পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে থাকবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে পড়াশোনা করা ভুটানিজ প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং ঢাকা আসছেন শুক্রবার। উদ্দেশ্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করা এবং পহেলা বৈশাখের আয়োজনে অংশ নেয়া। লোটে ময়মনসিংহ মেডিকেল থেকে ১৯৯৮ সালে এমবিবিএস পাস করে। পরবর্তীতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রি নেন। ২০০৩ সালে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ১৫ বছর পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশী এলামনাই ভূটানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। বাংলাদেশে তার অনেক স্মৃতি রয়েছে। যৌবনের সূচনা থেকে বহু বছর এখানে কাটিয়েছেন তিনি। ১২ মাসের ১৩ পার্বনের বাংলাদেশে উৎসব আয়োজন বাংলাদেশীদের মতই উদযাপন করতেন তিনি। দলমত নির্বিশেষে এখানে তার অনেক বন্ধু রয়েছে, যারা রাজনীতিসহ এখানকার বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত। তাই তো প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার পরপরই শিক্ষাজীবনের সোনালী অধ্যায়ের স্মৃতি বিজরিত বাংলাদেশে আসার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন ডা. শেরিং। কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রটোকল এবং অন্যান্য প্রস্তুতিতে খানিকটা সময় নিতে হয়েছে। বলা যায় এ জন্য কিছুটা দেরি হয়ে গেছে কিন্তু খুব একটা দেরি নয়। তাছাড়া তিনি এমন একটা সময়কে সফরের জন্য বেছে নিয়েছেন যেটা তাকে অনেক বেশী আন্দন দেবে, স্মৃতি হাতরে বেড়ানোর জন্যও এটা উপযুক্ত সময়ই, বলছেন সফর প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত ঢাকার কূটনীতিকরা। তাদের দেয়া তথ্য মতে, উৎসব করতে পছন্দ করা ডা. শেরিংকে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সব বাঙ্গালি প্রিয় উৎসব পহেলা বৈঠককে সামনে রেখেই বাংলাদেশ সফরের বিশেষ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করেছেন। ৪ দিনের সফরে শুক্রবার সকালে আসছেন। সফরের প্রথম দু’দিনে তিনি রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা সারবেন। রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করবেন। আর ১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখের সকাল থেকে কেবলই উৎসব করবেন। ভোরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে চ্যানেল আই আয়োজিত সুরের ধারার আয়োজনে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি তিনিও হয়ত তৃপ্ত হবেন। শুধু তাই নয়, পুরোনো বিদ্যাপীঠ ময়মনসিংহ মেডিকেল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও যাবেন তিনি। নিশ্চয়ই ওই দুই প্রতিষ্ঠানে তার অনেক পুরনো বন্ধুদের দেখাও পাবেন। যা তাকে বাড়তি আনন্দ দেবে হয়ত। রাষ্ট্রীয় আয়োজন, বৈঠকাদিকে যা হবে: কূটনীতিকরা আভাস দিয়েছেন, ‘রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচা’র মতই ভূটানিজ প্রধানমন্ত্রী তার বাংলাদেশ সফরে উৎসবের পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, অভ্যন্তরীণ নদীপথ, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করবেন। ভুটান বাংলাদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিতে আগ্রহী। তাছাড়া শিক্ষাখাতে বিশেষ করে মেডিকেল কলেজে আরও শিক্ষার্থী পাঠাতে চায় দেশটি। আগামী শনিবার এসব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। বৈঠকে নৌ কার্গো চলাচল, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত বিষয়ক, অভ্যন্তরীণ নৌপথসহ বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সইয়েরও প্রস্তুতি রয়েছে। ওই দিনেই প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন তিনি। শুক্রবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে তার সফর শুরু হবে। পরে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশী ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও তার মতবিনিময় হবে।