ছবি সংগৃহীত

অরূপ রাহীর একগুচ্ছ কবিতা

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪, ০৮:৫৩
আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪, ০৮:৫৩

নশ্বরতা - ৩

___________________________________ আয় আয় নশ্বরতা। আয় কাছে। আয় বুকে। হাড়ে, মজ্জায়। ধ্বংসের কাছে থাকা নগরের বিষ্টির পানি হয়ে, রিকশা হয়ে আয়। পোশাকশিল্পে কত ভর্তুকি দেয়া হয় তার হিসাবের খাতা থেকে ঝড়ে পড়ে উড়ে উড়ে আয়। বালকের মুত্রের মত আয়। রোজিনার রজস্রাবে উর্বরতার মাঠে আয়। আয় বুকে অনিত্য সুখে। আয় ভীরু স্বচ্ছলতা। ব্যাঙ্কের তারল্য সঙ্কট। আয় কোনও ইতিহাসগ্রাম যার খতিয়ানে মরিয়ম নাই। আছে তার বনরা সংসার। কুশাই মন্ডলের ছেলে লাংগল রাখল হেলায়ে, অই গোয়ালের খড়ি মাচা আয়। নাথ যোগিনীর স্মৃতি গোরক্ষ নাথের বুকে আয়। ___________________________________

অদ্ভুত শুক্রবার

___________________________________ যেন কেয়ামত হবে একটু পর। যেন ভেসে উঠবে পরমের মুখ আকাশে। আমি বাজারের দিকে যাব, রিকশা বাজে টুংটাং, মুরগিআলা, কাঁথাওয়ালা , ঝাড়ুওলা হাঁক দিতেছে। বিক্রি হবে। জীবনের সব। ___________________________________

সকাল

___________________________________ ১। এতটা সহজ নয় লিখে যাওয়া বেদনার গান যে তোমার কী কী বলতে ইচ্ছা কিন্তু বলতে পারতেছো না, সে তোমার হাত ধরে ছিল কি-না আর পরবর্তী লাইনের কথা গবেষণা করে লিখবে যারা তারা খাবারের খোঁজে গেছে জংগলের দিকে ২। তাকিন্তু ভালো ছিল যদি এই বেদনার এই এই বিষণ্ণতা আপ্নে যদি জমায়ে রাখতে পারেন বর্ষাকালে বিষ্টী হিসাবে রোপা-আমনের মত বড় বড় ধান গাছ ৩। না না সে রকম কিছু না আপ্নে যা ভাবতেছেন তা না আমি বলতেছিলাম মানুষের আকাশ্ময়তা যে কীরকম ঠিক কোনও বিন্দু নয়, আকাশের মত মানুষের মনের মধ্যে নানান কিছু জন্ম নেয় ক্ষিতি অপঃ তেজ গুণে বোমারু বিমান, ড্রোন, কালো না না সাদা সাদা মেঘ ঘাস পাতা, জঙ্গলের মত ধূলাবালি, সকালের বিষণ্ণ খরগোশ ৪। [ { } ] ___________________________________

ভোর

___________________________________ ভোরের মতন কোনও ভোর হয় না কি, জীবনের? গোষ্ঠে চলে হরি মুরারী, হাসপাতালের পাশে চা দোকানে ভীড় লেগে যায়? লাশ নিয়া নদীপারে পৌঁছে দিয়ে আসে ঢেউগুলা? আমাদের রাস্তাগুলা পীচঢাকা বলে লাফারুর আনাগোনা কম। তা না হলে আসত হরিণ। সংসদে বসে তারা রামপাল বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট কণ্ঠ ভোটে পাশ করে দিত। দিত কি না? তুমি কিন্তু জানো, কিন্তু বলতেছো না। না বল। আমি আজ ভোরেকার বেলা চা খামু গো হরি মুরারী, গ্রীন রোড পার হয়া, পাঁচনাম্বারে। ফজর ঘুমায়ে পার করলা যে, পার হবা কেম্নে, বল? এই নেও, চিনি কম, লাল চা। খাও। ___________________________________

কফি

___________________________________ ১। আমি কবিতা না লেইখা কফি খাইতেছি এই সকালে, যে, নশ্বরতা কত যে মজার, রাধে-শ্যাম! না পাওয়ার বেদনার মত, পাইয়া হারানোর মত, আর কত পাইয়া নিয়া মজা, রাধে-শ্যাম! বিরহ- বিভোর রাত, আন-বাড়ি-ভোর রাত, স্মারটনেসে ভাইস্যা যাওয়া চিন-চিন ব্যাথা , রাধে-শ্যাম! তা তুমি তো বলবাই , মজা নিয়া মজাক্কারি কর, রাহী, তুমি বটে ফাজিল চিড়িয়া আমি কিন্তু তোমারেই যুগলে-মুগল নিয়া চুড়ান্ত বিলা-টিলা হয়া, কফির দাওয়াত দিছি, রাধে-শ্যাম! তুমি বলবা, ফাইজলামি রাখো, খালি পেটে কফি কেন খাও? আমি কই, তুচ্ছ অতি সেকারণে নাই ক্ষতি, নশ্বরতা লভি, রাধে-শ্যাম! ছন্দ-ফন্দ না বুঝিয়া, গুরু-চণ্ডালি নিয়া, শাক্ত মতে বাগেন্দ্রিয়ে কালিমা কালিমা পড়তেছি, রাধে-শ্যাম! আমি কবিতা না লেইখ্যা, এই-এই-এই এফিমেরালিটি নিয়া মজা মারতেছি, রাধে-শ্যাম! তারপরে ধর এই যে জগতে যে যন্ত্রণা আছে, তন্ত্রণা আছে, না খাওয়ার কষ্টও যে আছে, চুতিয়ারা এইগুলা দেইখা, আমার মতই, কফি খাইতেছে রাধে-শ্যাম! লিবারাল আছে, ইয়ো-ইয়ো-ইয়োগারা আছে, ওরাও কফির মজা মারতেছে, আমারি মতন, রাধে-শ্যাম! আমি কিন্তু কিছু কই নাই অগো, রাধে-শ্যাম! আমি একটু বোকাচোদা আছি, যে, ঘৃণা-লজ্জা-ভয়ে আছি, যে, কবিতাটা ছাড়তেছি মাত্র, রাধে-শ্যাম! ২। কোনও একদিন আমি চরাচরে ট্রাফিক মাস্টার হয়ে যাব তারাদের মাঝে তুমি কিন্তু ভেঁপু বাজায়ো না নীরবতা জ্বলে উঠে দেখাইবে পথ। কোনও একদিন আমি চুপ করে নাগারজুন কফিশপে অপেক্ষায় থাকব তোমার চরাচরে ছেড়ে দিয়ে ট্রাফিকের কাজ। তারা-নক্ষত্রের সাথে এত কেন ছোটাছুটি, বল? ক্লিশে কবিতার ফর্ম কফিতে মিশায় কেডা, বল? ___________________________________

রূপবান

___________________________________ চান মিয়া হাউজিঙ্গে বন্ধুর বাড়ি যামু না যামুনা আমি দিয়া দিছি আড়ি আয় যদি চাস মোরে রমনার মূলে দেখা হইছিল যেইখানে পথ ভুলে জিন্স প্যান্ট পরছিলি, টাইট সে জামা আমারে পাগল করা কমু কিরে মামা তোর লগে যামু কিরে গিয়াই তো গেছি দেহডা দূরের খালি মন দিয়া দিছি আয় যদি শুনতাছস আমার এই গান তরে যদি নাই পাই চিরিক পরান ।। তুই আমারে কইছিলি আইসেন ভাই এলাকায় একনামে ডাকেরে সবাই মোরে] একনামে চিনে। আপ্নে কবে আইবেন আমি ] কইতে তো পারি নাই আমারে নিবেন? আমি] যাইতেই চাই ভাই যাইতেই চাই দেহমন তোর বুকে ঢালতেই চাই । চাইলেই পায় নারে দুনিয়ার ভাব সহজ প্রেমের এবে অতীব অভাব চোখ রাঙ্গাইয়া আসে রাষ্ট্র-সমাজ বলে একি অনাচার এসব কী কাজ? সোনাভানে রুপবানে এসব আচার ‘সুশীল সমাজ’ তারে ডাকে ব্যভিচার কিন্তু আমি নিরুপায় অরূপের টান সহজে মজিলে কারো বাঁচেনা পরাণ মরিয়াই যাই এবে মরিয়াই যাই মরণে আগে মরে সহজ সাধাই জীবনের পরমের স্বাদ আস্বাদন রূপ-স্বরূপের খেলা হবে সমাপন। রুপবান গুণ দিয়া টানলেন মোরে আঁখি না ফিরে রে মোর আঁখি না ফিরে আঁখি না ফিরে রে মোর না ফিরে রে মন অরূপ রাহী’র কথা কর আকিঞ্চন স্বরূপ রূপেতে মন পাগলের প্রায় অরূপ বাখান দিয়া পাগল বানায় এমন সহজ কথা না কহিও আর প্রেমিক সহজ যেই, সেই গুনাগার।।