
ছবি সংগৃহীত
আল-হিদায়া : তায়াম্মুম অধ্যায় : তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এবং কি কি
আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪, ০৫:২০
তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এবং কি কি তায়াম্মুমে নিয়্যত ফরজ। ইমাম যুফার (র.)বলেন, ফরজ নয়। কেননা, তায়াম্মুম অজুর স্থলবর্তী। সুতরাং গুণের দিক থেকে তার বিপরীত হতে পারে না। আমাদের দলীল এই যে, (আভিধানিক ভাবে) তায়াম্মুম শব্দ দ্বারা ইচ্ছা বুঝায়। সুতরাং ইচ্ছা (নিয়্যত) করা ছাড়া তা সঠিক হবে না। কিংবা মাটিকে বিশেষ অবস্থায় পবিত্রকারী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আর পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পানি স্বকীয়ভাবেই পবিত্রকারী। তবে যদি তাহারাতের কিংবা সালাতের বৈধ হওয়ার নিয়্যত করে তাহলে তা যথেষ্ট। হাদাছের বা জানাবাতের তায়াম্মুমের (আলাদা) নিয়্যত করা শর্ত নয়। এটিই বিশুদ্ধ মাযহাব। কোন খৃষ্টান (বিধর্মী) যদি ইসলামের গ্রহণের নিয়্যতে তায়াম্মুম করে, তারপর ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে আবূ হানীফা ও মুহাম্মদ (র.) এর মতে সে তায়াম্মুকারী গণ্য হবে না। আর আবূ ইউসূফ (র.) বলেন, সে তায়াম্মুকারী গণ্য হবে। কেননা সে একটি উদ্দিষ্ট ইবাদতের নিয়্যত করেছে। পক্ষান্তরে মসজিদে প্রবেশের এবং কুরআন শরীফ স্পর্শ করার জন্য তায়াম্মুম করার বিষয়টি এর বিপরীত। কেননা এটা উদ্দিষ্ট ইবাদত নয়। ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মুহাম্মদ (র.) এর দলীল এই যে, তাহারাত ছাড়া বিশুদ্ধ হয় না এমন উদ্দিষ্ট ইবাদতের নিয়্যত করার অবস্থা ছাড়া অন্য কোন ক্ষেত্রে মাটিকে পবিত্রকারী সাব্যস্ত করা হয়নি। আর ইসলাম হলো এমন উদ্দিষ্ট ইবাদত যা তাহারাত ছাড়া বিশুদ্ধ হয়।তিলাওয়াতের সিজদার বিষয়টি এর বিপরীত। কেননা তা এমন উদ্দিষ্ট ইবাদত, যা তাহারাত ছাড়া বিশুদ্ধ হয় না। আর যদি সে ইসলাম গ্রহণের নিয়্যত না করেই অজু করে তারপর ইসলাম গ্রহণ করে, তাহলে সে অজুকারী গণ্য হবে। নিয়্যত শর্ত হওয়ার ভিত্তিতে ইমাম শাফিঈ (র.) ভিন্নমত পোষণ করেন। কোন মুসলমান যদি তায়াম্মুম করে তারপর আল্লাহ্ না করুন মুরতাদ হয়ে যায় তার পর পুনঃইসলাম গ্রহণ করে, তাহলে তার পূর্ব তায়াম্মুম অক্ষুণ্ন থাকবে। ইমাম যুফার (র.) বলেন, তার তায়াম্মুম বাতিল হয়ে যাবে। কেননা কুফর তায়াম্মুমের বিপরীতধর্মী। সুতরাং এতে প্রথম অবস্থা ও শেষ অবস্থা উভয়ই সমান হবে। যেমন বিবাহের ক্ষেত্রে হারাম হওয়ার ব্যাপার। আমাদের দলীল এই যে, (তায়াম্মুম তো আর স্ব-সত্তায় বিদ্যমান থাকে না যাকে কুফর এসে দূর করে দিবে, বরং) তায়াম্মুমের পর ব্যক্তির মাঝে পবিত্র হওয়ার গুণই বিদ্যমান থাকে।সুতরাং তার উপর কুফর আরোপিত হলে তা পবিত্রতার বিপরীতধর্মী নয়। যেমন, অজুর উপর যদি কুফর আরোপিত হয়। উল্লেখ্য যে, কাফিরের নিয়্যত গ্রহণযোগ্য না হওয়ার কারণে প্রাথমিক অবস্থায় তার তায়াম্মুম দুরস্ত হয় না। মূল লেখক : বুরহান উদ্দীন আবুল হাসান আলী ইবন আবু বকর [রহ.] বাংলা অনুবাদ : মাওলানা আবু তাহের মেছবাহ গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান কৃতজ্ঞতায় : ইসলামিক ফাউণ্ডেশন