(প্রিয়.কম) কেউ যদি আপনাকে বলে ‘বাংলা সিনেমার হিরো’র মতো লাগছে। কেমন অনুভূতি হবে আপনার? ভালো লাগার বদলে নিশ্চয়ই আপনার মনে হবে তিনি আপনাকে ব্যাঙ্গ করছেন। কেননা হলিউড বলিউডের তুলনায় সাম্প্রতিক বাংলা সিনেমায় তেমন নায়ক কই? যাকে দেখে আমাদের মনে হবে নায়করাজ কিংবা সালমান শাহর উত্তরসুরী? নায়িকা অনেক এলেও নায়ক তেমন তৈরী করতে পারছেন কই পরিচালকরা? ছোটপর্দার অনেক জনপ্রিয়মুখ নায়ক হতে এসে হতাশায় মিলিয়ে যাচ্ছেন এমন অনেক দৃষ্টান্ত যখন আমাদের সামনে ঠিক তখন একজন নায়ক বেরিয়ে এলেন। যিনি অল্প ক’দিনেই নিজেকে বড়পর্দায় ব্যাস্ত করে তুলেছেন। প্রিয়.কমের পক্ষ থেকে কথা হল তার সঙ্গে-
তিনি আনিসুর রহমান মিলন। এফডিসি ভিত্তিক বাণিজ্যিক সিনেমায় দেহরক্ষী চলচ্চিত্রে চিত্রনায়িকা ববির বিপরীতে তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত। বড়পর্দায় দর্শক গ্রহন করেছেন মিলনকে। এর কারণ কি? জানতে চান? মিলন নিজেই দিচ্ছেন এর উত্তর। ‘অভিনয়দক্ষতা। সাম্প্রতিক বাংলা সিনেমায় একজন নায়কও নেই যিনি যে কোন ধরণের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে অভিনয়সক্ষম।

অভিনয়ে নিজেকে কতটুকু ঢেলে দিতে পেরেছেন? উত্তরে একটু চিন্তা করে বলেন, কিছুই এখনো দিতে পারিনি, অনেক পথ এখনো বাকি আছে। এত বছর অভিনয় করতে পারাটা যদিও অনেক বড় বিষয়। তাই হতাশা আসেনি। আমার কাছে আত্মবিশ্বাসের বিষয় হচ্ছে এখনো আমি অভিনয় করে যাচ্ছি। জীবনের শেষ মুহুর্তটাকেও সঙ্গী করে রেখেছি অভিনয়ের জন্য। এখানে হাজার হাজার চরিত্র হয়তো আমার অপেক্ষায় আছে। সুতরাং ঐ চরিত্র গুলোকে কিভাবে সামনে নিয়ে আসবো সেটাকেই বড় করে দেখছি।’
প্রতিটি চরিত্রকে সাবলীল ভাবে রুপায়ন করে যেতে পারাটাকেই অভিনয় শিল্পীর যোগ্যতা বলে মনে করেন এ অভিনেতা। বর্তমান চলচ্চিত্র জগতে যারা অভিনয় করছেন তারা কেবল মাত্র হিরো, তাদের মধ্যে কোন বৈচিত্র নেই। তার মতে, বর্তমানে অভিনয়দক্ষ একটা নায়কও নেই। যার মাধ্যমে আরো দশটা চরিত্র বেরিয়ে আসবে। অনেক হিরোই আছে কিন্তু ঐ হিরোটা নেই যে বিভিন্ন চরিত্র ফুটিয়ে তুলত সক্ষম হবে।

সেই হিরোটাই হতে চান মিলন। রোমান্টিক, অ্যাকশন থ্রিলার সব চরিত্রতেই নিজেকে ধরে রাখতে চান তিনি। তবে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করার পরিকল্পনা আপাতত নেই তার। আর নায়িকা পছন্দ নিয়ে কোন দ্বিমত নেই তার। ববি, মাহিয়া মাহি, ও পরীমনি সবার সাথেই কাজটাকে ভাগ করে নিয়েছেন নিজের মত করে। প্রত্যেক নায়িকার আলাদা আলাদা অভিনয় গুন আছে বলে মনে করেন তিনি।
২৭শে ফেব্রুয়ারী মুক্তি পাচ্ছে তার চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ । পরীমনির বিপরীতে দেখা যাবে মিলনকে। এ ছবির চরিত্র নিয়ে মিলন বললেন, একটা ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে চরিত্রটি এগিয়ে যাবে। প্রমান করে দিবে গল্পে কে নির্দোষ? খুব রোমান্টিক কাহিনীর ছবি এটি।’
এই মুহূর্তে সিনেমাটির দর্শকপ্রিয়তা কতখানি হবে বা হল গুলোতে দর্শকের ভীড় নিয়ে খুব বেশি ভাবছেন না তিনি। কারণ হিসেবে জানালেন, শুধুমাত্র বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং বিশ্বকাপ ঝড়ের কারণ।

মিলন কি বিশ্বকাপ খেলা দেখছেন? উত্তরে জানালেন, বিশ্বকাপ খেলা খুব বেশী দেখা হচ্ছে না কাজের ব্যস্ততার কারনে। তাছাড়া খুব বেশী ক্রীড়াপ্রেমীও নন মিলন। অন্য সবার মত টেন্ডুলকার আর জয়সুরিয়ার খেলা পছন্দ করেন। তাই মনে প্রাণে নিজের দেশের টাইগারদের সাপোর্ট করার পাশাপাশি ভারত এবং শ্রীলঙ্কার প্রতিও তার সমর্থন আছে।
সম্প্রতি আরো তিনটি চলচ্চিত্রে যুক্ত হয়েছেন মিলন। ছবি তিনটি হলো অনন্য মামুনের ‘ভালোবাসার গল্প’, সায়মন তারিকের ‘ক্রাইম রোড’ ও রশিদ পলাশের ‘নাইওর’। ছবিগুলোতে যথাক্রমে তার বিপরীতে রয়েছেন আফরিন, শায়লা সাবি ও সাদিয়া।

এরই মধ্যে চলচ্চিত্রে ববি, মৌসুমী, মম, আইরিন সুলতানা, মৌসুমী হামিদ, বিপাশা কবিরসহ অনেকের বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে এত নায়িকার বিপরীতে কাজ করার পরও মিলনের মনে কোথায় যেন কমতি থেকেই গেছে। সম্প্রতি সেই কমতিকে ঘিরে নিজের একটি ইচ্ছার কথা জানালেন তিনি। আর তার সেই ইচ্ছাটা হলো চিত্রনায়িকা পপিকে নিজের নায়িকা হিসেবে চান তিনি।
মিলনের অভিমত মনের মতো নায়িকাও চাই, চরিত্রও চাই। সবকিছু মিলিয়ে যদি এক কথায় জানতে চাওয়া হয় তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা? মিলনের উত্তর- অনেক রূপের এক নায়ক হতে চাই। যা আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রিতে বিরল।
প্রতিবেদক: মুষান্না জাহান