ছবি সংগৃহীত

ঘরে বসেই দূর করুন গ্যাংলিয়ন সিস্ট

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারি ২০১৬, ০২:২২
আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৬, ০২:২২

ফটো সোর্স : www.instructeble.com

(প্রিয়.কম) –   গ্যাংলিয়ন সিস্ট এক ধরণের টিউমার যা আঙ্গুল, কবজি, গোড়ালি বা পায়ের পাতার নীচের অংশের টেন্ডন বা জয়েন্টের উপরে হয়। এটা দেখতে তরল থলির মত দেখায়। এর ভেতরে ঘন, বর্ণহীন, স্বচ্ছ, আঠালো ও জেলির ন্যায় উপাদান থাকে। আকারের উপর ভিত্তি করে সিস্ট দৃঢ় বা ফাঁপা হতে পারে।  গ্যাংলিয়ন সিস্টকে বাইবেল সিস্ট বা বাইবেল বাম্পস ও বলা হয়।

গ্যাংলিয়ন সিস্ট হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি। জয়েন্ট  বা টেন্ডনের যন্ত্রণা বা যান্ত্রিক পরিবর্তনের ফলে এই সমস্যাটি বাড়তে পারে। যাদের অষ্টিও আরথ্রাইটিস আছে এবং জয়েন্ট  বা টেন্ডনে আঘাত প্রাপ্ত হলেও গ্যাংলিয়ন সিস্ট হতে পারে। সাধারণত ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সের মানুষের বিশেষ করে মহিলা ও ব্যায়ামবিদদের গ্যাংলিয়ন সিস্ট হয়ে থাকে। ১০ বছরের বেশি বয়সের শিশুদেরও এটি হতে পারে যা খুবই বিরল।

সাধারণত ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে গ্যাংলিয়ন সিস্ট নিরাময় হয় কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে প্রতিকার করতে হয়। ঘরোয়া প্রতিকার গুলো সম্পর্কে জেনে নেই আসুন।

১। উষ্ণ চাপ  

নিয়মিত উষ্ণ চাপ দিলে গ্যাংলিয়ন সিস্ট কমানো যায়। এর ফলে আক্রান্ত স্থানে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ও তরল নিষ্কাশিত হয়। এর দ্বারা ব্যাথা ও ফুলা কমে যাবে। তবে গরম সেঁক দিয়ে সিস্টের বৃদ্ধি রোধ করা যায়না।

·         গরম পানিতে একটি কাপড় ভিজিয়ে পানিটুকু চিপে বের করে নিন

·         এবার কাপড়টি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট রাখুন

·         সিস্ট দূর হওয়া পর্যন্ত দিনে ৩-৪ বার এভাবে করুন

২। ব্ল্যাক টি ব্যাগ

ব্ল্যাক টি এর এসিডিক উপাদান গ্যাংলিয়ন সিস্টের খারাপ দিকে যাওয়া রোধ করতে পারে। ব্ল্যাক টি এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণ গ্যাংলিয়ন সিস্টের ব্যথা ও ফোলা কমাতে সাহায্য করে।

·         গরম পানিতে ১টি ব্ল্যাক টি ব্যাগ ৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন

·         তারপর পানি থেকে উঠিয়ে অতিরিক্ত পানিটুকু চিপে বের করে নিন

·         এই আর্দ্র ও উষ্ণ টি ব্যাগটি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখুন

·         প্রতিদিন কয়েকবার এটা করতে পারেন

৩। রাবার

গ্যাংলিয়নটি ঢেকে ফেলার জন্য একটি পুরনো রাবার লাগবে এবং বাঁধার জন্য স্ট্রেচি ব্যান্ডেজ লাগবে। রাবারটির চারপাশ একটা পিচ বোর্ডের উপর ঘষে গোলাকার করে নিতে হবে।

·         পুরনো রাবারটি গ্যাংলিয়নের উপর রাখুন

·         এবার একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে হাত ও রাবারটিকে মজবুত করে বেঁধে ফেলুন

·         লক্ষ রাখবেন যেন হাতের রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত না হয়

·         সারারাত এভাবে রেখে দিন। সকালে ব্যান্ডেজ খুলে পরীক্ষা করুন

·         এভাবে কয়েক রাত করার ফলে গ্যাংলিয়নটি দূর হবে

তবে গ্যাংলিয়ন যদি ছোট হয় তাহলেই এই প্রক্রিয়াটি কাজে দেবে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গ্যাংলিয়ন সিস্টে কোন ব্যথা হয়না এবং এর জন্য কোন চিকিৎসার ও প্রয়োজন হয়না। ডাক্তার ও আপনাকে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু যদি গ্যাংলিয়ন সিস্টে ব্যথা হয় এবং অস্থি সন্ধির নাড়াচাড়ায় সমস্যা হয় তাহলে ডাক্তার নিডেল অ্যাস্পাইরেশনের মাধ্যমে বা ছোট কোন সার্জারির মাধ্যমে সিস্টের ভিতরের তরল বাহির করে নিয়ে আসার চিকিৎসা করবেন। তবে আক্রান্ত স্থানটিতে আঘাত পেলে বা খুব বেশি নাড়াচাড়া করতে হলে গ্যাংলিয়ন সিস্ট পুনরায় ফিরে আসতে পারে। এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাম বা এম আর আই এর মাধ্যমে গ্যাংলিয়ন সিস্ট ডায়াগনোসিস করা হয়ে থাকে।

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ

প্রিয়.কম