মোদির হুঙ্কার: দেখি মমতা সভা করতে দেন কিনা
পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে নির্বাচনী প্রচারের সময়সীমা বৃহস্পতিবার রাত ১০ টাতেই শেষ করে দেয়ার নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে হুঙ্কার ও পাল্টা হুঙ্কার চলছে। মাত্র দুদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মোদির উদ্দেশ্যে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে সব বুঝে নেবার হুঙ্কার দিয়েছিলেন। আর উত্তর প্রদেশের প্রচার সভা থেকে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, দেখি দিদি আজ আমাকে দমদমে সভা করতে দেন কিনা। গত মঙ্গলবার বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ’র রোড শো ঘিরে যে গণ্ডগোল দেখা দিয়েছিল তাতে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙ্গার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। এর পরেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী প্রচারের সময়সীমা একদিন কমিয়ে দেয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এই সিদ্ধান্তকে বিজেপির ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। মমতার অভিযোগকে সমর্থন জানিয়েছেন বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতী সহ বিরোধী নেতারা। এর পরেই মোদি উত্তর প্রদেশ থেকেই মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেছেন। গতকাল মোদি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মধুরাপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনার দমদমে সভা করেন। এদিকে মমতারও চারটি সভা ও র্যালি করেছেন। এই সভাগুলি থেকে পরস্পরকে আক্রমণ যে নতুন মাত্রা পাবে তা সকলেই মনে করছেন। এদিন মোদি অভিযোগ করেছেন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঠাকুরনগর, কোচবিহারে তৃণমূলের গুণ্ডারা হামলা চালিয়েছে। মমতার জমানায় পশ্চিমবঙ্গে অরাজকতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। মঙ্গলবার অমিত শাহের রোড শোয়ে ব্যাপক উত্তেজনার পিছনে মমতা সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলে নরেন্দ্র মোদির অভিযোগ। তৃণমূলের গুণ্ডারাই বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি ভেঙেছে বলে দাবি করেছেন মোদি। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদের সরকার যথাস্থানেই পঞ্চধাতুর মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। মোদি অভিযোগ করেছেন, মমতাদিদি তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মানেন না। হিন্দুস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে না মানলেও, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার পাশে মায়াবর্তীর সমর্থনের প্রশ্নে মোদি এদিন কটাক্ষ করে বলেছেন, বহেনজি কুর্সির চিন্তা করে মমতার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি ভালোভাবেই জানেন, উত্তর প্রদেশ, বিহার-সহ পূর্বাঞ্চলের লোকদের বহিরাগত বলে রাজনীতি করছে মমতার সরকার। বহুজন সমাজ পার্টি প্রধান মায়াবতী মমতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বৃহস্পতিবার বলেছেন, একটা বিষয় স্পষ্ট অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদি পরিকল্পনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন। দেশের পক্ষে এটি একটি মারাত্মক প্রবণতা। প্রধানমন্ত্রীকে এ জিনিস মানায় না। মমতার সুরে সুর মিলিয়ে মায়াবতী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের চাপে কাজ করছে। আজ রাত দশটার পর থেকে প্রচার বন্ধ করেছে কমিশন। কারণ এদিন পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দুটি সভা রয়েছে। প্রচার যদি বন্ধ করার প্রয়োজন ছিল তাহলে তা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে করা হলো না কেন বলে তিনিও প্রশ্ন তুলেছেন।