৫৭ ধারার মামলায় আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ কারাগারে
ফেসবুকে ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় গ্রেপ্তার কবি ও আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালতে ইমতিয়াজকে হাজির করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। খাগড়াছড়ির এক পুরনো মামলায় গতকাল সকালে বনানীর বাসা থেকে কবি ও লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রচি ও সাখাওয়াত হোসেন তাসলিমসহ কয়েকজন আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন। জামিন আবেদন শুনানিকালে ইমতিয়াজের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘চার্জশিট দাখিল পর্যন্ত হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন ইমতিয়াজ। হয়তো কোনো একটা কাগজ আদালতে না পৌঁছানোর কারণে এরকমটি হয়েছে। আমরা তার জামিন চাচ্ছি।’ এ প্রসঙ্গে বিচারকবলেন, ‘২০১৯ সালের ২১শে জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আর চার্জশিটও বোধহয় চলে এসেছে।’ ইমতিয়াজের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, কোথাও একট ভুল হচ্ছে। এসময় বিচারক বলেন, ‘ভুল আপনাদের হতে পারে আবার আমাদেরও হতে পারে। আর আমার কাছেতো মূল নথি নাই।’ অন্যদিকে ইমতিয়াজের জামিনের বিরোধীতা করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে খাগড়াছড়ি সদর থানায় শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন। কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ দীর্ঘদিন থেকে পাহাড়ী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে লেখালেখি করেন। দুই বছর আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে দেয়া একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে মামলা করেন শফিকুল ইসলাম। এতে অভিযোগ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে ফেসবুকে ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্য করেছেন তিনি। ইমতিয়াজ মাহমুদের মিথ্যা লেখাসমূহ পড়ে ও দেখে যারা লাইক ও কমেন্ট করে উক্ত লেখাকে সমর্থন করেছেন তারা দেশের প্রচলিত আইনে অপরাধজনক কাজ করেছে।মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তার করা হয় কবি ও লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদকে। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান ইমতিয়াজ। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা ইমতিয়াজ মাহমুদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। তিনি দেশ, সমাজ ও মানবাধিকার নিয়ে লেখালেখি করেন। কবি হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার।উল্লেখ্য, কবি ও আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ ও কবি হেনরি স্বপনের মুক্তির দাবিতে গতকাল শাহবাগে বিক্ষোভ করেছে প্রগতিশীল-সামাজিক বিভিন্ন সংগঠন। ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় মঙ্গলবার বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কবি হেনরি স্বপনকে।