
ছবি সংগৃহীত
"ব্রেইন ডেড" মানুষ জীবিত না মৃত?
আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৪, ০৬:২৬
মৃত্যুর কথা চিন্তা করলেই অনেকের মনে হয় একটা শক্ত, অন্ধকার দেয়াল। যেখানে জীবনের সব রঙ শেষ, যাতে নেই কোনো বৈচিত্র্য। কিন্তু আসলেই কি তাই? একটা মানুষের জন্ম যেমন হতে পারে ঘটনাবহুল, জীবন যেমন হতে পারে বিচিত্র, তেমনি মৃত্যুর মাঝেও থাকতে পারে স্বাতন্ত্র্য। “ব্রেইন ডেথ” তেমনি এক বিচিত্র মৃত্যু, যেখানে মানুষের আত্মা মরে গেলেও শরীরকে ঠিক মৃত বলা যায় না। “ব্রেইন ডেড” হয়ে যাবার পর মানুষের কী হয় আসলে? একজন মানুষকে তখনি ব্রেইন ডেড বলা যাবে যখন তার মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকান্ডে কোন সক্রিয়তা দেখা যাবে না। অর্থাৎ মস্তিষ্কের কোষগুলোর মাঝে কোন রকমের বৈদ্যুতিক কার্যক্রম নেই। ডাক্তাররা অনেক কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার পরেই একজন মানুষকে ব্রেইন ডেড বলে ঘোষণা করেন। এর মাঝে একটি একেবারেই সাধারণ একটি পরীক্ষা হলো মানুষটি নিজে নিজে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছে কিনা সেটা দেখা। এরকম স্বাভাবিক একটি কাজ করতে পারা মানে মস্তিষ্কে তখনও কিছু প্রাণ রয়ে গেছে। ব্রেইন ডেড হয়ে যাবার পর একজন মানুষকে আইনত জীবিত বলে ধরা হয় না। কিন্তু তার শরীরকে কিছুটা সময় পর্যন্ত যন্ত্রের সাহায্যে বাচিয়ে রাখা সম্ভব হয়। প্রশ্ন হলো, যন্ত্র কতটা সময় পর্যন্ত একজন মানুষের শরীরকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে? আর সেটা করেই বা কিভাবে?

- - একজন মানুষের মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিলেও তার হৃৎপিণ্ড কিছু সময় ধরে কাজ চালিয়ে যেতে পারে। এমনকি শরীরের বাইরেও সচল থাকার ক্ষমতা আছে এর। কিন্তু শরীরে রক্ত এবং অক্সিজেন সচল রাখার জন্য ভেন্টিলেটর ব্যবহার না করা হলে এই সময়ের পরই হৃৎপিণ্ডও অচল হয়ে যাবে এক ঘণ্টারও কম সময়ে।
- - মস্তিষ্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য হরমোন নিঃসরণ করা। মস্তিষ্ক অচল হয়ে যাবার পর পাকস্থলী, কিডনি এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এক সপ্তাহ পর্যন্ত বজায় থাকতে পারে কিন্তু পরে এসব হরমোনের অভাবে এসব ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। যেমন থাইরয়েড হরমোন এবং ভ্যাসোপ্রেসিন হরমোন।
- - স্বাভাবিক রক্ত চাপেরও ব্যাঘাত ঘটে ব্রেইন ডেড অবস্থায়। এই ব্যক্তিকে তখন রক্তচাপ ঠিক রাখার ওষুধ দিতে হয়। এর পাশাপাশি শরীরের তাপমাত্রাও ঠিক রাখতে হয় কৃত্রিম উপায়ে। তাকে ভারি কম্বল চাপা দিয়ে রাখা হয়, ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং কখনও কখনও স্যালাইন দেওয়া হয়।

- ট্যাগ:
- মানব সভ্যতা
- বিজ্ঞান