বিএসএমএমইউতে প্রথমবারের মতো লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন করা হয়েছে। বিষয়টিকে বিএসএমএমইউ’র হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক সাফল্য বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল এই বিষয়টি অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএসএমএমইউ’র প্রশাসন। অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ’র ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশের লিভারের বিভিন্ন রোগের সমস্যা একটি দুশ্চিন্তার বিষয়। যদি কোনো রোগীর লিভার সিরোসিস হয়ে যায় তাহলে তার একমাত্র চিকিৎসা লিভার ট্রান্সপ্লান্ট। এই চিকিৎসাটি বাংলাদেশে করতে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়, বিদেশে কোটি টাকা খরচ হয়। আরও বড় কথা দেশে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট চিকিৎসা ব্যবস্থা নাই বললেই চলে। যাদের টাকা আছে এরকম পাঁচ শতাধিক রোগী প্রতি বছর বিদেশে গিয়ে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করান। আর যারা পারেন না তারা চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুকে মেনে নিতে বাধ্য হন। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বিএসএমএমইউ’র হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগের মাধ্যমে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি এপ্রোচ অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের সহায়তা নিয়ে দেশেই সাশ্রয়ী ব্যয়ে বা স্বল্প খরচে দেশের রোগীদেরকে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট চিকিৎসাসেবা দেয়ার মহতী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং সফলভাবে এ বছরের ২৪শে জুন থেকে এই মহতী চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত রোগীরা লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করলে তারা নতুন জীবন ফিরে পান এবং প্রায় সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট চালু ও ২০ বছর বয়সী যুবকের জটিল ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিনামূল্যে সম্পন্ন করার বিষয়টি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। রোগী ও লিভার দাতা রোগীর মা দু’জনকেই আমি দেখেছি। তারা ভালো আছেন। তারা যাতে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায় এ জন্য দোয়া করবেন। তিনি আরও বলেন, যে দেশের একজন রোগীর অপারেশনের বিষয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত খোঁজ-খবর রাখেন সেই দেশের স্বাস্থ্যসেবা অবশ্যই এগিয়ে যেতে বাধ্য এবং স্বাস্থ্যসেবা উন্নত হবেই। তিনি বলেন, দেশে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট চালু হওয়ায় এই ধরণের রোগীদের দেশের বাইরে যাওয়ার সংখ্যা কমে আসবে। এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউ’র প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সিকদার, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান প্রমুখ।