
ছবি সংগৃহীত
তাঁদের শীত ভ্রমণের গল্প
আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৬, ১৪:৪৩
ছবি: শামছুল হক রিপন/নাঈম প্রিন্স ও সংগৃহীত
(প্রিয়.কম) প্রকৃতির আপন আলোয় তারকারা নিজেদেরকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেন। সেই সাথে নিজের সম্ভাবনার কথাও বোঝার চেষ্টা করেছেন।অনেকদিন আগ থেকেই শীতের সাথে মানুষের গড়ে উঠেছে পরস্পর বিপ্রতীপ দুই সম্পর্ক। শীতের নানা উপহার ও উপাচার মানুষকে দেয় পরম প্রশান্তি। শীতের কুয়াশা সবকিছু ঢেকে রাখার পক্ষপাত করে।
শীত নিয়ে এত বন্দনা করার কারণ হলো- শীতের সময় ভ্রমণে কাজ করে আলাদা অনুভূতি। প্রকৃতির এ বদলে যাওয়া তারকরাও দারুণভাবে উপভোগ করেন। এজন্য সারা বছরের ব্যস্ততা থেকে শীতের সময় নিজেকে একটু ভিন্ন রূপে ভিন্নভাবে সময় দেওয়া।
কবি আবু হেনা মোস্তফা কামাল শীত নিয়ে লিখেছেন, ‘সারারাত গাঢ় কুয়াশার ভেতরে মাতাল জাহাজের মতো আমাদের ঘর গৃহস্থালি; বস্তুত এ রকম অবাঙালি শীত আমরা অনেক অনেক দিন আদৌ দেখিনি; আত্মরক্ষার জন্যে কোনো আশ্রয় নেই। এমনকি ভোর হলেও আকাশ উপচে নামে সোনালি তরল। তাছাড়া, গোল হয়ে বসে একসাথে, সহৃদয়, আগুনে হাত সেঁকে নেয়ার মতো সম্প্রীতি কোথায়?’
আমাদের চোখের সম্মুখ থেকে কুয়াশার পর্দা সরে যায়। আমরা দেখতে পাই, রৌদ্রধোয়া ভূ-প্রকৃতি। আমাদের মুগ্ধতা, জীবনধারণ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, হাসি-কান্নার আলেখ্য এই মাটিকে ঘিরে, সেখানে শীত এক বিশেষ ব্যাঞ্জনা। আর তারকারা জানিয়েছেন শীত নিয়ে তাদের ভ্রমণের কথা। অথবা নতুন বছরে শীতে কোথায় ঘুরতে যাবেন।
অপু বিশ্বাস
শীতের সময়টা আসলে খুবই উপভোগ করি। সেটা ঘুরতে গেলে তো আরও বেশি। গরমের সময় হাঁপিয়ে উঠার একটি বিষয় থাকে। তবে এখন কাজের ভীড়ে সেভাবে নিয়ম করে ঘুরতে যাওয়া হয় না। যেটা হয় অনেকটা কাজ কেন্দ্রিক।ঢাকার বাইরে শুটিংয়ে গেলাম। তখন সময় করে একটু আশেপাশে ভাল কোন ঘোরার জায়গা থাকলে ঘুরে আসি। এই তো কয়েকদিন আগে শুটিং শেষ করে থাইল্যান্ড থেকে ফিরলাম। এখন আবার শুটিংয়ে ব্যস্ত। তবে পরিকল্পনা রয়েছে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার। সেখানে গিয়ে খুব সকালে খেজুরের রস খাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। আর গ্রামে গেলে আমার আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা হয়। তাদের সঙ্গে তো আর প্রতিদিন দেখা হয় না। সময়টাও দারুণ কাটে।
বিদ্যা সিনহা সাহা মীম
এবারের শীতে এখনও কোথায়ও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। তবে এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে এখনও বিষয়টি আটকে আছে। যদি এ মাসের মধ্যে ভিসা পাই তাহলে যাব। আর শীতের সময় কেমন করে যেন শুটিংয়ের ব্যস্ততা যেন একটু বেশিই থাকে। আর শুটিংয়ের ব্যস্ততার কারণে আলাদাভাবে যে ঘোরাঘুরির বিষয় সেটি অনেকটা ভুলেই গিয়েছি।
মাহিয়া মাহি
শীতে তো এবার দেশের অনেক জায়গায় ঘুরাঘুরি করে ফেলেছি। থার্টি ফাস্ট পালন করেছি বান্দরবনে। সেখানে ফানুস উড়িয়েছি। রাস্তায় বিভিন্ন গাড়ির ড্রাইভারেরা যে রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করেন-সেখানে খেয়েছি। এছাড়া তখন আমাদের সাত দিনের লম্বা একটি ভ্রমণ ছিল। তখন সময়গুলো দারুণ কেটেছে। এখন ঢাকায় ফিরেছি। এখন মাথায় শুধু কাজ আর কাজ।
সুজানা জাফর
শীতের সময় গ্রামের যে কুয়াশার চাদর মাখানো রূপ থাকে সেটি দেখতে আমার কাছে বেশ দারুণ লাগে। আর সরিষা ফুল আমার খুবই পছন্দের।শীতের সময় একবার হলেও আমি গ্রামে যাই। যখন ছোট ছিলাম তখন শীতের সময় পিঠা উৎসবের মত করে একটি আয়োজন করা হতো। যেখানে আমাদের পরিবারের সকলেই উপস্থিত থাকতেন। এখন তো সবাই যে যার মত করে ব্যস্ত হয়ে গেছেন। যার কারণে এখন আর সেরকমটা হয় না। সবাই ঘুম থেকে উঠে চুলার আশেপাশে বসে থাকত। গরম গরম পিঠা খাওয়ার জন্য বসে থাকত। শীতের সময়ের সবচেয়ে দারুণ বিষয় হলো গরমের কোন চিন্তা নেই। তবে ঘোরাঘুরির জন্য আলাদা কোন পরিকল্পনা থাকে না। এবার শীতে অটিস্টিক শিশুদের জন্য কম্বল আর এতিম শিশুদেরকে সোয়েটার দিয়েছি। এছাড়া কিছু প্রসাধনী সামগ্রীও দিয়েছি। এরপর কয়েকদিনের মধ্যেই গ্রামে শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল দেওয়ার জন্যে যাব।
পিয়া জান্নাতুল
শীত, বর্ষা কিংবা গরম এ আলাদা করে ঘোরাঘুরি করা হয় না। সবসময় তো কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। যখন সময় পাই, তখনই ঘুরতে চলে যাই। তবে কয়েকদিন আগে ব্যাংকক আর ভারতে গিয়েছিলাম। গত দুদিন আগে দেশে ফিরেছি। তবে কয়েকদিন পরে আমার গ্রামের বাড়ি খুলনায় যাব। তবে খুব ইচ্ছে হয় যদি পরিবারের সবাই মিলে একটু ঘুরতে যাওয়া যেত। যখন ছোট ছিলাম তখন আমার চাচা-ফুপুরা আমাদের বাড়িতে আসতেন। এরপর আমরা পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে যেতাম। তখন পুরনো দিনের বাংলা গান খুব জোড়ে বাজিয়ে শুনতাম। এখন আর বিষয়টি সেরকম নেই। নুসরাত ফারিয়া
এবারের পুরো শীতের বেশিরভাগ সময়টা আমার রামুজি আর ব্যাংককে কেটেছে। আর এ দুটি দেশের যেখানে আমরা শুটিং করেছি। সেখানে কোথাও শীত ছিল না। তবে ঢাকাতে বাসায় আব্বু আম্মু সন্ধ্যার পরে বাসায় ভাপা পিঠা নিয়ে আসেন। এরপর পরিবারের সবাই মিলে খাওয়াটা বেশ দারুণ উপভোগ করি। তবে একটা বিষয় কি- যখন ছোট ছিলাম তখন পরিবারের সবাই মিলে ঘোরাঘুরির জন্য একটি সময় নির্দিষ্ট সময় থাকত। তখন আমাদের পরীক্ষা শেষ হত। এ বিষয়টা এখন অনেক মিস করি।