ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার ইস্যুতে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে ঘোষণাটির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির সুপারিশে এক নির্দেশিকা জারি করে ৩৭০ ধারা বাতিল করেন ভারতীয় প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোভিন্দ। ওই ধারা অনুসারে, বেশ খানিকটা স্বায়ত্ত শাসন ও বিশেষ সুবিধা পেতো কাশ্মীর সরকার। তবে এমএল শর্মা নামে এক আইনজীবী দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্টের ওই নির্দেশ বেআইনি। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন তিনি। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোয় বলা হচ্ছে, ৩৭০ ধারা বাতিল নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে ভারতে। পার্লামেন্টে সিদ্ধান্তটির পক্ষে ও বিপক্ষে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আগ থেকেই আন্দাজ করেছিলেন যে, ঘোষণাটির বিপক্ষে মামলা হতে পারে। মঙ্গলবার তেমনটিই ঘটেছে। উল্লেখ্য, ৩৭০ ধারা অনুসারে কাশ্মীর সরকারের অনুমোদন ছাড়া ধারাটি বাতিলের অধিকার ছিল না ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু গত এক বছর ধরে সেখানে কার্যত কোনো রাজ্য সরকার নেই। গত বছরের জুনে রাজ্যটির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে সেখানে রাজ্যপালের শাসন চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ, বিজেপি সরকারের জন্য কেবল তাদের নিয়োগকৃত রাজ্যপালের অনুমতি নেয়াই যথেষ্ট ছিল। বিজেপি সরকারের দাবি, এটা তাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। তবে তাদের দাবি নিয়ে বিভক্ত আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত। একজন আইন বিশেষজ্ঞ শুভাষ কেশ্যপ বলছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত সংবিধান মেনেই নেয়া হয়েছে। এতে ভুল নেই। কিন্তু অপর এক বিশেষজ্ঞ এজি নুরানি বলেন, এটা একটি অবৈধ সিদ্ধান্ত, জালিয়াতি করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব।মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের নির্দেশিকাকে ‘বেআইনি’ ঘোষণার আবেদন করেছেন আইনজীবী শর্মা। জরুরি ভিত্তিতে ওই মামলার শুনানির আবেদনও করেছেন তিনি। তার যুক্তি, ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করতে গেলে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভায় তা নিয়ে আলোচনা করতে হতো। কিন্তু, তা না করেই একতরফাভাবে ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে। তবে সরকার জানিয়েছে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ অস্থায়ী। তা যেকোনো সময় রদ হয়ে যেতে পারে। আর সেই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতিকেই। সরকারের ব্যাখ্যা, জম্মু-কাশ্মীরে এখন আর বিধানসভা নেই। সেখানে রাষ্ট্রপতির শাসন চলছে। তাই রাষ্ট্রপতি ওই নির্দেশিকা জারি করেছেন।এর আগে সোমবার বিরোধী দল জম্মু-কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট জানিয়েছিল, তারা ঘোষণাটির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবে। ওই দিনই দলের নেত্রী শেহলা রশিদ বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব। তবে তার আগেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন আইনজীবী এমএল শর্মা।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ রায় দেয়, ৩৭০ ধারা আর অস্থায়ী নয়। দীর্ঘদিন ধরে তা সংবিধানের অংশ হিসেবে থাকায় এখন তা প্রায় স্থায়ী অনুচ্ছেদেরই মর্যাদা পেয়েছে। ফলে, ওই রায়কে সামনে রেখেও আদালতে যুক্তি সাজানো হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।
সম্পূর্ণ
আর্টিকেলটি পড়ুন