শায়েস্তাগঞ্জে নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের জমজমাট ব্যবসা
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবৈধ নোটবই ও চুক্তিবদ্ধ গাইড বই ধরিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ায় গোপন তৎপরতা আবারো শুরু হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে অভিজ্ঞজন বিদ্যানুরাগী অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অভিভাবক ও সচেতন মহলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা নির্ধারিত বিষয়ের কতিপয় শিক্ষক বেশ কয়েকটি প্রকাশনীর সঙ্গে গোপন চুক্তিবদ্ধ হয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদেরকে নিম্ন মানের নির্ধারিত বই কিনতে বাধ্য করেছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বলছেন, পরীক্ষায় এই বই থেকেই প্রশ্ন করা হবে। শিক্ষকদের এমন আশ্বাসে বই কিনতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা। শিক্ষকরা প্রতিটি ক্লাসে চুক্তিবদ্ধ প্রকাশনীর দেয়া সিলেবাস বুকলিস্ট শিক্ষার্থীদের হাতে দিয়ে ওই প্রকাশনীর বই কিনতে হবে বলেই বাধ্য করা হচ্ছে।সরজমিন ঘুরে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠান প্রধান অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলায় শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়, বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, নূরপুর উচ্চবিদ্যালয়, ইসলামী একাডেমি হাই স্কুল, নিজামপুর হাই স্কুল, মোজাহার উচ্চবিদ্যালয় সহ অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অগ্রযাত্রা, আদিল, জুপিটার, পাঞ্জেরী, লেকচার ও গ্যালাক্সি প্রকাশনীর বই স্কুলে পড়ানো হচ্ছে। এমন স্কুলগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষক জানান, এখন গ্রাম পর্যন্ত শিক্ষকরা বইয়ের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা উপজেলার প্রশাসনকেও ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করছেন। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার প্রাইমারি পর্যায়ে প্রাইমারি শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসারদের অগ্রযাত্রা বইয়ের ভিতর থেকে যেকোনো একটি মডেল প্রশ্ন সরাসরি প্রশ্ন পত্র হিসেবে তুলে ধরার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা অগ্রযাত্রা গাইড বইয়ের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। এদিকে স্কুল-কলেজের শিক্ষক সহ কয়েকজন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, আমাদের কোনো প্রকাশনীর সঙ্গে চুক্তি হয়নি বলে দাবি করেন। কোনো প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হলে সেটি তারা নিজ দায়িত্বে করবেন। শিক্ষার্থীরা বই কিনলে বা প্রাইভেট শিক্ষকদের কথায় বই কিনলে সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পত্রের প্রেক্ষিতে সকল বিদ্যালয়কে গাইড বই ব্যবহার না করতে চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গাইড বই ব্যবহার না করতে মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।
- ট্যাগ:
- ব্যবসা ও অর্থনীতি
- শিক্ষা
- অপরাধ
- গাইড বই
- হবিগঞ্জ