স্বামী দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ মাকতুমকে ফেলে পালিয়েছেন তার স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনতে হুসেইন। কিন্তু কেন? এ প্রশ্নের সুস্পষ্ট কোনো উত্তর মিলছে না। কয়েকদিন ধরেই বিষয়টি বিশ্ব মিডিয়ায় ঘুরছে। একজন শাসকের স্ত্রী তার স্বামীকে ফেলে পালিয়েছেন এটি মিডিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পাশাপাশি প্রশ্নটি বড় হয়ে উঠেছে প্রিন্সেস হায়া কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন? কোনো কোনো মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, তিনি নিজের জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন। তার মনে হয়েছে তাকে অপহরণ করা হতে পারে। কারণ, তিনি শাসক শেখ মোহাম্মদের এক মেয়ে প্রিন্সেস লতিফা সম্পর্কে অনেক তথ্য জেনে ফেলেছিলেন। লতিফাকে দুবাইয়ে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেখানে লতিফার সঙ্গে কি আচরণ করা হচ্ছে এসব বিষয়ে সত্য কিছু বিষয় তিনি জেনে যান। ফলে তার ওপর পারিবারিক চাপ আসতে থাকে। এ জন্য জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। প্রিন্সেস হায়া বলছেন, জীবনের ভয়েই স্বামীকে ছেড়ে দুবাই থেকে পালিয়েছেন। ৬৯ বছর বয়সী শেখ মোহাম্মদ একজন বিলিয়নিয়ার। ইন্সটাগ্রামে তিনি কয়েকটি কবিতা পোস্ট করেছেন। তাতে একজন নারীকে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য দায়ী করেছেন। নিজের স্ত্রীর উদ্দেশে লেখা ওই কবিতা। উল্লেখ্য, প্রিন্সেস হায়া জর্ডান বংশোদ্ভূত ও বৃটেনে লেখাপড়া করেছেন। তিনি জর্ডানের প্রয়াত বাদশার মেয়ে ও বর্তমান বাদশার বোন। ৪৫ বছর বয়সী প্রিন্সেস হায়া ২০০৪ সালে শেখ মোহাম্মদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে তিনি শেখ মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী নন। তিনি ছিলেন তার ষষ্ঠ ও কনিষ্ঠ স্ত্রী। বিভিন্ন স্ত্রীর ঘরে দুবাইয়ের এই শাসকের রয়েছে ২৩টি সন্তান। প্রিন্সেস হায়া প্রথমে জার্মানি গিয়েছিলেন রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে। এখন তিনি বাস করছেন লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেনসের একটি টাউন হাউজে, যার মূল্য প্রায় ১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তিনি এখন আদালতে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু কেন তিনি দুবাইয়ের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে পালিয়েছেন? আবার তিনি এখন জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন? বিবিসি লিখেছে, তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে যে প্রিন্সেস হায়া সম্প্রতি তার স্বামীর এক কন্যা শেখ লতিফার দুবাই থেকে পালিয়ে আবার রহস্যজনক ফিরে আসার পেছনে কিছু বিষয় জেনে যান। শেখ লতিফা এক ফরাসি নাগরিকের সহায়তায় সাগর পথে পালিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতীয় উপকূলে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি তাদের বাধা দেয় ও পরে দুবাইতে ফিরিয়ে নেয়। ওই ঘটনায় দুবাইয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রিন্সেস হায়া তখন আইরিশ প্রেসিডেন্ট ম্যারি রবিনসনের সাথে কাজ করেছিলেন।দুবাই কর্তৃপক্ষ বলছে যে, শেখ লতিফা এখন দুবাইতে নিরাপদে আছেন। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে তাকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর প্রিন্সেস হায়া সত্যি কিছু বিষয় সম্পর্কে জানতে পারেন এবং এ নিয়ে তার স্বামীর পরিবার থেকে চাপ আসতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন। একটি সূত্র জানায়, তিনিও অপহরণের শিকার হতে পারেন বলে এখন আশঙ্কা করছেন। এ বিষয়ে লন্ডনে সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাস কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তারা বিষয়টিকে একজনের ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।প্রিন্সেস হায়া অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন এবং এখন তিনি যুক্তরাজ্যেই বসবাস করতে চান। তবে যদি তার স্বামী তাকে ফেরানোর কূটনৈতিক উদ্যোগ নেন তাহলে এটা বৃটেনের জন্য একটি বড় মাথাব্যথার বিষয় হবে। কারণ, আরব আমিরাত যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ। ঘটনাটি জর্ডানের জন্যও বিব্রতকর। কারণ প্রিন্সেস হায়া জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহর সৎবোন। আবার জর্ডানের বিপুল সংখ্যক নাগরিক দুবাইতে কাজ করে ও বিপুল রেমিট্যান্স আয় করেন। তাই দুবাইয়ের সঙ্গে বিরোধে জড়ানো কঠিন হবে জর্ডানের জন্যও।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.