ছবি সংগৃহীত

এসেনশিয়াল অয়েলের জানা-অজানা দিক

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৪, ০৩:৪৭
আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৪, ০৩:৪৭

(প্রিয়.কম) সুন্দর গন্ধ যেকোনো পরিবেশকে আমূল পাল্টে দেয়। ফুলদানীর ফুল, এয়ার ফ্রেশনার, পারফিউমের সৌরভ বা লিপস্টিকের ফ্লেভার - সবই কিন্তু মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। এসেনশিয়াল অয়েলের গুরুত্বটা ঠিক এখানেই। এসেনশিয়াল অয়েল হলো সুগন্ধী ভেষজ তেল। গাছের বিভিন্ন অংশ যেমন ফুল, পাতা, শিকড়ের নির্যাস ইত্যাদি থেকে এসেনশিয়াল অয়েল তৈরি করা হয়। গাছের নির্যাস থেকে তৈরি হওয়ায় এই তেল যেমন সুগন্ধযুক্ত হয়, তেমনই ঔষধি গুণসম্পন্ন হয়। সুগন্ধীযুক্ত এই তেল মানসিক শ্রান্তি দূর করে ও ক্লান্তিভাব কাটাতে সাহায্য করে। ভালো লাগার অনুভূতি ছড়িয়ে দেয় মনে ও সারা শরীরে। এই কারণে মাসাজ থেরাপি বা স্পা-এ বিশেষভাবে এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

কোন তেলে কী উপকার

১) রোজমেরি অয়েল মন শান্ত করে ও শরীর-মনে প্রশান্তি ছড়িয়ে দেয়। ২) পেপারমিন্ট অয়েল হজমে সাহায্য করে ও বমিবমি ভাব দূর করে। ৩) ইউক্যালিপটাস ও উইন্টারগ্রিন অয়েল মাংসপেশির ব্যথা দূর করে ও সর্দিভাব কমায়। ৪) ল্যাভেন্ডার অয়েল মানসিক শান্তি বজায় রাখে ও ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। ৫) জেসমিন অয়েল বিষাদগ্রস্ত মনে আনে প্রফুল্লতা। ৬) লেমন, অরেঞ্জ ও অন্যান্য সাইট্রাস অয়েল মন ভালো রাখে ও মেজাজ ফুরফুরে করে। ৭) সিনামন অয়েল ক্লান্তি দূর করতে এবং পেশির শিথিলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ৮) রোজ অয়েল রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখে, ত্বকের রং উজ্জ্বল করে।

কোন ত্বকে কী তেল

শুষ্ক ত্বক : শুষ্ক ত্বকের উপযোগী তেল হলো জেসমিন, রোজ, ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল। তৈলাক্ত ত্বক : তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপযোগী হলো চন্দন, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, মিন্ট ইত্যাদি এসেনশিয়াল অয়েল। মিশ্র ত্বক : রোজ উড বা রোজ জেরানিয়াম এসেনশিয়াল অয়েল মিশ্র ত্বকের জন্য খুবই ভালো। তবে সব ধরনের ত্বকের জন্য এবং সব ঋতুর জন্য আদর্শ হলো ল্যাভেন্ডার অয়েল।

ঋতুভেদে তেলের ব্যবহার

শীত, গরম ইত্যাদি ঋতু অনুযায়ী এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহারে রকমফের দেখা যায়। শীতে যেহেতু ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা বেশি এবং আবহাওয়াও বেশ শুষ্ক থাকে, তাই এই সময়ে উষ্ণ ধরনের এসেনশিয়াল অয়েলই উপযুক্ত। যেমন ক্লোভ বাড, জিঞ্জার, রোজমেরি, সিনামন, নাগমেট ইত্যাদি। গরমের সময় হালকা এবং শীতল ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল উপযুক্ত। যেমন বেসিল, মিন্ট, ল্যাভেন্ডার, লাইম ইত্যাদি। হালকা ও সুগন্ধীযুক্ত তেল আপনাকে গরমেও রাখবে সতেজ। সব সময়ের জন্য সাইট্রাস তেল বেশ উপকারী।

খেয়াল রাখুন

এসেনশিয়াল অয়েল ত্বক ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনেক উপকারী হলেও কিছু ব্যাপার খেয়াল রাখুন - ১) অভিজ্ঞ থেরাপিস্টের পরামর্শ নিন। আপনার ত্বকের ধরন ও শরীরের ধরন অনুযায়ী কোন এসেনশিয়াল অয়েল আপনার জন্য উপযুক্ত সে ব্যাপারে জেনে নিন। বিশেষ কোনো অ্যালার্জি থাকলে তা অবশ্যই থেরাপিস্টকে জানাবেন। ২) প্রথমে সামান্য এসেনশিয়াল অয়েল ত্বকের ওপর লাগিয়ে রাখুন। কয়েক ঘণ্টা পরও যদি কোনো দানাদানা বা ইরিটেশন না হয় তাহলে সেটা ব্যবহার করতে পারেন। ৩) এমন অয়েলই ব্যবহার করুন যার গন্ধে আপনি স্বচ্ছন্দ। ভালো লাগে না অথচ উপকারী বলে নতুন কিছু ব্যবহার করতে যাবেন না। ৪) টক্সিক এসেনশিয়াল অয়েল এড়িয়ে চলুন। ৫) তাপ এবং আলোতে এসেনশিয়াল অয়েলের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। গাঢ় রঙের কাচের বোতলে এসেনশিয়াল অয়েল ভালো থাকে। তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও অ্যারোমাওয়েব ডটকম