ছবি সংগৃহীত

খাদ্যগুণে ভরপুর অ্যাভোকাডোর পুষ্টি কথন

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০১৬, ০২:৪৪
আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৬, ০২:৪৪

ফটো সোর্স : www.thehealthyarchive.info

(প্রিয়।কম)- অ্যাভোকাডো মাখনের মত কোমল মসৃণ ও সুগন্ধি ফল যা উষ্ণ আবহাওয়ায় জন্মায়। অ্যাভোকাডো কালো বা সবুজ রঙের হয়। একে এলিগেটর পিয়ার বা বাটার ফ্রুটও বলা হয়ে থাকে। বহুমুখী গুণের অধিকারী অ্যাভোকাডো একমাত্র ফল যাতে প্রচুর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। অ্যাভোকাডোতে ২০ রকমের ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। এছাড়াও এতে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট লাইকোপেন এবং বিটা ক্যারোটিন থাকে। অ্যাভোকাডোর স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো জেনে নেই আসুন।

অ্যাভোকাডোর স্বাস্থ্য উপকারিতা সমুহ :

১। হৃদপিণ্ডের জন্য

রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান Patricia  Groziak, Ms, RD ও Hass Avocado Board  এর মতে, প্রতি আউন্স অ্যাভোকাডোতে ২৫ মিলিগ্রাম বিটা সাইটোস্টেরল থাকে। নিয়মিত বিটা সাইটোস্টেরল ও অন্য উদ্ভিজ স্টেরল গ্রহণ করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে থাকে।

২। দৃষ্টিশক্তির জন্য

অ্যাভোকাডোতে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি ফাইটোকেমিক্যাল লুটেইন ও জেনান্থিন থাকে। এই দুটি উপাদান চোখে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কাজ করে যা চোখের ক্ষতি কমাতে পারে এবং বয়স জনিত চোখের সমস্যা ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

৩। অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এজেন্ট

অ্যাভোকাডোতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান, ক্যারোটিনয়েড অ্যান্টিওক্সিডেন্ট, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড এবং পলিহাইড্রক্সিলেটেড ফ্যাটি অ্যালকোহল আছে যা রিউম্যাটয়েড ও অষ্টিও আরথ্রাইটিস এর নিরাময়ে সহায়তা করে।

৪। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ

অ্যাভোকাডোর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্টকে বন্ধ করে এবং অ্যাভোকাডোর দ্রবণীয় ফাইবার রক্তের সুগার লেভেলকে সুস্থিত করে। অন্য ফলের তুলনায় অ্যাভোকাডোতে চিনি ও শর্করার পরিমাণ কম থাকে বলে রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৫। ইমিউন সিস্টেম

অ্যাভোকাডোতে গ্লুটাথায়ন নামের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা ইমিউন সিস্টেমের সাথে সম্পর্কিত।

৬। জন্মগত ত্রুটি রোধ করে

ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাভোকাডো কমিশনের মতে, হবু মায়েদের জন্য অ্যাভোকাডো অনেক ভালো। অ্যাভোকাডোতে পর্যাপ্ত ফলিক এসিড থাকে যা জন্মগত ত্রুটি যেমন- স্পিনা বিফিডা, নিউরাল টিউব ডিফেক্ট ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।

৭। ক্যান্সার

মুখ, ত্বক ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় অ্যাভোকাডো। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদানের মিশ্র ক্রিয়ার জন্য এবং অ্যাভোকাডোর ফাইটোকেমিক্যাল ক্যান্সার কোষ উৎপন্ন হওয়া বন্ধ করে এবং মেরে ফেলে।

৮। পরিপাক

অ্যাভোকাডোতে উচ্চমাত্রার ফাইবার থাকে, একটি অ্যাভোকাডোর অর্ধেক অংশে ৬-৭ গ্রাম ফাইবার থাকে। ফাইবার সমৃদ্ধ ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে এবং পরিপাক নালী সুস্থ থাকে।

তাছাড়া অ্যাভোকাডোতে ভিটামিন থাকায় ত্বকের জন্য উপকারী, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে, ডিপ্রেশনের ঝুঁকি কমায় ও বিভিন্ন প্রকার ক্রনিক ডিজিজ ঝুঁকি কমায়।

সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি :

অন্যান্য ফলের মতই অ্যাভোকাডো ও বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে। কারণ এতে ফ্যাট আছে, তাই অনেক বেশি পরিমাণে অ্যাভোকাডো খেলে ওজন বৃদ্ধির সমস্যা হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে অ্যাভোকাডো খেলে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে, যদিও এটা বিরল।

যদি একটি অ্যাভোকাডো খাওয়ার পর নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কাশি, জোড়ে নিঃশ্বাস ফেলা ও শরীর ফুলে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ গুলো দেখা দেয় তাহলে অ্যাভোকাডো খাওয়া বাদ দিয়ে দেখুন উপসর্গ গুলো চলে যায় কিনা। যদি সমস্যা বেড়ে যায় তাহলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ

 প্রিয়.কম