রোহিঙ্গাদের নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছে
রোহিঙ্গাদের নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা বাড়ছে। কারণ রোহিঙ্গারা দিন দিন বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গারা আসার সময় সম্প্রতি নিহত যুবলীগ নেতা মো. ওমর ফারুক বেশ সহায়তা করেন। উদ্যোগী হয়ে ওমর ফারুক স্থানীয় বাসিন্দাদের সমন্বয় করেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়কেন্দ্র ও ত্রাণের ব্যবস্থা করেন। রোহিঙ্গাদের এত সহায়তা দিলেও তারাই ওমর ফারুককে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাপন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে প্রতিবাদমুখর হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় যুব সমাজ এবং সচেতন মহলের লোকজন রোহিঙ্গাদের কক্সাবাজারে দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের বিরোধিতা করে বিভিন্ন ফোরাম, সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন। জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে অসন্তোষ কমিয়ে আনার কাজ করছে। আগামীতে স্থানীয় জনগণ এক হয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা জনসাধারণের অনেকেই ক্যাম্পের ভেতরে ও বাইরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি ক্যাম্পের ভেতরেই রোহিঙ্গাদের জন্য ছোট ছোট বাজার গড়ে উঠেছে। এসব বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান পাট থেকে শুরু করে স্বর্ণালঙ্কার তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা রয়েছে। এসব বাজার থেকে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ চাঁদা তুলছে। এসব চাঁদা নিয়েও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন দল বা উপদলে ভাগ হয়ে যাচ্ছেন তারা। এতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে যেসব দেশি বিদেশি এনজিও ও আর্ন্তজাতিক সংস্থা কাজ করছে তাতে রোহিঙ্গা নাগরিকরা মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরি পাচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগণ এ বিষয়গুলো সন্দেহের চোখে দেখছে এবং বিভিন্ন সময় এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়ার জন্য স্থানীয় যুবকরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। স্থানীয় জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সম্প্রতি স্থানীয় জনগণের ক্ষোভ প্রশমনের জন্য কক্সাবাজারের ডিসি দক্ষতা উন্নয়ন ও চাকরি মেলার আয়োজন করেন। এর মাধ্যমে এক দিনে তিনশ’ জনের চাকরি দেয়া সম্ভব হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের এসব ক্ষোভের কথা এরই মধ্যে সরকারের ঊর্ধ্বতনরা জেনেছেন। সে অনুযায়ি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।