
নুসরাত হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করবে পিবিআই
নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার তদন্ত মোটামুটি শেষ হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই আদালতে জমা দেয়া হবে চার্জশিট। এতে মাদরাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হচ্ছে। মামলার সংশ্লিষ্ট কিছু কাগজপত্র তৈরি করে চলতি মাসের যেকোনো দিন আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিআইজি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরশেনে (বিএফডিসি) এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে তিনি এসব কথা বলেন। পিবিআই প্রধান বলেন, নুসরাতকে হত্যার অভিযোগে তার সহপাঠী, মাদরসার ছাত্র, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরকম একটি জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকে দায় নিতে হবে। এ ঘটনার আগে ও পরে যারা মদত যুগিয়েছে, তারাও যাতে শাস্তি পায়, সেজন্য পুলিশের অন্য সংস্থাগুলোও কাজ করছে বলে জানান বনজ কুমার মজুমদার। পাশাপাশি পিবিআই আদালতের কাছে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের সুপারিশ করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, নুসরাত হত্যার ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে করা আইসিটি মামলার তদন্ত শেষ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। আদালতে তারা সময়ের আবেদন করেছেন। ঘটনায় অভিযুক্ত ওসি ও এসআইয়ের ব্যবহার করা মোবাইল দু’টি জব্দ করেছে পিবিআইয়ের তদন্ত দল। তাদের বিরুদ্ধে এর কিছু তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে। এর আগে, গত ৬ই এপ্রিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১০ই এপ্রিল নুসরাত মারা যান। এরপর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যে মামলার দায়িত্ব সোনাগাজী মডেল থানা থেকে হস্তান্তর করে পিবিআইকে দায়িত্ব দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। গত ২৭শে মার্চ সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদারসার আলিমের ছাত্রী নুসরাতের পরিবারের করা যৌন নিপীড়নের মামলায় গ্রেপ্তার হন ওই অধ্যক্ষ সিরাজ। কারাগারে থেকেই তিনি নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেন। যা পরে পিবিআই’র তদন্তে উঠে এসেছে। নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার পর ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ১০ই এপ্রিল নুসরাতের মৃত্যুর পর তা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।