পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ হচ্ছে না
পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ হচ্ছে না। রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রস্তাবে অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। আজ বুধবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, রাজ্যের নাম ‘পশ্চিমবঙ্গ’ থেকে পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদন করছে না । কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব বার বার খারিজের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রাজ্য সরকারের তরফে ফের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। কয়েকদিন আগেই রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবটি দীর্ঘদিন ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় রাজ্যের নাম বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দিতে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এর আগে একাধিকবার রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব বিধানসভায় পাস হয়েছে। বামফ্রন্ট আমলে প্রথম রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে ২০১৬ সালের অক্টোবরে রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি ৩টি ভাষায় যথাক্রমে বঙ্গ, বেঙ্গল ও বঙ্গাল করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল, পৃথক পৃথক নাম নয়, ৩টি ভাষাতেই এক নাম হতে হবে । এরপরই রাজ্য সরকার রাজ্যের নাম ৩ ভাষাতেই ‘বাংলা’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিধানসভায় সেই প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে গৃহীতও হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সেই পরিবর্তন কার্যকর করার জন্য তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এতদিন পরে জানানো হয়েছে, নাম পরিবর্তনে সায় নেই ভারত সরকারের। এই নিয়ে ৩ বার রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকার খারিজ করেছে। রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব খারিজ করার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেশী বাংলাদেশের নামের কথা উল্লেখ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে বাংলাদেশের নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকার কারণে। এর পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তি দিয়েছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশ-এর নামে ‘বাংলা’ রয়েছে। ফলে তা সমস্যা তৈরি করতে পারে। যদিও ভারত সরকারের এই যুক্তি মানে নি রাজ্য সরকার। পাঞ্জাবের উদাহরণ তুলে ধরে পাল্টা সওয়াল করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের যুক্তি, পাকিস্তানেও ‘পাঞ্জাব’ নামে একটি প্রদেশ রয়েছে। আবার এদিকে ভারতেও ‘পাঞ্জাব’ নামে রাজ্য রয়েছে। তাতে যদি কোনও সমস্যা না হয়ে থাকে, তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অযৌক্তিক। কারণ প্রতিবেশি দেশের সম্পূর্ণ নাম বাংলাদেশ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এর আগে অবশ্য নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দীর্ঘদিন আটকে রাখাকে রাজ্যের মানুষের প্রতি বঞ্চনা বলে অভিযোগ করেছিলেন।
- ট্যাগ:
- আন্তর্জাতিক
- পশ্চিমবঙ্গের ভারত
- ভারত