ছবি সংগৃহীত

কিতাবুল ইমান : প্রবন্ধ নং- ২৫ : হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর প্রতি ঈমান

priyo.Islam
লেখক
প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০১৪, ০২:৪৩
আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৪, ০২:৪৩

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি ঈমান

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ব্যাপারে আমাদের যে বিশ্বাস পোষণ করতে হবে, তা হলো এই যে, তিনি হলেন আল্লাহ তাআলার নবি ও রাসুল। তিনি আল্লাহর বান্দা ও মনোনীত পুরুষ। তিনি কখনো মূর্তি পূজা করেননি। এক পলকের জন্যও কখনো শিরক করেননি। তিনি কখনো পাপ-গুনাহ করেননি। তিনি [মুহাম্মদ সা.] সর্বশেষ নবি আমরা এ ব্যাপারেও বিশ্বাসও করব যে তিনি ছিলেন সর্বশেষ নবি; কেননা তাঁর শেষ নবি হওয়ার বিষয়টি কোরান-সুন্নাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। আল-কোরানে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, وَلَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ ‘তবে আল্লাহর রাসুল ও সর্বশেষ নবি’ (সূরা আল আহযাব , ৪০)। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘আমার উদাহরণ ও অন্যান্য নবিদের উদাহরণ ওই ব্যক্তির মতো যে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করল। সে এটিকে সুন্দর করল ও শোভিত করল। তবে কোনো এক কোণো একটি ইটের জায়গা খালি রেখে দিল। অতঃপর মানুষ ঘুরে-ঘুরে বিল্ডিংটি দেখতে এবং বিস্ময় প্রকাশ করতে লাগল। আর বলতে লাগল, ইটটি যদি এখানে বসিয়ে দেওয়া হত! তিনি বললেন,‘আমি হলাম সেই ইট এবং সর্বশেষ নবি।’ [বুখারি ও মুসলিম] তিনি অন্য এক হাদিসে বলেছেন,‘আমি মুহাম্মদ, আমি আহমদ, আমি বিলোপসাধনকারী, যার দ্বারা কুফরিকে বিলুপ্ত করা হবে, আমি একত্রকারী, আমার নবুওত-যুগেই [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু সর্বশেষ নবি, তাই তাঁর নবুওতযুগ কিয়ামত অবধি প্রলম্বিত।] মানুষদের হাশরের ময়দানের একত্র করা হবে। আমি আকেব- আকেব হলো যার পর অন্যকোনো নবি নেই।’ [বুখারি ও মুসলিম] অতএব আমরা দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামের পর আর কোনো নবুওত নেই, আর কোনো নবি নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘আমার উম্মতের মধ্যে ত্রিশজন মিথ্যাবাদী আসবে। এদের প্রত্যেকেই ধারণা করবে যে সে নবি। অথচ আমিই সর্বশেষ নবি। আমার পরে কোনো নবি নেই। [মুসলিম] তিনি [মুহাম্মদ সা.] মুত্তাকিদের ইমাম মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাপারে আমাদের এ বিশ্বাসও রাখতে হবে যে, তিনি মুত্তাকীদের ইমাম। যার অনুকরণে-অনুসরণে সকল কল্যাণমূলক কাজ সম্পন্ন করা অত্যাবশ্যক। ইরশাদ হয়েছে, قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ ‘বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আললাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’-(সূরা আলে ইমরান , ৩১)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا ‘অতএব তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে-ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোনো দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়’-(সূরা আন্-নিসা , ৬৫)। তিনি [মুহাম্মদ সা.] আল্লাহর বন্ধু মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তাআলার বন্ধু এ বিষয়ে ঈমান আনাও আমাদের ওপর ফরজ। আল্লাহর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব সর্বশীর্ষ পর্যায়ের বন্ধুত্ব, যাকে আরবিতে ‘আল খুল্লাহ’ বলা হয়। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘আমি যদি কাউকে পরম বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতাম, তবে আবু বকরকে গ্রহণ করতাম। কিন্তু সে আমার ভাই ও সাথী। আর আল্লাহ তাআলা তোমাদের সাথীকে পরম বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছেন। [মুসলিম] তিনি [মুহাম্মদ সা.] সমগ্র জিন ও মানব জাতির প্রতি প্রেরিত আমাদের এ বিশ্বাসও রাখতে হবে যে, তিনি সমগ্র জিন ও মানব জাতির প্রতি প্রেরিত। আল্লাহ তাআলা আল-কোরানে জিনদের কথা উদ্ধৃত করে বলেছেন, يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآَمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُمْ مِنْ ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ ‘হে আমাদের কওম, আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি ঈমান আন, আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। আর তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আজাব থেকে রক্ষা করবেন’-(সূরা আল আহকাফ , ৩১)। আর সমগ্র মানব জাতির প্রতি প্রেরিত হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا ‘আর আমি তো কেবল তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি’-(সূরা সাবা , ২৮)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا ‘বল, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসুল’-(সূরা আল আরাফ , ১৫৮)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَى عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا ‘তিনি বরকতময় যিনি তাঁর বান্দার ওপর ফুরকান নাজিল করেছেন যেন সে জগতবাসীর জন্য সতর্ককারী হতে পারে’-(সূরা আল ফুরকান , ১)। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘আমাকে নবিদের ওপর ছয় বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে- আমাকে জাওয়ামিউল কালিম [জাওয়ামিউল কালিম হলো ব্যাপক অর্থকে সংক্ষিপ্ত ভাষায় স্পষ্টাকারে প্রকাশ করা। (অনুবাদক)] দেয়া হয়েছে। ভীতি [ভীতি বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে কাছে যেতে ভয় করা। অর্থাৎ মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যেতে ভয় পেত, কিন্তু যখন কাছে যেত তখন তাকে ভালোবেসে ফেলত। (অনুবাদক)] দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। আমার জন্য গণীমতের সম্পদ হালাল করা হয়েছে। জমিন আমার জন্য পবিত্র ও হালাল করা হয়েছে। আমাকে সমগ্র সৃষ্টির ওপর রাসুল করে প্রেরণ করা হয়েছে। আমার দ্বারা নবুওত সমাপ্ত করা হয়েছে।’ [বুখারিতে ও মুসলিম] আকীদা আত-তাহাবিয়্যাহর ব্যাখ্যাকার বলেন,‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমগ্র মানুষের প্রতি প্রেরিত’ এ বিষয়টি দ্বীনের প্রকাশ্যতম বিষয়ের একটি।’ [শারহুল আকীদা আত্-তাহাবিয়্যাহ পৃ.১৭৮] তাঁকে [মুহাম্মদ সা.] সবার ঊর্ধ্বে ভালোবাসা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আমাদের আরেকটি আবশ্যিক করণীয় হলো- তাঁকে নিজ পিতা পুত্র এমনকি নিজ নফস থেকেও অধিক মহববত করা। [আল ওয়াফা বি আহওয়ালিল মুস্তাফা পৃ. ১/৩৮২ ] আলী (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘তোমাদের মধ্যে কেউ মুমিন হবে না যতক্ষণ না আমি তার কাছে, তার পিতা, তার সন্তান ও সমস্ত মানুষ থেকে প্রিয় হব।’ [বুখারি ও মুসলিম ] আবদুল্লাহ ইবনে হিশাম (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,‘আমরা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ছিলাম। আর তিনি উমর (রাযি.) এর হাত-ধরা অবস্থায় ছিলেন। উমর (রাযি.) তাঁকে বললেন,‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমার কাছে সকল জিনিসের চেয়ে অধিক মহববতের পাত্র। তবে আমার নিজ নাফস ব্যতীত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,‘ না, যার হাতে আমার আত্মা তার কসম, যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে তোমার নিজের চেয়েও মহববতের পাত্র হব।’ উমর (রাযি.) বললেন,‘তাহলে, আল্লাহ কসম খেয়ে বলছি, আপনি আমার কাছে এখন আমার নিজ নাফসের চেয়েও অধিক প্রিয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,‘এখন হয়েছে হে উমর।’ [বুখারি] মুজিযা দ্বারা আল্লাহ তাআলা তাঁকে [মুহাম্মদ সা.] সাহায্য করেছেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আমাদের এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে মুজিযা দ্বারা সাহায্য করেছেন, যা নিশ্চিতভাবে তাঁর সত্যতাকে প্রমাণ করে, তিনি যা নিয়ে এসেছেন তার সত্যতাকে প্রমাণ করে। আর মহাগ্রন্থ আল কোরান হলো তাঁর উদ্ভাসিত মুজিযা, যার মাধ্যমে তিনি সমগ্র পৃথিবীবাসীকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তারা কুরআনের মতো গ্রন্থ প্রণয়নে, অথবা এর অংশবিশেষের মতো কোনো কিছু প্রণয়নে ব্যর্থ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَإِنْ كُنْتُمْ فِي رَيْبٍ مِمَّا نَزَّلْنَا عَلَى عَبْدِنَا فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِنْ مِثْلِهِ وَادْعُوا شُهَدَاءَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ . فَإِنْ لَمْ تَفْعَلُوا وَلَنْ تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ ‘আর আমি আমার বান্দার উপর যা নাজিল করেছি, যদি তোমাদের সে সম্পর্কে সন্দেহ থাক, তবে তোমরা তার মতো একটি সূরা নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সাক্ষীসমূহকে ডাক; যদি তোমরা সত্যবাদী হও’-(সূরা আল বাকারা , ২৩-২৪)। অতএব আমরা বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে অনুভূতিগ্রাহ্য মুজিযা দ্বারা সাহায্য করেছেন, যা বিভিন্ন সহিহ হাদিসে উল্লিখিত হয়েছে। যেমন চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়া। পাথর তাঁকে ছালাম দেয়া। তাঁর জন্যে খেজুর-কাঠের আকুলতা। তাঁর আঙ্গুলের মাঝখান থেকে পানি বের হওয়া। সামান্য খাবার দিয়ে অনেক মানুষকে পরিতৃপ্ত করা। তাঁর সামনে ভাজা বকরীর সাক্ষ্য প্রদান। নবুওতের পূর্বে মেঘ তাঁকে ছায়া দেওয়া। আবু জেহেল ও তার পাথরের মাঝে যা ঘটেছিল যখন সে পাথর দিয়ে রাসূলের মাথায় আঘাত করতে চেয়েছিল, সে ঘটনা। উম্মে মা‘বাদের বকরীর যা ঘটেছিল যখন তিনি তাঁর মুবারক হাত ওই বকরীর স্তনে স্পর্শ করান, সে ঘটনা। মুশরিকদের চেহারায় মাটি নিক্ষেপ করা এবং তাতে মুশরিকরা আক্রান্ত হওয়া। এমন-কিছু অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে সংবাদ দেয়া, যা ঠিক সেভাবেই ঘটেছে যেভাবে তিনি সংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা কর্তৃক তাঁর দোয়া কবুল করা। নিহত হওয়া থেকে তাঁকে রক্ষা করা। আরও এ জাতীয় মুজিযা যার ব্যাপারে বড় বড় গ্রন্থ রচিত হয়েছে। [উল্লিখিত মুজিযা ও এজাতীয় আরও অন্যান্য মুজিযা, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লামের নবুওতের প্রমাণ বহন করে- অনেক সীরাত ও হাদিস গ্রন্থে পাওয়া যায়। ইমাম বুখারি র. এ ব্যাপারে আলাদা একটি অধ্যায় রচনা করেছেন ‘নবুওতের আলামত অধ্যায়’ শিরোনামে। অনুরূপভাবে মুসলিম ইবনুল হাসান আল কুশাইরী র. একটি অধ্যায় কায়েম করেছেন ‘রাসূলের মুজিযা’ শিরোনামে। আলেমদের কেউ কেউ এ বিষয়ে আলাদা গ্রন্থও প্রণয়ন করেছেন। যেমন ‘হিলয়াতুল আওলিয়া’র লেখক আবু নুআইম আল ইসপাহানীর ‘দালাইলুন নুবুওয়াহ’; আবুল হাসান আল মাওয়ারদীর ‘ইলামুন নুবুওয়াহ’; বায়হাকীর ‘দালাইলুন নুবুওয়াহ’; ইবনুল জাওযীর ‘আল ওয়াফা বি আহওয়ালিল মুস্তাফা’ ইত্যাদি।] অনুভূতিগ্রাহ্য মুজিযা বিষয়ে বহু হাদিস এসেছে। এসবের কিছু হলো মুতাওয়াতির। আর কিছু মাশহুর। তবে সামগ্রিক বিবেচনায়, এক দিকে তা মুজিযা সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত জ্ঞানের উৎস। অন্যদিকে তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাললামের সত্যবাদী হওয়ার প্রমাণবহ।[আর ওয়াফা বি আহওয়ালিল মুস্তাফা] তিনি [মুহাম্মদ সা.] ছিলেন, পরিপক্ক যুক্তি ও প্রকাশ্য প্রমাণাদি দ্বারা সাহায্যকৃত আমরা এ ব্যাপারেও বিশ্বাস স্থাপন করি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন পরিপক্ক যুক্তি ও প্রকাশ্য প্রমাণাদি দ্বারা সাহায্যকৃত, যা তাঁর গুণ-বৈশিষ্ট্য ও আখলাক-চরিত্রে ছিল উদভাসিত। অতএব আমরা বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ তাঁকে সর্বোত্তম দেহকান্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা দেখেই নিরীক্ষক-দৃষ্টিধারী ব্যক্তি বলে দিতে পারত যে তিনি একজন নবি। তিনি [মুহাম্মদ সা.] ছিলেন কোরানি আখলাকের চলন্তরূপ আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে আল-কোরানের সকল আখলাকে ভূষিত করেছেন, যা তাঁর সত্যবাদী হওয়া এবং আল্লাহ তাআলা কর্তৃক সাহায্যপ্রাপ্ত হওয়াকে প্রমাণ করে- তাঁকে কেউ কখনো মিথ্যা বলতে শোনেনি, হোক তা দ্বীনের ব্যাপারে অথবা দুনিয়ার ব্যাপারে, হোক তা নবুওতের পূর্বে বা পরে; কেননা যদি কখনো এরূপ ঘটনা ঘটত, তবে তাঁর শত্রুরা তা লুফে নিত এবং তা প্রকাশ করতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করে যেত। তিনি কখনো কোনো দুষ্কর্ম অথবা ঘৃণিত কাজ করেননি, হোক তা নবুওতের পূর্বে কি পরে। তিনি জেহাদের ময়দানে কখনো তাঁর শত্রুদের থেকে পালিয়ে যাননি, অবস্থা যতই সঙ্গিন থাক-না-কেন। এর উদাহরণ ওহুদ ও খন্দকের যুদ্ধ। তিনি তাঁর উম্মতের প্রতি সীমাহীন দয়ার্দ্র ছিলেন। এমনকি উম্মতের জন্য উৎকণ্ঠার অস্বাভাবিকতা কমাতে আল্লাহ তাআলা তাঁকে খেতাব করে বলেন, فَلَا تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَاتٍ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِمَا يَصْنَعُونَ ‘অতএব তাদের জন্য আফসোস করে নিজে ধ্বংস হয়ো না। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা জানেন’-(সূরা ফাতির , ৮)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে , لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ ‘নিশ্চয় তোমাদের নিজদের মধ্য থেকে তোমাদের নিকট একজন রাসুল এসেছেন, তা তার জন্য কষ্টদায়ক যা তোমাদেরকে পীড়া দেয়। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু’-(সূরা আত্-তাওবা , ১২৮)। তিনি ছিলেন বদ্যান্যতা ও দানশীলতার শীর্ষে। দুনিয়ার প্রতি বিমুখ। অল্পে তুষ্ট, যিনি কোনো সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখেননি। তিনি ছিলেন সমধিক বিশুদ্ধভাষী। তাঁকে দেয়া হয়েছে জাওয়ামিউল কালিম তথা ব্যাপক অর্থ ও ভাবকে সংক্ষিপ্ত শব্দমালায় প্রকাশ করার যোগ্যতা। তিনি ছিলেন সহিষ্ণু ও অতি ক্ষমাশীল। তিনি কেবল আল্লাহর খাতিরেই রাগ করতেন। তিনি মুমিনদের জন্য ছিলেন বিনম্র। তিনি ছিলেন আল্লাহর দাসত্বকারী। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে আল্লাহ পথে জিহাদকারী। তিনি তাঁর গুণমাধুরী ও রববানী আখলাক জীনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধরে রেখেছেন। এ ক্ষেত্রে কখনো কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। আল্লাহ তাআলার বাণীতে এদিকেই ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ ‘আর আমি ভানকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই’-(সূরা সাদ , ৮৬)। যারা ভানকারী তাদের গুণমাধুরী স্থায়িত্ব পায় না। তাদের আখলাক চরিত্র হয় লোকদেখানো জাত ও ক্ষণস্থায়ী। পক্ষান্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুণমাধুরী ছিল জীবনব্যাপী। এর পাশাপাশি তা ছিল পূর্ণতার বিচারে শীর্ষতম। এ ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে অন্যকোনো মানুষের তুলনা হয় না। তবে আল্লাহ তাআলা যাদের মাসুম বানিয়েছেন তারা ছাড়া, অর্থাৎ নবি-রাসুলগণ (আ.) ছাড়া। অতএব এ সব উত্তম গুণ ও চরিত্রমাধুরী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওতের পক্ষে প্রকৃষ্ট প্রমাণ। [দেখুন ইছারুল হাক্ক আলাল খালক্ পৃ. ৮০] এ কারণেই, অনেকেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আখলাক-চরিত্র, সত্যবাদিতা, শোভিত সীরত দেখেই তাঁকে সত্যবাদী বলে ফয়সালা দিয়েছেন। উদাহরণত, খাদীজা (রাযি.) যেহেতু জানতেন যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আস-সাদেকুল আমীন ( সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত), তাই সর্বপ্রথম ওহীর সাক্ষাতের পর তাঁর যে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল তা ব্যক্ত করে খাদীজা (রাযি.) কে যখন বললেন,‘আমি ভয় পেয়েছি যে আমার জীবন চলে যাবে’ তখন খাদীজা (রাযি.) বললেন,‘কখনো না, আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না। নিশ্চয় আপনি আত্মীয়তা-বন্ধন রক্ষা করে চলেন। আপনি অক্ষম ব্যক্তির বোঝা বহন করেন। রিক্ত-নিরন্নকে দান করেন। আপনি মেহমানদের আপ্যায়ন করেন। দুর্ঘটনা-কবলিতকে সাহায্য করেন। [মুসলিম] অনুরূপভাবে রোমক-সম্রাট হিরাকল, নবি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে চিঠি পাঠালেন, তিনি তার দেশে থাকা আরবদের তার দরবারে আহবান করলেন। তখন আবু সুফ্য়ান কুরাইশদের একটি ব্যবসায়ী দলে সিরিয়ায় ছিলেন। হিরাকল তাদের ডেকে পাঠালেন। হিরাকলের পাশে সম্রাজ্যের গণ্যমান্য লোকেরা বসা ছিল। হিরাকল অনুবাদককে ডেকে আনলেন। এরপর নবি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবস্থা সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা করতে শুরু করলেন। জবাব শুনে তিনি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, আমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অবস্থা, গুণমাধুরী ও জীবনবৃত্তান্ত যা শুনলাম, তা প্রমাণ করছে যে তিনি সত্যবাদী, তিনি একজন প্রেরিত নবি। ঘটনাটি যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ অতএব হিরাকল ও আবু সুফ্য়ানের মধ্যে সংঘটিত কথোপকথনের পুরোটাই সহিহ বুখারি থেকে এখানে তুলি দিচ্ছি; কেননা এতে অনেক উপদেশ, শিক্ষণীয় বিষয় এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চরিত্রমাধুরীর মাধ্যমে যে তাঁর নবুওতের পক্ষে শক্ত দলিল বহন করেছেন তার প্রমাণ রয়েছে- ইমাম বুখারি র. বলেন-‘আবু সুফয়ান ইবনে হারব আবদুললাহ ইবনে আববাস (রাযি.) কে বলেছেন যে, হিরাকল তার কাছে কুরাইশদের একটি দল পাঠালেন যারা আবু সুফয়ান ও কুরাইশ নেতাদেরকে-দেয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শান্তিচুক্তির সময়সীমায় শাম দেশে ব্যবসায়িক হিসেবে অবস্থান করছিল। আবু সুফয়ান তার দল নিয়ে আইলা এলাকায় থাকাকালে এরা তার কাছে আসেন। হিরাকল তাদের তার দরবারে উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান। হিরাকলের পাশে ছিলেন রোমের মহান ব্যক্তিরা। তিনি তাদের ডাকলেন এবং তার অনুবাদককে হাজির হতে বললেন। এরপর বললেন : যিনি নিজেকে নবি হিসেবে ধারণা করছেন তোমাদের মধ্যে বংশগতভাবে তার সবচেয়ে কাছের মানুষ কে? আবু সুফয়ান বললেন : তাদের মধ্যে আমি সবচেয়ে কাছের মানুষ। হিরাকল বললেন : তুমি আমার কাছে এসো। হিরাকল তার সঙ্গীদেরও নিকটে নিয়ে এলেন এবং তার পেছনে দাঁড় করিয়ে দিলেন। এরপর অনুবাদককে বললেন, তুমি এদের বলো, যে আমি একে ও-ই ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করব। যদি সে আমার সঙ্গে মিথ্যা বলে তবে তোমরা বলিও যে সে মিথ্যা বলছে- আল্লাহর কসম, মানুষ আমার জীবনে মিথ্যার সন্ধান পাবে এ লজ্জা যদি না থাকত, তাহলে আমি সেদিন তাঁর সম্পর্কে অবশ্যই মিথ্যা বলতাম। এরপর তাঁর সম্পর্কে প্রথম প্রশ্নটি ছিল- বললেন : তোমাদের মাঝে তাঁর বংশ মর্যাদা কেমন? বললাম : তিনি বংশমর্যাদাসম্পন্ন। বললেন : তিনি যা বলেন, তোমাদের কেউ কি ইতোপূর্বে এরূপ বলেছে। বললাম : না। বললেন : তার পিতৃপুরুষদের মধ্যে কি কেউ রাজা ছিলেন? বললাম : না। বললেন : মান্যগণ্য ব্যক্তিরা কি তার অনুসরণ করে না দুর্বলরা? বললাম : দুর্বলরা। বললেন : অনুসারীদের সংখ্যা কি বাড়ছে না কমছে? বললাম : বাড়ছে। বললেন : তাদের মধ্যে কি কেউ তার দ্বীনে প্রবেশ করার পর বিতৃষ্ণ হয়ে পূর্বের ধর্মে ফিরে যায়? বললাম : না। বললেন : তিনি যা বলছেন, তা বলার পূর্বে তোমরা কি তাকে মিথ্যাবদী বলে অভিযুক্ত করতে? বললাম : না। বললেন : সে কি গাদ্দারি করে? বললাম : না, তবে আমরা বর্তমানে তার সঙ্গে শান্তিচুক্তির সময়পর্বে আছি। জানি না, তিনি এ ব্যাপারে কি করেন? আবু সুফয়ান বললেন, আমি এইটুকু বাক্য ছাড়া অন্যকিছু প্রবেশ করাতে পারিনি। হিরাকল বললেন : তোমরা কি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছ। বললাম : হ্যাঁ। বললেন : তার বিরুদ্ধে তোমাদের যুদ্ধ কেমন ছিল? বললাম : জয়-পরাজয়ের মাঝেই আমাদের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। কখনো তিনি জয়ী হন, কখনো আমরা জয়ী হই। বললেন : তিনি তোমাদের কিসের নির্দেশ দেন? বললাম : তিনি বলেন যে, একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করো না। আর তোমাদের পিতারা যা বলে তা বর্জন করো। তিনি আমাদের নামাজ পড়তে বলেন, সত্যবাদিতা, চারিত্রিক নিষ্কলুষতা, আত্মীয়তা-বন্ধন রক্ষা ইত্যাদির নির্দেশ দেন। অতঃপর হিরাকল অনুবাদকে বললেন, তাকে বল- আমি তোমাকে তার বংশ মর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, তুমি উল্লেখ করেছে যে তিনি তোমাদের মধ্যে বংশমর্যাদসম্পন্ন। রাসুলগণ এরূপই হয়ে থাকেন যে তারা নিজ কাওমে মর্যাদাসম্পন্ন বংশে প্রেরিত হয়ে থাকেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি , তিনি যা বলেন, তোমাদের কেউ কি ইতোপূর্বে এরূপ বলেছে? তুমি বলেছ যে, না। যদি তোমাদের মধ্যে ইতোপূর্বে কেউ এরূপ কথা বলে থাকত, তবে বলতাম- লোকটি তার পূর্বের বলা কথারই পুনরাবৃত্তি করছে। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, তার পিতৃপুরুষদের মধ্যে কেউ রাজা ছিলেন কি না? তুমি বলেছ, না। আমি বলব যে, তার পিতৃপুরুষের মধ্যে কেউ রাজা থাকলে মনে করতাম যে তিনি তার পিতার রাজত্ব কামনা করছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, তিনি যা বলছেন, তা বলার পূর্বে তোমরা কি তাকে মিথ্যাবদী বলে অভিযুক্ত করতে? তুমি বলেছ, না। আর আমি এটা জানি যে, মানুষের ওপর মিথ্যা বলা বর্জন করে আল্লাহর ওপর মিথ্যা বলবে, তা হতে পারে না। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, গণ্যমান্য লোকেরা তার অনুসরণ করছে না দুর্বলরা? তুমি বলেছে, দুর্বলরা। এরাই হলেন রাসুলগণের অনুসারী। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি , তারা কি সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে? তুমি বলেছ, বাড়ছে। ঈমানের বিষয়টি এরকমই। তা বেড়ে-বেড়ে এক সময় পূর্ণতা লাভ করে। আমি তোমাকে প্রশ্ন করেছি যে, তাদের মধ্যে কি কেউ তার দ্বীনে প্রবেশ করার পর বিতৃষ্ণ হয়ে পূর্বের ধর্মে ফিরে যায়? তুমি বলেছ, না। ঈমান এরকমই যখন তা অন্তরের প্রফুল্লতার সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে যায়। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি যে তিনি কি বিশ্বাসঘাতকতা করেন? তুমি বলেছ, না। রাসুলগণ এ রকমই হন। তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেন না। আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে, তিনি তোমাদের কিসের নির্দেশ দেন? তুমি বলেছে, ‘তিনি আমাদের নামাজ পড়তে বলেন, সত্যবাদিতা ও চারিত্রিক নিষ্কলুষতা অবলম্বন করতে বলেন।’ তুমি যা বলছ তা যদি সত্য হয়, তাহলে তিনি আমার এ দুপায়ের নিচে যে জায়গা রয়েছে, তারও মালিক হবেন। আমি নিশ্চয়ই জানতাম তিনি প্রকাশ পাবেন। তবে এটা ভাবতাম না যে তিনি তোমাদের মধ্য থেকে প্রকাশ পাবেন। আমি যদি জানতাম যে আমি তার কাছে পৌঁছতে পারব, তা হলে তার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সকল কষ্ট সহ্য করতাম। আর আমি যদি তার নিকটে থাকতাম তবে আমি নিজে তার পা ধুয়ে দিতাম...। [বুখারি, আস-সহিহ (ফাতহুল বারীসহ) ১/২৬-৩১] মূল : ড. মুহাম্মাদ নাঈম ইয়াসিন বাংলা অনুবাদ : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক