যকার সর্ম্পকের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসতে পারে। এমনকি যাকে নিয়ে সন্দেহ করছিলেন তার দিকে ঝুঁকে পড়াও বিচিত্র নয়। একসাথে চলতে গেলে ছোটো ছোটো নানা বিষয়ে প্রশ্ন উদয় হতেই পারে। যেমন- ও কেন অসময়ে বাইরে গেল কিংবা কেন হেয়ার স্টাইল পাল্টালো হঠাৎ? ও কার সাথে গেল ? এসব ক্ষেত্রে অন্যদের প্রশ্ন করে জানার চেয়ে তাকেই প্রশ্ন করুন না। তবে অবশ্যই রেগে গিয়ে নয় বরং কথাচ্ছলেই জেনে নিতে পারেন। মনে রাখবেন ভালোবাসার সর্ম্পকে কেউ কারো বস নয়।

বের হয়ে আসুন পূর্ব প্রতারণার ভয় থেকে-

আপনার পূর্বের সম্পর্কটিতে কি প্রতারিত হয়েছিলেন?সেই ভয়টিই কি তাড়িয়ে বেড়ায় আপনাকে? এইসব ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় হারিয়ে ফেলবার ভয় থেকেও অনেকে প্রেমিক/প্রেমিকাকে চাপে রাখেন। এটা করো না, ওটা করোনা ইত্যাদি নানা বিধি নিষেধ আরোপ করে থাকেন। কিন্তু কথায় আছে না, বজ্রা আঁটুনি ফসকা গেরো। বেশি শাসন করতে গেলে ভালোবাসার মানুষটিও অশান্তির ভয়ে কথা গোপন করা শুরু করবে। আর তাতে সম্পর্কটার কেবল ক্ষতিই হবে। লাভ নয়।

দোষারোপ করার আগে ভাবুন-

সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবার আগে নিজে সর্ম্পকের ব্যাপারে আরো সৎ, নিষ্ঠাবান হোন। কাউকে দোষ দেবার আগে তার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেখুন। তারপর রাগ করুন। পরে নয়তো নিজেই অপরাধবোধে ভুগবেন। তাছাড়া রাগের মাথায় আমরা অকারনেই হাউ কাউ বাঁধিয়ে ফেলি, ছোট বিষয়কে অকারণে বড় বানিয়ে ফেলি। এটা এড়াতে হুট করেই সিন্ধান্তে যাবেন না। আগে ভাবুন।

নজর দিন ছোটখাট ভালো লাগায়-

ছোটো ছোটো ভালো লাগা,মন্দ লাগার বিষয়গুলো তার সাথে শেয়ার করুন। তার ভালো লাগার বিষয়গুলোতে নজর রাখুন, ভালোবাসা প্রকাশ করুন। কাজের ফাঁকে ছোট্ট একটা টেক্সট পাঠিয়েই জিজ্ঞেস করতে পারেন দুপুরে খেয়েছে কিনা। কথায় আছে, জালের ফুটো ছোটো থাকতেই মেরামত করতে হয়। ঠিক তেমনি ভাবেই সর্ম্পকের ছোট ছোট আনন্দ গুলোকে এড়িয়ে যাবেন না। এই ছোট ব্যাপার গুলোই বিশ্বাসের জায়গাটা মজবুত করে।

পুরনো কথা টানবেন না বারবার-

কথায় কথায় পুরাতন ইস্যু টেনে আনা- তুমি আগে এটা করতে এখন কেন করোনা? ঐদিন ওটা করেছো দেখেই আমি এ কাজ করেছি। তুমি ওর সাথে কথা বলেছ দেখে আমিও কথা বলেছি- এইসব কথাবার্তা ও কাজ সর্ম্পককে হাল্কা করে দেয়। কখনো পুরনো কথা নিয়ে অহেতুক টানা হেঁচড়া করতে যাবেন না। যা গিয়েছে তাকে যেতে দিন।

শেষ কথা-

পরশু পরিচয়,কাল ভালোলাগা আজ তাকে বলেই দিলাম ভালোবাসি। এইগুলোই যেন আজকালের অনেক সর্ম্পকের রসায়ন হয়ে উঠেছে। অথচ এইরকম টুপ করে গড়ে ওঠা সর্ম্পক গুলোতে প্রচুর ফাঁক থেকে যায়। নিজেদের চেনা জানার জন্যও একটু সময় দরকার বৈকি। তাই যাকে ভালো লাগছে তার সাথে সর্ম্পকে যাবার আগে ভালো বন্ধু হন। চিনে নিন মানুষটিকে। "ভালোবাসা" পৃথিবীর সুন্দরতম সর্ম্পক।আর নর নারীর প্রেমেই সৃষ্টি হয় পরিবারের কিন্তু সেই সর্ম্পকটির মাঝে সন্দেহের বিষ একবার ঢুকে পড়লে তার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। একটু সচেতন হোন। প্রাণ খুলে ভালোবাসুন প্রিয় মানুষটিকে।