ছবি সংগৃহীত

বৃষ্টির জন্য নামাজ, বৃষ্টি চেয়ে প্রভুর দরবারে প্রার্থনা

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০১৪, ০৬:৫৮
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৪, ০৬:৫৮

অসহ্য গরম আর অসহনীয় তাপদাহে পুড়ছে সারা দেশ। দেশজুড়ে চলছে বৃষ্টির জন্য হাহাকার। প্রচন্ড গরম-তাপদাহে হাপিয়ে উঠেছে জনজীবন। গরম-তাপদাহের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। দেশের জনসাধারণকে বিভিন্নভাবে আশ্বস্ত করার চেষ্ঠা করছেন আবহাওয়াবিদরা । এই হচ্ছে তো এই হবে, বৃষ্টির স্বস্তি মিলবে শিগগিরই। কিন্তু প্রকৃত খবর কি জানি আমরা? ঠিক কবে এবং কখন ঝরবে এই রহমতের ঝর্ণাধারা? কবে দূরীভূত হবে এই তাপদাহ? জানি না এবং এই না জানাই একজন মুসলমানের ইমানিত্ব। ইব্রাহিম ইবনু মুনযির (রহ.) ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত , নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইললমে গায়েব (ভবিষ্যতের কথা) -এর চাবি কাঠি পাঁচটি, যা আল্লাহ ভিন্ন আর কেউ জানে না। তা হল, এক. আগামী দিন কি হবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। দুই. মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহ ভিন্ন আর কেউ জানে না। তিন. বৃষ্টি কখন আসবে তা আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ জানে না। চার. কোনো ব্যাক্তি জানে না তার মৃত্যু কোথায় হবে এবং পাচ. কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে তা আল্লাহ ভিন্ন আর কেউ জানেনা। (বুখারি, হাদিস নং-৪৩৩৬) ঢাকায় গরমের রেকর্ড দেশে এখন চলছে প্রচণ্ড তাপদাহ। বাইরে মাথার উপর প্রখর রোদে শরীর পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা! আবার গরম হাওয়ায় ঘরেও নেই স্বস্তি। বৈশাখের দশ-বার দিন পেরিয়ে গেলেও দেখা মিলেনি বৈশাখী তাণ্ডবের! নেই বৃষ্টি। নেই মেঘ। তবে শিগগিরই এই অবস্থার অবসান হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শেষ পর্যন্ত এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করলো রাজধানী ঢাকা। সারাদেশের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার ঢাকাতে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রিী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। যা গত ৫৪ বছরের ইতিহাসের রেকর্ড। তাপমাত্রা বেড়ে যাবার কারনে স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে।জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাসা থেকে বের হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রণালয় এ অবস্থায় গ্রীস্মকালীন ছুটি এক মাস এগিয়ে আনার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গেছে। প্রচন্ড গরম আর অত্যধিক তাপমাত্রার কারনে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের জনজীবনের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অসহনীয় রোদ মানুষের সাথে প্রাণীকুলের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারনে তাপমাত্রার প্রভাব বেড়ে চলেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার এই রেকর্ড ছিল এ বছরের সর্বোচ্চ। কিন্তু বৃহস্পতিবার সে রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। শুক্রবার তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া বিদরা জানিয়েছেন। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাঙামাটিতে- ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই রেকর্ড ছাড়িয়ে বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গার জীবন নগর থানায় ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।আগের দিন বুধবার চুয়াডাঙ্গায় চিট স্ট্রোকের কারনে একটি বিদ্যালয়ের ১১জন শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় ঐ স্কুলটি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপর এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয়ার জন্য অভিভাবকরা চাপ দিচ্ছেন। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অনাবৃষ্টির কারনে তাপমাত্রা বাড়ছে। বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসবে। শুক্রবার দেশের বেশকিছু স্থানে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। রাজশাহী, পাবনা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। [সূত্র : দৈনিক যুগান্তর] বৃষ্টি নেয়ামত, রোদও আল্লাহর নেয়ামত বৃষ্টি যেমন আল্লাহর রহমত এবং নেয়ামত, রোদও তেমনি আল্লাহর রহমত এবং নেয়ামত। ছায়াবিশিষ্ট জায়গাও আল্লাহর নেয়ামত। আবার গরমও আল্লাহর নেয়ামত। সুতরাং প্রত্যেক নেয়ামতকে মনে-প্রাণে মানতেই হবে এবং এই নেয়ামতের জন্য মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। প্রয়োজনবশত রোদ থেকে ছায়ায় যাওয়া কিংবা ছায়া থেকে রোদে যাওয়া নেয়ামত থেকে ভেগে যাওয়া নয় বরং প্রয়োজনবশত এক নেয়ামত থেকে অন্য নেয়ামতের দিকে ধাবিত হওয়া মাত্র। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি বৃষ্টিকে, রোদকে অসঙ্গত ও অসমীচীন মনে করে, তবে সেটা হবে নেয়ামতের নাশুকরিয়া। যেমন বৃষ্টি হচ্ছে বা প্রখর রোদ বা কনকনে শীত পড়েছে অথবা ভীষণ গরম অনুভূত হচ্ছে, এগুলোর কোনো একটাকে যদি কেউ অসঙ্গত বা অসমীচীন মনে করে, তবে এটাই হবে খারাপ এবং নিষিদ্ধ। এটাই মনে রাখতে হবে যে, সবই আল্লাহর নেয়ামত ও রহমত। বৃষ্টিও নেয়ামত এবং রোদও নেয়ামত। আমি দুর্বল হওয়ার কারণে আমার জন্য যেটা সহনীয়, আমি কেবল সেটার দিকেই যাচ্ছি। সুতরাং এ রকম হলে আল্লাহর নেয়ামত থেকে ভেগে যাওয়া হলো না। কোনো কোনো সময় এক নেয়ামতের পরিবর্তে অন্য নেয়ামত পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়াও করা উচিত। যেমন সুস্থ থাকা একটি নেয়ামত, তেমনি রোগ বা অসুস্থ হওয়াও আল্লাহর নেয়ামত। সুতরাং রোগ-ব্যাধি থেকে সুস্থতার নেয়ামতের জন্য দোয়া করা যেতে পারে। দোয়া এভাবে করতে হবে যে, হে আল্লাহ, রোগ-ব্যাধিও আপনার নেয়ামত, সুস্থ থাকাও আপনার নেয়ামত। আমি দুর্বল হওয়ার কারণে মেহেরবাণী করে এই অসুস্থতার নেয়ামতের স্থলে আমাকে সুস্থতার নেয়ামত দান করুন। আমাদের প্রয়োজন পূরণের জন্য রৌদ্র না দিয়ে বৃষ্টি দিন বা বৃষ্টি না দিয়ে রোদ দান করুন। পরিবেশ, কৃষি কাজ ও শস্য ফলানোসহ মানবজীবনের অনেক ক্ষেত্রে বৃষ্টি যেমন প্রয়োজনীয়, রোদও তেমনি দরকারি। মানুষ ও পৃথিবীর চাহিদা অনুযায়ীই মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন এই রোদ ও বৃষ্টি। তাই আমাদের সবার উচিত মহান আল্লাহ প্রদত্ত এই নেয়ামতের সঠিক ব্যবহার ও সঠিক মূল্যায়ন করা। কেন এই অনাবৃষ্টি, কেন হয় অতিবৃষ্টি কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি। কখনো অনাবৃষ্টি, কখনো আবার অতিবৃষ্টি- এই তো প্রকৃতির নিয়ম। অমোঘ নিয়ম। আল্লাহ মহান সৃষ্ট এই ধরাধামের এমনই সাধারণ চক্র-পদ্ধতি । একমাত্র আল্লাহ মহানের ইচ্ছা ও হুকুমেই প্রকৃতির এই পালাবদল ঘটে। একের পর এক অবয়ব ধারণ করে ধরণী। কিন্তু কেন ঘটে এই বিচিত্রতা, কেন হয় এই পালাবদল? নেয়ামতের গণ্ডি ছাপিয়ে কখনো কখনো দূযোর্গ আকারে আর্বিভূত হয় রোদের প্রখরতা। বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি কিংবা অতিবৃষ্টির আজাব নেমে আসে মানব সমাজে। কিন্তু কেন? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আল্লাহ মহান পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেন- " মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে’ (সূরা আর-রূম: ৪১)। আল্লাহর নবি হজরত নূহ (আ.) তাঁর জাতিকে বলেছিলেন, "তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল’। ‘তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন," (সূরা নূহ: ১০-১৩) উল্লেখিত আয়াত দুটির মাঝে মানুষের উপর আগত এই সব প্রাকৃতিক দূযোর্গকে মানুষের কর্মফল হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মানুষ যখন তার প্রকৃত উদ্দেশ্য ভুলে গিয়ে, প্রকৃত প্রভুকে ছেড়ে দিয়ে বিপথে চলে যায়, তখন আল্লাহ মহান এই সব প্রাকৃতিক দূযোর্গ দিয়ে মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করেন। বিপথগামী মানুষকে সুপথে ফিরিয়ে আনার জন্য এই পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন করেন আল্লাহ মহান। কখনো বৃষ্টির আজাব দান করেন, কখনো আবার তুলে নেন বৃষ্টি। সহিহ বুখারিতে খালেদ আল জুহানী (রা.) থেকে বর্ণিত, হুদাইবিয়া অভিযানে একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাজ পড়ালেন। রাতের বেলায় বৃষ্টি হয়েছিল। নামাজ শেষে তিনি সকলের দিকে মুখ করে প্রশ্ন করলেন - " তোমরা কি জানো, তোমাদের রব কী বলেছেন? লোকেরা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, আল্লাহ বলেছেন, আমার কিছু বান্দা আমার প্রতি ঈমানদার হয়ে ভোর করেছে আবার কিছু বান্দা আমার সাথে কুফরি করে ভোরে উপনীত হয়েছে। যে বলেছে, আল্লাহ তাআলার দয়া ও অনুগ্রহে বৃষ্টি হয়েছে; সে আমার প্রতি ঈমানদার হয়েছে, আর তারকা-নক্ষত্রকে অস্বীকার করেছে। আর যে বলেছে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে, সে আমার সাথে কুফরি করেছে আর তারকা-নক্ষত্রের প্রতি ঈমান এনেছে।’ (বুখারি, হাদিস নং ৮০৬) কাজেই বৃষ্টির মালিক ও নিয়ন্ত্রক একমাত্র আল্লাহ তাআলা। তার নির্দেশেই বৃষ্টি হয়, আর তার নির্দেশেই খরা আসে। একমাত্র আল্লাহ মহানের আদেশেই সৃষ্টি হয় অনাবৃষ্টিকর পরিবেশ কিংবা কখনো হয় অতিবৃষ্টি। সকল গুনাহ থেকে তাওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আমাদের ফিরে যেতে হবে। একমাত্র তাঁরই কাছে কান্নাকাটি করতে হবে। ইস্তেগফার ও ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। একমাত্র আল্লাহর কাছেই বৃষ্টির জন্য আহাজারী করতে হবে। দরখাস্ত পেশ করতে হবে। হৃদয়-মন নরম করে একমাত্র তাঁরই সামনে দাঁড়াতে হবে অশ্রুসিক্ত নয়নে। বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে : একটি কুসংস্কার, একটি শিরক বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অনাবৃষ্টিকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ লাভের আশার ব্যাঙের বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের গ্রামীণ সমাজে বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে খুবই প্রাচীন অনুষ্ঠান। চৈত্র পেরিয়ে বৈশাখ শুরু হয়ে গেছে, এখনো দেখা নেই বৃষ্টির। মাঠভর্তি ধান আকাশ পানে তাকিয়ে আছে বৃষ্টির আশায়। কৃষক খাল, পুকুর থেকে পানি এনে ক্ষেতে দিচ্ছে, বৃষ্টির নাম নেই। প্রকৃতির ঠিক এমন অবস্থাতেই গ্রামীণ সমাজে দেয়া হতো ব্যাঙের বিয়ে। রীতি অনুযায়ী আগের দিন দুটো কোলা ব্যাঙকে ধরে হরেক রংয়ে সাজিয়ে রাখা হয়। পরদিন ব্যাঙ ও বৃষ্টির ছড়া পড়তে পড়তে বিয়ে হয় ব্যাঙের। ‘ব্যাঙ্গা ব্যাঙ্গির বিয়া কুলা মাথায় দিয়া/ ও ব্যাঙ্গ পানি আন গিয়া /খালেও নাই পানি, বিলেও নাই পানি/ আসমান ভাইঙ্গা পড়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি/ আম পাতা দিয়া দিলাম ছানি জাম পাতা দিয়া দিলাম ছানি/ তেও (তবু) পড়ে মেঘের (বৃষ্টির) পানি’ এরকম অনেক ছড়া কেটে বিয়ে হতো ব্যাঙের। প্রথমে বাড়ির উঠোনের মাঝখানে দুটি গর্তে আলাদাভাবে রাখা হয় একটি নারী ও একটি পুরুষ ব্যাঙ। গর্তের ভেতরে গ্রামের সাতটি পৃথক পৃথক কুয়ো থেকে পানি এনে ভর্তি করতে হয়। এরপর সেই গর্তের চারপাশে কলাগাছসহ বিভিন্ন গ্রামীণ উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়। ওই গর্ত থেকেই আম পাতা ও জাম পাতার পানি দিয়ে গোসল করিয়ে বিয়ে দেওয়া হয় ব্যাঙ দুটিকে। ব্যাঙ বিয়ের দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে গ্রামের ছেলে মেয়েরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল-ডালসহ বিভিন্ন আনাজ সামগ্রী সংগ্রহ করে। সেই সংগৃহিত আনাজ দিয়ে রান্নাবান্না করা হয়, যা দিয়ে বিয়ে পরবর্তীতে গ্রামের ছেলে মেয়েরা ভোজ করে। বিয়ে শেষ হলে ব্যাঙ দম্পতিকে শেষ বিকেলের আলোয় পুকুরে ছেড়ে দেয়া হয়। ব্যাঙদম্পতি পুকুরে সাঁতার কাটে আর গ্রামের সকলে পুকুরপারে বসে বৃষ্টির কথা ভাবে, এই বুঝি বৃষ্টি এলো। নবদম্পতির জন্য প্রার্থনা নয়, নিখাদ প্রার্থনা করা হয় শুধু বৃষ্টির জন্য। ব্যাঙের বিয়ে দেয়া যায় যদি, ধানের উৎপাদন হবে উত্তম, বৃষ্টির পরশে মাটি হয়ে উঠবে উর্বরা। হাওরাঞ্চলের অনেক সংস্কৃতি আজ কালের গহ্বরে হারিয়ে গেলেও ব্যাঙের বিয়ে এখনও প্রচলিত। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে মূলত ব্যাঙের বিয়ের রীতি প্রচলিত বেশি। কারণ একদিকে উষর ভূমি আর অন্যদিকে গ্রীষ্মের দাবদাহে ফুটিফাটা মাঠের দিকে কৃষকের বিষণ্ন তাকিয়ে থাকা, উত্তরাঞ্চলে অনেক বেশি পরিচিত দৃশ্য। এমনও হয়েছে যে, প্রচণ্ড গরম আর খরার কারণে খাল-বিল-পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে, যার কারণে কোনো ব্যাঙ পাওয়া যায়নি। এমন অবস্থায় বৃষ্টির জন্য শত শত কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকে অনেক কষ্ট করে নিয়ে আসা হতো এক জোড়া ব্যাঙ। এরপর বিপুল উৎসাহে বিয়ে দেয়া হতো। জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই যুগকে যেখানে সচেতনতার যুগ বলে দাবি করা হয়, সেই সময় এই ধরনের মারাত্মক কুসংস্কারের কথা যখন পত্রিকার পাতায় প্রকাশিত দেখে বড়ই অবাক হতে হয়। বৃষ্টির জন্য পুরো দেশজুড়ে হাহাকার উঠলে দেশের উত্তর-দক্ষিণবঙ্গে এই ধরনের একটি প্রথার কথা আমি বেশ কয়েকবার পত্রিকার পাতায় দেখেছি। অনাবৃষ্টির কারণে এক গ্রামের লোকেরা মিলে একটি ব্যাঙ ধরে অত্যন্ত ঢাকঢোল পিটিয়ে আরেক গ্রামের একটি ব্যাঙের সাথে বিশেষ কায়দায় বিয়ে দেয়। এতে উভয় গ্রামের লোকেরা বিয়ের মতো হৈ-হুল্লোড় করে আনন্দ উদযাপন করে! তাদের ধারণা, এতে করে বৃষ্টি নেমে আসে!! (নাউযুবিল্লাহ) বৃষ্টির সাথে ব্যাঙের কী সম্পর্ক? আর তাদের বিয়েরই বা কী ভরসা রয়েছে? এমন হিন্দুয়ানী কুসংস্কার আদি যুগের অনেক কুসংস্কারকেও হার মানায়। আর কেউ যদি বৃষ্টি বর্ষণকে ব্যাঙের বিয়ের সাথে সম্পৃক্ত বলে ধারনা পোষণ করে তবে তা হবে সুস্পষ্ট ঈমান বিধ্বংসী বিশ্বাস । কেবল ব্যাঙ কেন, কোনো মাখলুক বা কোনো সৃষ্টিরই পৃথিবীর বুকে বৃষ্টি বর্ষণ করানোর কোনো ক্ষমতা নেই । অসম্ভব। একমাত্র আল্লহ মহান ব্যতীত অন্য কাউকে এমন (বৃষ্টি প্রদানকারী বা বৃষ্টি প্রদানের ক্ষেত্রে সহায়ক) গুণ-ক্ষমতার অধিকারী ভাবা আল্লাহ মহানের সাথে অন্য কাউকে অংশীদার করারই নামান্তর। সুতরাং এমন ধারণা পোষণ করা স্পষ্ট শিরক । আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে বলেন, هو الذى انزل من السماء ماء ‘তিনিই সেই সত্ত্বা, যিনি আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।’ অনাবৃষ্টি হলে কী করতে হবে, তার সুন্দর নির্দেশনা ইসলামেই বিদ্যমান। ইস্তিগফার করা, উন্মুক্ত মাঠে ‘সালাতুল ইসতিসকা’ আদায় করা, সম্মিলিতভাবে দোয়া করার কথা হাদিসে এসেছে। প্রত্যেকটি হাদিসের ও ফিকহের কিতাবে এই সংক্রান্ত স্বতন্ত্র অধ্যায় রয়েছে। অতএব সে নিয়ম অনুযায়ী আল্লাহর কাছেই বৃষ্টি চাওয়াই মুসলমানদের উচিত। বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা, ইসতিসকার নামাজ অনাবৃষ্টির যাতনা-কষ্ট থেকে পরিত্রাণের জন্য মহানবি (সা.) বিশেষ নামাজ ও দোয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। ইসলামি পরিভাষায় যাকে ইসতিসকার নামাজ বা বৃষ্টির নামাজ বলা হয়। ইসতিসকা শব্দেরও অর্থ বৃষ্টির জন্য দোয়া করা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয়ভাবে এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় মসজিদের ইমাম ও ধর্মীয় নেতাদের তত্ত্বাবধানে সে নামাজ পড়া উচিত। সম্মিলিত দোয়ার আয়োজন করা প্রয়োজন। আমরা যখন খরায় পুড়ি, বৃষ্টির অভাবে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হই, তখন আমাদের কর্তব্য হল বিনয়, আহাজারী, তাওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করা। আব্বাদ ইবনে তামীম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চাচা বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য লোকদের নিয়ে বের হলেন। তিনি তাদের সামনে দাঁড়ালেন। দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করলেন। এরপর কেবলামুখী হলেন। গায়ের চাদর উল্টিয়ে দিলেন। অতঃপর বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হলো।’ (বুখারি) আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি জুমার দিন মসজিদে নববিতে দারুল কাজার দিকে স্থাপিত দরজা দিয়ে প্রবেশ করল। এ সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! (অনাবৃষ্টির ফলে) মালসম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জীবিকার পথরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতএব, আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন তিনি আমাদের মেঘদান করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, 'হে আল্লাহ! আমাদের মেঘ দিন।' (আমাদের ফরিয়াদ শুনুন! আমাদের ফরিয়াদ শুনুন!)। আনাস (রা.) বলেন, খোদার কসম! এ সময় আসমানে কোনো মেঘ বা মেঘের চিহ্নও ছিল না। আর আমাদের ও সালা পাহাড়ের মাঝে কোনো ঘরবাড়ি কিছুই ছিল না। (ক্ষণিকের মধ্যে) তাঁর পেছন থেকে ঢালের মতো একখণ্ড মেঘ উদিত হলো। একটু পর তা মাঝ আকাশে এলে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল এবং বৃষ্টি শুরু হলো। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর খোদার কসম, আমরা সপ্তাহকাল ধরে আর সূর্যের মুখ দেখিনি। অতঃপর পরবর্তী জুমায় আবার এক ব্যক্তি ওই দরজা দিয়ে প্রবেশ করল। রাসূলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! মালসম্পদ সব বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পথরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতএব, আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেন। বর্ণনাকারীদ্বয় বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আবার হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, 'হে আল্লাহ! আমাদের অবস্থা পাল্টে দাও, আমাদের ওপর এ অবস্থা চাপিয়ে দিও না। হে আল্লাহ! পাহাড়ি এলাকায়, মালভূমিতে মাঠের অভ্যন্তরে ও গাছপালা গজানোস্থলে তা ফিরিয়ে নিয়ে যাও।' এরপর বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে গেল। আমরা বের হয়ে সূর্যকিরণে চলাফেরা করতে লাগলাম। (মুসলিম : ১৯৫৫) ইসতিসকার নামাজ আদায়ের ব্যাপারে ইমামদের মধ্যে নিয়ম এবং পদ্ধতিতে কিছুটা মতপার্থক্য বোঝালেও আল্লাহ তায়ালার কাছে নিম্নের দোয়াটি পাঠ করা খুবই কল্যাণকর ও বরকতময়। কারণ এ দোয়াটি স্বয়ং শেষ নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) বৃষ্টির জন্য পাঠ করতেন। দোয়াটি হলো, 'আলহামদু লিল্লাহি রাবি্বল আলামিন। আর রাহমানির রাহিম। মালিকি ইয়াউমিদ্দিন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইয়াফয়ালু মা ইউরিদ। আল্লাহুম্মা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল গানিয়্যু ওয়া নাহলুল ফুকারাউ। আনজিল আলাইনাল গাইছা ওয়াজয়া'ল মা আনজালতা লানা কুওয়্যাতান ওয়া বালাগান ইলা খাইরিন।' অর্থ 'সব প্রশংসা পৃথিবীর প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তিনি পরম করুণাময় এবং দয়ালু ও শেষ বিচারের মালিক। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা-ই করেন। হে আল্লাহ! তুমিই একমাত্র মাবুদ, তুমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। তুমি ধনী, আমরা গরিব। আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করো এবং আমাদের জন্য যা অবতীর্ণ করো, তা আমাদের জন্য শক্তিময় ও কল্যাণ দান করো। এই দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে তাঁর দয়া ও রহমত লাভের জন্য প্রার্থনা করা হয়। দোয়াটিতে নিজেকে অতি অসহায়-গরিব বলে উল্লেখ রয়েছে এবং আল্লাহকে জ্ঞান করা হয়েছে সম্পদশালী ও মহান শক্তিধর হিসেবে। বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা ও ইসতিসকার নামাজবিষয়ক আরো কিছু হাদিস আবদুল্লাহ ইবনে আবু বাকর (রা.) থেকে বর্ণিত| তিনি আব্বাদ ইবনে তামীমকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ মাযেনীকে বলতে শুনেছি- রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজের নির্ধারিত স্থানে চলে গেলেন এবং সেখানে পৌঁছে ইসতেসকার নামাজ পড়লেন| যখন কেবলামুখী হলেন, তিনি তাঁর চাদরটা উল্টিয়ে নিলেন। (মুসলিম ১৯৪৭) আব্বাদ ইবনে তামীম (রা.) থেকে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত| তিনি বলেন, নবি (সা.) নামাজের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে ইসতেসকার দোয়া করলেন এবং কেবলামুখী হয়ে তাঁর চাদরটা উল্টিয়ে দিলেন| অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন।(মুসলিম ১৯৪৮) মূসা’দ্দাদ (রহ.) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক জুম্মার দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! (পানির অভাবে) ঘোড়া মরে যাচ্ছে, ছাগল বকরীও মরে যাচ্ছে। কাজেই আপনি দু’আ করুন, যেন আল্লাহ আমাদেরকে বৃষ্টি দান করেন। তখন তিনি দু’হাত প্রসারিত করলেন এবং দু’আ করলেন। (বুখারি ৮৮৫) আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ আনসারী (রা.) জানিয়েছেন যে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইসতিসকার উদ্দেশে মাঠের দিকে বের হয়ে গেলেন| যখন তিনি দোয়া করার ইচ্ছা করলেন, কেবলামুখী হলেন এবং নিজের চাদর উল্টিয়ে দিলেন।(মুসলিম ১৯৪৯) আব্বাদ ইবনে তামীম মাযেনী থেকে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত| তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন| তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন ইস্তেসকার উদ্দেশে বের হলেন| তিনি লোকদের দিকে পিঠ রেখে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে লাগলেন এবং কেবলার দিকে মুখ করে তাঁর চাদরটা উল্টিয়ে দিলেন| অতঃপর তিনি দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন। (মুসলিম ১৯৫০) এছাড়া এই নামাজ সম্পর্কে মুসলিম শরিফে আরো বেশ কিছু হাদিস রয়েছে। ইসতিসকার নামাজ কি সুন্নাত নাকি… বৃষ্টির জন্য দোয়া-প্রর্থনা করা সর্বসম্মতিক্রমে সুন্নাত। তবে সেজন্য নামাজ পড়া সুন্নাত কিনা এ বিষয়ে ইমামদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। ইমাম আবু হানীফার মতে, এ নামাজ সুন্নাত নয়, বরং দোয়াই যথেষ্ট। তবে বিপুল সংখ্যক সাহাবি-তাবেয়ি এবং অধিকাংশ উলামার মতে, এ নামাজও সুন্নাত। আবু হানীফা (র.) নিজ মতের সপক্ষে ওইসব হাদিস পেশ করেন, যেগুলোতে এ নামাজের কোনো উল্লেখ নেই। আর বিশেষজ্ঞ আলেমরা ওই সব হাদিসের ভিত্তিতে সুন্নাত প্রমাণ করেন যাতে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে যে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইসতিসকার জন্য দুরাকাত নামাজ পড়েছেন। সুতরাং প্রকৃত কথা হচ্ছে- ইসতিসকার নামাজ সুন্নাত হোক কিংবা হোক মুস্তাহাব। এটা বড় বিষয় নয়, বড় বিষয় হচ্ছে এমন দূযোর্গপূণ অবস্থায় সর্ব প্রকার অনৈসলামিক-কুসংস্কারপূর্ণ এবং শিরকি কাজ করা থেকে বিরত থেকে ইসলামের অনুশাসণকে গ্রহণ করা, নবিজি (সা.)-এর আদর্শকে মেনে নেয়াই একজন মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব এবং মুসলমানিত্বের পরিচয়্ক। ইসতিসকার নামাজের নিয়ম অনাবৃষ্টিতে খুব বেশি অসুবিধা হলে মুসল্লিদের একত্র হয়ে খোলা মাঠে গিয়ে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতে হয় এবং নামাজ আদায় করতে হয়। আর এ প্রার্থনা করাকেই ইসতিসকার নামাজ বলে। আলেম-ওলামাদের মতে, এ নামাজ মাঠে গিয়ে আদায় করার আগে পূর্ব প্রস্তুতি সহকারে আদায় করতে হয়। সংশ্লিষ্ট ওই এলাকার ইমাম ও খতিব মুসল্লিদের নিয়ে বসবেন, নসিহত করবেন, উপদেশ দেবেন এবং দিনে মাঠে গিয়ে নামাজ আদায় করবেন। নামাজের দিন নামাজ আদায়ের আগ পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার ব্যপারে কিছু কিছু আলেমদের মত পাওয়া যায়। নামাজ এর কেরাত উচ্চস্বরে পড়তে হবে। দু হাত উচ্চে তুলে ধরে মুনাজাত করতে হবে। মাঠে যাওয়ার আগে এবং পরে সবাই তওবা করবেন। তওবা করলে বৃষ্টি বর্ষণের খুবই সম্ভাবনা থাকে। একদিন, দুইদিন করে তিনদিন পর্যন্ত এই দোয়া-নামাজ আদায় করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া ফিকাহ শাস্ত্রের কিছু কিতাবে এই দিনে বা এই উপলক্ষে রোজা রাখাকে মুস্তাহাব বলা হয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরানে ইরশাদ হচ্ছে, 'অতঃপর বললাম, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য অজস্র বৃষ্টিধারা প্রবাহিত করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি দ্বারা সাহায্য করবেন (৭১ : ১১-১২)। মাওলানা মিরাজ রহমান ইমেইল : [email protected]