‘নীলগাই’ দুটি এখন রামসাগরে

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

আকস্মিকভাবে  প্রত্যাশা পূরণ হতে যাচ্ছে দিনাজপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং সামাজিক বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের। দেশের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী নীলগাইয়ের বংশ বিস্তারের সুযোগ এসেছে। দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে এখন অবস্থান করছে মাদি ও ষাঁড় দুটি নীলগাই। এই প্রাণী দুটি দেখতে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করছে রামসাগরে।ঠাকুরগাঁওয়ে উদ্ধার হওয়া মাদি নীলগাইটির বংশ বিস্তারে একটি সঙ্গী খুঁজছিল দিনাজপুর সামাজিক বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। কাকতালীয়ভাবে নওগাঁয়ে পাওয়া সেই কাঙ্ক্ষিত ষাঁড় নীলগাইটি এখন দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে অবস্থান করছে। শুক্রবার রাতে রাজশাহী থেকে দিনাজপুরে নিয়ে আসা হয়েছে নীলগাইটি। এতে বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী নীলগাই দুটি আকস্মিকভাবে মিলে যাওয়ায় এখন এর বংশবিস্তারের সুযোগ পেয়েছে দিনাজপুর সামাজিক বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। দিনাজপুরের রামসাগর দীঘি জাতীয় উদ্যানে ৪ মাস থেকে অবস্থান করছে, দেশের একমাত্র মাদি নীলগাইটি। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল সীমান্তের কুলিক নদী ধার থেকে উদ্ধার হওয়া এই বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী নীলগাইটির গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হলেও এর বংশ বিস্তারের স্বপ্ল দিখছিল দিনাজপুর সামাজিক বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে চ্যানেল আইতে রিপোর্টও প্রচারিত হয়। বিলুপ্ত প্রজাতির নীলগাই সর্বশেষ ১৯৪০ সালে দেখা মিলেছিল পঞ্চগড় জেলায়। এটি উদ্ধারের আগে বাংলাদেশে আর কোথাও দেখা মেলেনি এই প্রাণীটির। গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর বিকালে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈলের কুলিক নদীর ধারে এলাকাবাসী উদ্ধার করে এই বিরল প্রজাতির এই প্রাণীটি। প্রাণীটি জবাই করে মাংস খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উদ্ধারকারীরা। কিন্তু খবর পেয়ে স্থানীয়  প্রশাসন প্রাণীটিকে উদ্ধারের পর হস্তান্তর করে দিনাজপুর সামাজিক বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের। প্রাণীটির গর্ভে বাচ্চা ছিল। ধরার সময় ধাওয়ায় প্রাণীটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আঘাতজনিত কারণে মুখ ও শরীরের বেশকিছু স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয় প্রাণীটির। এতে গর্ভের বাচ্চাটি জীবিত প্রসব হলেও কিছুক্ষণ পর মারা যায়। চিকিৎসা, সেবা-যত্ম আর প্রয়োজনীয় নিয়মিত খাবার দেয়ায় প্রাণীটি এখন সুস্থ সবল। বিলুপ্ত প্রজাতির দেশের একমাত্র এই নীলগাইটি দেখতে প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করছে দিনাজপুরের রামসাগর দীঘি জাতীয় উদ্যানে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী নীল গাইটি এখন প্রায় সুস্থ-সবল। বংশ বিস্তারে সক্ষম। এ জন্য তার সঙ্গী খোঁজা হচ্ছিল। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে একটি নীল ষাঁড় এনে এর বংশ বিস্তারের উদ্যোগ নিয়েছিল দিনাজপুর সামাজিক বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। এমনটাই জানিয়েছেন, রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক রোটারিয়ান একেএম আবদুস সালাম তুহিন। তিনি জানান, দিনাজপুরের রামসাগর দীঘি জাতীয় উদ্যান বন্যপ্রাণীর বংশ বিস্তারে অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। ৬টি চিত্রাহরিণ এনে রামসাগর দীঘি জাতীয় উদ্যান প্রায় আড়াই শতাধিক চিত্রাহরিণের বংশ বিস্তার ঘটেছে। বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী নীলগাইটিরও বংশ বিস্তার ঘটবে বলে তিনি ছিলেন আশাবাদী। এরই মধ্যে কাকতালীয়ভাবে দ্বিতীয় নীলগাইটি উদ্ধার হয় ২২শে জানুয়ারি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। এটি বিরল প্রজাতির পুরুষ নীলগাই। এটিও রামসাগর জাতীয় উদ্যানে মাদি নীলগাইটির সঙ্গে রেখেছে বন বিভাগ। পুরুষ নীলগাইটি রাজশাহী বন্যপ্রাণী ও পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা শেষে দিনাজপুরে পাঠানো হয়েছে, শুক্রবার রাতে। রাজশাহী চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফরহাদ উদ্দিন জানিয়েছেন, উদ্ধারের সময় পায়ে, পেটে ও রানের কাছে আঘাত পেয়েছিল নীলগাইটি। এতে শরীরের ওই স্থানগুলোতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অ্যান্টিবায়োটিকসহ বেশ কয়েকটি ওষুধ প্রয়োগ পর সুস্থ হয়ে ওঠে নীলাগাইটি।শুক্রবার বিকালে রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে নীলগাইটি দিনাজপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান ও রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায় রোটারিয়ার একেএম আবদুস সালাম তুহিনের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে তারা নীলগাইটি সতর্কতা ও যত্নের সঙ্গে রামসাগর জাতীয় উদ্যানে নিয়ে আসেন। দিনাজপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এই প্রাণী বিরল। বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণীর সংখ্যা বাংলাদেশে এখন দুটিতে দাঁড়ালো। দুটিই প্রাপ্তবয়স্ক। তাই তাদের একসঙ্গে রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটবে। ফলে বিলুপ্তপ্রায় এই বন্যপ্রাণীর সংখ্যা দেশে আবার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন তিনি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও