শত নারীর ভরসা মরিয়ম

মানবজমিন প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

সংসারে অভাব অনটনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা সংগ্রামী নারী মরিয়ম বেগম। তিনি এখন শত নারীর ভরসা। স্বপ্ন বেকার মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। হার না মানা স্বপ্নবাজ এই মরিয়ম কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের আস্করনগর বানিয়াটারী মহিলা উন্নয়ন সমিতির সভানেত্রী। আত্মকর্মসংস্থানের একজন জয়িতা নারী। কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় সেলাই প্রশিক্ষণের দক্ষ ট্রেইনার হিসেবে সুপরিচিত। ১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয় আস্করনগর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। স্বামী একজন দর্জি। দর্জির কাজ করে সংসারের অভাব অনটন মেটানো সম্ভব হয়নি। সংসারের দরিদ্রতার সঙ্গে মোকাবেলা করে স্বামীর কাছ থেকে দর্জির কাজ রপ্ত করে নেন। পাশাপাশি আধুনিক দর্জি প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেই হয়ে উঠেন দক্ষ প্রশিক্ষক। প্রথমে তার নিজ এলাকার গরিব বেকার ও বিধবা মহিলাদের ডেকে এনে সেলাই প্রশিক্ষণসহ ১৬ ধরনের কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেন। প্রশিক্ষিত মহিলারা তাদের বাড়িতে সেলাই মেশিন কিনে কাজ করে আয় রোজগার করতে থাকেন। এসব সচ্ছল মহিলাদের দেখে দূর-দূরান্ত থেকে উদ্যমী মহিলা ও পুরুষরা কাজ শিখতে আসে মরিয়মের কাছে। ২০০৬ সালে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় আস্করনগর বানিয়াটারী মহিলা উন্নয়ন সমিতি স্থাপন করেন মরিয়ম। তার সমিতিতে প্রায় ৩শ নারী প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সেলাই প্রশিক্ষণ, টেইলারিং ব্লক বাটিক, এম্ব্রয়ডারি, কাটচুপি, বাঁশের তৈরি মোড়া, কারপেট, পুঁতির ভ্যানেটি ব্যাগ, পার্সব্যাগ, সোপিচ, বেতের শীতল পাটি, বিভিন্ন ডিজাইনের হাতপাখা, তাছাড়া শার্ট প্যান্ট, বোরকা, লেহেঙ্গা, কামিজ, পাজামা, সাফারি শার্ট, রাজ কোট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া এসব কাটিং মাস্টার হিসেবে গোটা জেলায় সাড়া জাগিয়েছেন। ২০১৫ সালে স্বামী দেলোয়ার হোসেন ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে অসহায় হয়ে পড়েন মরিয়ম। স্বামীর চিকিৎসা সেবায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। সংসারের সচ্ছলতা ফিরে আনার জন্য আরো উদ্যোমী হয়ে ওঠেন তিনি। তার অভিজ্ঞতা আর উদ্যমী কাজের পরিধি দেখে নাগেশ্বরী উপজেলা প্রশাসন থেকে ২০১৪ সালে তাকে জয়িতা সম্মাননা দেয়া হয়। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জিন্নাতারা ইয়াসমিনের সহযোগিতায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে তার সমিতি রেজিস্ট্র্রেশন, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মঞ্জুর আলমের সহযোগিতায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন ও উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন পান তিনি। বর্তমান জয়িতা ও উদ্যোমী নারী মরিয়ম দিনাজপুর, রাজশাহী, লালমনিরহাট, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে হাজার হাজার তরুণী ও যুব মহিলাদের নিয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বেকার যুব ও বিধবা মহিলারা কাজ শিখে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ খুঁজে পাক এ এমনটাই প্রত্যাশা এই উদ্যোমী নারীর। সব মিলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা কিংবা আর্থিক অনুদান পেলে তিনি কুড়িগ্রাম জেলায় মিনি গার্মেন্ট দিয়ে এলাকার বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতেন বলে জানান মরিয়ম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও