বর্তমান পৃথিবীতে মিডিয়ার জয়জয়কার। মিডিয়া যা বলে, আমরা অনেকে অন্ধের মতো তাতেই সায় দিয়ে যাই। বিশেষ করে নারীর সৌন্দর্যের সংজ্ঞাটা তো মিডিয়ারই তৈরি। অন্তর্বাস বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা খুব সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, কারণ মিডিয়া এবং বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানিগুলোর মতে, নারীর সৌন্দর্য ফুটে ওঠে শুধুমাত্র বিশেষ কিছু “আবেদনময়” অন্তর্বাস পরিধানে। নিজের স্বামী বা পুরুষ সঙ্গীটিকে খুশি করার জন্য তাই নারীরা ঝাঁকে ঝাঁকে একই ধরণের এসব অন্তর্বাস কিনতে থাকেন, যদিও এগুলো তাদের ব্যক্তিগত পছন্দ না হয়। আসলে সত্যটা কি জানেন? নারীত্ব প্রকাশের জন্য এসব আবেদনময় অন্তর্বাসের আসলে দরকারই নেই। বরং অন্তর্বাস ব্যবহারের ওপরে চালানো এক গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন ধরণের অন্তর্বাসের রয়েছে নারীর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা।

ইউনিভার্সিটি অফ লিচেস্টারের ডক্টর ক্রিস্টিয়ানা সাওউসির এই গবেষণায় দেখা যায়, অন্তর্বাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নারীরই রয়েছে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি। ছোটবেলা থেকে একজন মানুষ যেভাবে বেড়ে ওঠে, তার পরিবার তাকে যেভাবে প্রভাবিত করে, তার পড়াশোনা এবং পেশা এই সবই নারীর অন্তর্বাস নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখে এবং এসব বিষয়ের ওপরে নির্ভর করে প্রত্যেক নারীর অন্তর্বাসের প্রয়োজন ভিন্ন ভিন্ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। অথচ মিডিয়ার প্রভাবে নারী নিজের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিতে ভুলে যাচ্ছে। বিশেষ করে ভ্যালেন্টাইন’স ডে এর সময়ে তা বেশি দেখা যায়। উদাহরন হিসেবে বলা যায়, কিছু অন্তর্বাস আছে যা নারীর শরীরের আকৃতি পরিবর্তন করে দেয়। “শেপিং আন্ডারওয়্যার” নামে পরিচিত এসব অন্তর্বাস সাধারণ পেশার নারীদের জন্য একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। নিজেদের সৌন্দর্যকে প্রকাশ করার জন্য তাদের পড়া উচিত এমন অন্তর্বাস যাতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এক্ষেত্রে আবেদন যতটা গুরুত্বপূর্ণ, স্বাচ্ছন্দ্য ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। এই গবেষণায় ডক্টর সাওউসি অনেক ধরণের পেশার নারীর সাক্ষাৎকার নেন। এতে দেখা যায়, কিছু কিছু পেশার নারী যেমন খেলোয়াড়েরা পছন্দ করেন আকর্ষণীয় ধরণের অন্তর্বাস, আবার যারা শিক্ষকতা পেশার সাথে জড়িত তারা এমন অন্তর্বাস পছন্দ করেন যা তাদের পেশাদার পোশাকের সাথে মানানসই। তারা অন্তর্বাসের ব্যাপারে ততটাই চিন্তা করেন যতটা চিন্তা করেন এর ওপরে পরা পোশাকের ব্যাপারে। অন্তর্বাস নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীর ওপরে সবচাইতে বড় ভুমিকা রাখে তার মা। কারণ মেয়ের প্রথম অন্তর্বাস তিনিই কিনে দেন। আর তা থেকেই নারীত্বের প্রথম ধারণা পেয়ে থাকে মেয়েটি।