
ছবি সংগৃহীত
ঘুমের ট্যাবলেট ও কাশির সিরাপ হয়ে উঠছে নেশার একমাত্র উপাদান
আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৩, ১৮:০০
ঘুমের ট্যাবলেট ও কাশির সিরাপ সবার জানামতে এক প্রকার ঔষধ। কিন্তু এগুলাই নেশার একমাত্র উপাদান হয়ে উঠছে দেশের বিভিন্ন এলাকার তরুন ছেলে-মেয়েদের কাছে। পরিবারের লোকজন যাতে বুঝতে না পারে তাই ঔষধ দিয়েই নেশার কাজ চালায় অনেকে, অনেকে মনে করে ভাল ঘুমের প্রয়োজন তাই তারা এগুলা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই গ্রহন করে। প্রেমে ব্যার্থ, হতাশা ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে মনে একটু দুঃখবোধ কাজ করলেই তারা এগুলা সানন্দে গিলছে। বিভিন্ন ফার্মেসী বিনা ব্যাবস্থাপত্র ছাড়াই তাদের কাছে ঘুমের ট্যাবলেট- সেডিল, সিডক্সিন, মাইলাম, ক্লোব, প্রেশারের এপিক্লোন, কাশির সিরাপ ফেনাড্রিল, তুশকা, অফকফ, ডেক্সপোটেন, এক্সপোটেন ইত্যাদি সরবরাহ করে। এগুলার সেবনপদ্ধতি ভয়াবহ। কেউ ঘুমের ট্যাবলেট গুড়ো করে সরাসরি কাশির সিরাপের মধ্যে, আবার কেউ ঘুমের ট্যাবলেট, সিরাপ এনার্জি ড্রিংসের মাঝে মিশিয়ে ঝাকিয়ে সেবন করে। অনেকে আবার শুধুমাত্র ঘুমের ট্যাবলেট নিয়মিত ২/৩ টা করে সেবন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে এইরুপ ঘুমের ট্যাবলেট ও কাশির সিরাপ বা এনার্জি ড্রিংসের মিশ্রণ নিয়মিত সেবন করলে লিভার ক্যানসারসহ, কিডনীর বড় ধরনের অসুখ হতে পারে। এছাড়া দীর্ঘদিন ঘুমের ট্যাবলেট নিয়মিত সেবনের করলে আমাদের দেহে নানা ধরনের জটিল সমস্যা দেখা দেয়। যেমনঃ ১ - ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। ২ - ফুসফুসের ক্রিয়া দুর্বল হয়ে যায়। ৩ - শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ৪ - মানুষের বুদ্ধিমত্তা লোপ পায়। ৫ - মাথা ঘোরা, মাথা ধরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া। ৬ - পেটে ব্যাথা, হজমের সমস্যাসহ খাদ্যে অরুচি দেখা দেয়। ৭ - এছাড়া হাত, পা ও বুক জ্বালা করে। ৮ - সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, নিয়মিত ঘুমের ঔষধ সেবনের ফলে মানুষ দ্রুত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের মনিটরিং করা হয় না, যার ফলে ফার্মেসীগুলো বিনা প্রেসক্রিপশনে অবাধে এইসব ঔষধ বিক্রি করছে। এইভাবে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ বিক্রি করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। একমাত্র ম্যাজিস্ট্রেটই পারেন ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ফার্মেসীগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করতে। এছাড়া এই প্রকার ঔষধের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তরুন-তরুনীদের সুস্থ বিনোদন, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উৎসাহিত করতে হবে, যাতে তারা এই ধরনের নেশার প্রতি আগ্রহ হারায়।