জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’ উদযাপন
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে : মুজিবনগর সরকার ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরার আহ্বানে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ১৭ এপ্রিল বুধবার ঐতিহাসিক 'মুজিবনগর দিবস' উদযাপন করা হয়। দিবসটির সূচনা করা হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদসহ এ সরকারের সকল নেতৃবৃন্দের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অত:পর দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শুনানো হয়। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ প্রদত্ত বক্তব্যে মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য ও ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্্রকাননে ১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণ করে, আর সেদিন থেকে এই স্থানটি পরিচিতি পায় মুজিবনগর নামে। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও আইনগত ভিত্তি স্থাপনে এই সরকারের কোন বিকল্প ছিল না মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, "মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছে, এবং সরকার ব্যবস্থাপনাও সূচারুরূপে পরিচালনা করেছে। এমনকি আয়-ব্যায়ের হিসাব পর্যন্ত রেখেছে। মুজিবনগর সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে বিশ্ব জনমতকে পক্ষে আনা যা তারা অত্যন্ত সফলতার সাথে করতে পেরেছে"। তিনি নতুন প্রজন্মের মাঝে মুজিবনগর সরকারের ইতিহাস, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরার আহ্বান জানান। প্রবাসী বাংলাদেশীগণ এবং মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারি বাংলাদেশে গমনকালে যেন তাদের সন্তানদের এই ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করান সে মর্মে অনুরোধ জানান স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি বলেন, "জাতির পিতা এবং জাতীয় চার নেতা যে শোষণ ও ব নামুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নে আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাবো এবং জাতিসংঘের প্রতিটি স্তরে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করব, মুজিবনগর দিবসে এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা"। মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণও আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আলোচনা পর্ব শেষে মুজিবনগর সরকারের প্রয়াত সকল সদস্য, জাতীয় চার নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ এর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।