মহিমান্বিত মৃত্যু
মৃত্যু একটি অবধারিত সত্য। ‘জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে’। ‘কুল্লু নাফসিন জাইকাতুল মউত’। প্রতিটি জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মৃত্যু শেষ করে দেয় জীবন। কিন্তু যে জীবন মৃত্যুকে জয় করতে পারে, সেটিই সার্থক জীবন। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, শরিফ ওসমান হাদি সত্য ও ন্যায়ের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। যারা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিরোধ করে মৃত্যুবরণ করে ইসলামের পরিভাষায় তাদের শহীদ বলা হয়। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিশ্বাস করতে চায়, হাদি শাহাদতবরণ করেছেন। সময় টিভির সাক্ষাৎকারে হাদি বলেছিলেন : ‘হায়াত মউতের মালিক আল্লাহ, ন্যূনতম সিকিউরিটি নিয়ে চলাও হচ্ছে সুন্নাহ। কিন্তু আমাদের লড়াইটা হলো-আমার মা স্বাভাবিকভাবেই কান্নাকাটি করেন, আমার পরিবারের সবাই।
তো আমি আমার মাকে বলেছি, দেখো আমরা তো একটা লড়াইয়ে নেমেছি। আমার মনে হয় কী, কোনো রাজনীতিবিদের বাসায় মৃত্যু হইতে পারে না। এটি কোনো ভালো মৃত্যু না। যিনি রাজনীতি করেন, যিনি লড়াই করেন, যিনি বিপ্লবী, যিনি সংগ্রামী, তার মৃত্যু হবে একটি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। একটা রাজপথে একটা গ্লোরির মৃত্যু। আমি তো ভীষণভাবে প্রত্যাশা করি, আমি ছোটবেলা থেকে এ স্বপ্নটা দেখি, আমি অনেক জায়গায় বলেছি, একটা তুমুল মিছিল হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সেই মিছিলের সামনে আমি আছি, কোনো একটা বুলেট এসে আমার বুকটা হয়তো বিদ্ধ করে দিয়েছে। এবং সেই মিছিলে আমি হাসতে হাসতে শহীদ হয়ে গেছি। এবং সবাই যখন মৃত্যুটাকে ভীষণ ভয় পায়, আমি তখন হাসতে হাসতে আল্লাহর কাছে ভীষণ সন্তুষ্টি নিয়ে পৌঁছাতে চাই। যে আমি একটা ন্যূনতম ওই জীবনটা লিড করতে পারলাম যে, আমি একটা ইনসাফের হাসি নিয়ে আমি আমার আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে চাই।’ এ কঠিন উচ্চারণ সহজ নয়। লক্ষ মানুষের মধ্যে কেবল নিবেদিতপ্রাণ মানুষ এ ধরনের উচ্চারণ করতে পারে। হাদির নিবেদিতপ্রাণ অনির্বাণ হয়ে বাংলাদেশের মানচিত্রে চির অমর হয়ে থাকবে। হাদির মৃত্যু মহিমান্বিত মৃত্যু।