লড়াকু অ্যালেক্স ক্যারি
অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা তখন বেশ নাজুক। জফরা আর্চার ও ক্রিস ওকসের তোপে ১৪ রানেই নেই ৩ উইকেট। এমন কঠিন মুহূর্তে উইকেটে আসেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি। কিন্তু সেট হওয়ার আগেই ইনিংসের অষ্টম ওভারে দুর্দান্ত এক বাউন্সারে তার হেলমেট উড়িয়ে দেন আর্চার। আঘাত লাগে থুঁতনিতে। গড়িয়ে পড়তে শুরু করে রক্ত। ফিজিও এসে থুঁতনিতে ব্যান্ডেজ বাঁধেন, বন্ধ হয় রক্ত পড়া। ক্যারির এই অবস্থা মনে করিয়ে দেয় ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজকে। ওই সিরিজে ইংলিশ পেসার স্টিভ হার্মিসনের এক বাউন্সারে গাল ফেটে রক্ত বের হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের। তারপর ব্যান্ডেজ নিয়ে খেললেও সেই ম্যাচে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি পন্টিং। আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে। তবে গতকাল ক্যারি অনেকক্ষণ টিকে ছিলেন। এজবাস্টনে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ব্যান্ডেজ নিয়েই ব্যাট হাতে লড়াই করে গেছেন। চতুর্থ উইকেটে স্টিভ স্মিথের সঙ্গে ১০৩ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচান তিনি। এ ম্যাচে নামার আগে ক্যারির স্ট্রাইকরেট ছিল ১১০’র উপরে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরিস্থিতি বিচার করে ব্যাটিং করেছেন। আর্চার-উডদের বাউন্ডার সামলে প্রথমে সেট হয়ে নেন। এরপর ধীরে ধীরে স্ট্রাইক রোটেট করে খেলতে থাকেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফিফটির দেখা পাননি। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে আদিল রশিদের বলে বদলি ফিল্ডার জেমস ভিন্সের হাতে ধরা পড়েন ক্যারি। ৭০ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি মেরেছেন ৪টি।চাপেই বোধ হয় সেরাটা খেললেন ক্যারি। ট্রেন্ট ব্রিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচেও শুরুতে উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া। ৭ নম্বরে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন ক্যারি, অজিদের স্কোর তখন ৭৯/৫। সেদিন ৪৫ রান করেছিলেন। সপ্তম উইকেটে স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে ক্যারি ৬৮ রানের জুটি না গড়লে হয়ত ম্যাচটা হেরে যেত অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রাউন্ড রবিন লীগের শেষ ম্যাচে সেরা ইনিংসটি খেলেন ২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে আসে ৮৫ রান। টুর্নামেন্টে ১০ ম্যাচে মোট ৩৭৫ রান করেছেন ক্যারি। পারফরম্যান্স বিচারে চলতি আসরে সেরা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান তিনি। তার পরেই বাংলাদেশের মুশফিকুর রহীম। ৮ ম্যাচে এক সেঞ্চুরি ও দুই হাফসেঞ্চুরিতে ৩৬৭ রান সংগ্রহ করেন মুশফিক।
- ট্যাগ:
- অন্যান্য সংবাদ
- লড়াকু