ছবি সংগৃহীত

কাউকে অভিশাপ দেওয়া পছন্দ করতেন না নবিজি [সা.]

ফয়জুল আল আমীন
লেখক
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০১৬, ০৪:৪৩
আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬, ০৪:৪৩

আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে, যারা কথায় কথায় মানুষকে, নিজের সন্তানকে, জীব-জন্তু কিংবা যে কোনো কিছুকেই অভিশাপ দেয়। এ আলোচনায় অভিশাপ সম্পর্কে নবিজির [সা.] অভিমত তুলে ধরা হলো। নবিজি [সা.] অভিশাপকারীকে পছন্দ করতেন না। সামুরাহ ইবনে জুন্দুব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন,‘তোমরা একে অন্যের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ, তাঁর গজব এবং জাহান্নামের আগুন দ্বারা অভিসম্পাত করো না।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি) আবু দারদা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, ‘অভিসম্পাত-কারীরা কিয়ামতের দিনে না সুপারিশ-কারী হবে, আর না সাক্ষ্য-দাতা।’ (সহিহ বুখারী ও মুসলিম) একই সূত্রে বর্ণিত, নবিজি [সা.] বলেছেন,‘যখন কোনো বান্দা কোনো জিনিসকে অভিসম্পাত করে, তখন সেই অভিশাপ আকাশের দিকে উঠে যায়। কিন্তু তার সামনে আকাশের দ্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে পৃথিবীর দিকে নেমে আসে। তখনও তার সামনে (পৃথিবীর) দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাজেই ডানে-বামে (এদিক-ওদিক) ফিরতে থাকে। পরিশেষে যখন তা কোনো যথার্থ স্থান পায় না, তখন বস্তু বা ব্যক্তির প্রতি ফিরে যায়; যদি সে এর (অভিশাপের) উপযুক্ত হয়, তাহলে (তাকে অভিশাপ লেগে যায়)। নচেৎ তা অভিশাপকারীর প্রতি ফিরে আসে।’ (আবু দাউদ) আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, ‘কোনো মহা সত্যবাদীর জন্য অভিসম্পাতকারী হওয়া সঙ্গত নয়।’ (সহিহ বুখারী ও মুসলিম) ইসলাম কখনো কারো বিরুদ্ধে অভিশাপ দেওয়া বা বদ-দুআ করাকে সমর্থন করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু, এমন কি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেওয়াও সমর্থন করে না। আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,‘আর তোমরা নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না।’ (সুরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৯৫) অতএব প্রতিটি মাকে ভেবে দেখতে হবে, আমার রাগের মাথায় উচ্চারণ করা বাক্য যদি সত্যে পরিণত তাহলে কেমন লাগবে? আমি কি তা সহ্য করতে পারব? এ জন্য রাগের মাথায়ও কখনো সন্তানের অমঙ্গল কামনা করা যাবে না। আমাদের সবারই উচিত নিজের, নিজের সন্তান ও সম্পদের বিরুদ্ধে বদ দুআ করা থেকে সংযত হওয়া। রাগের সময় সংযম ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেওয়া। আল্লাহ আমাদের সকলকে অভিশাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সংযমী হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন। ফয়জুল আল আমীন [ফয়জুল আল আমীন- ধ্রুপদী এক লেখক। পুরো নাম- সৈয়দ মুহম্মদ ফয়জুল আল আমীন। সৈয়দ শিশির নামে যিনি সমধিক পরিচিত। প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, সাহিত্য সমালোচনা, গল্প, গবেষণা, কবিতা, ছড়াসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় যার সুদীপ্ত বিচরণ। দেশের প্রথম শ্রেণির প্রায় সব দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও ছোটকাগজে নিয়মিত লিখছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে তাঁর গুরু হলেন বাবা। আর সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রকৃতি। ইসলাম ধর্মের নানা দিক ও বিষয় নিয়ে সুদীর্ঘ গবেষণা করেছেন ফয়জুল আল আমীন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রিপোর্টার, ফিচার লেখক, সাব-এডিটর, সহযোগী সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। একাধিক প্রকাশনা সংস্থায় সিনিয়র লেখক, সম্পাদক ও আরঅ্যা-ডি’র প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বর্তমানে পাঠকপ্রিয় একটি সাপ্তাহিকে চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।]