সময়–সুযোগ মিললে পরে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেন আজকালকার বেশির ভাগ দম্পতি। পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, আর্থিক স্থিতি, নিজের পছন্দ—সবকিছু মেলাতে গিয়ে অনেক সময় মাতৃত্ব পিছিয়ে যায়। কিন্তু যখন সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখন উঠে আসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটি হলো ডিম্বাণু রিজার্ভ বা সঞ্চয় কেমন।
ডিম্বাণু রিজার্ভ বলতে একজন নারীর ডিম্বাশয়ে বিদ্যমান ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণগত মানকে বোঝায়। একজন নারী জন্মের সময় নির্দিষ্টসংখ্যক ডিম্বাণু নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। বয়ঃসন্ধিকালে সেই সংখ্যা কমে আসে এবং প্রতি মাসে ডিম্বস্ফোটনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তা হ্রাস পেতে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে শুধু ডিম্বাণুর সংখ্যা নয়, ডিম্বাণুর গুণগত মানও কমে যায়। এই দুইয়ের সম্মিলিত প্রভাব পড়ে নারীর প্রজনন সক্ষমতার ওপর।
বন্ধ্যত্ব ও ডিম্বাণু রিজার্ভের সম্পর্ক
নারীর প্রজনন সক্ষমতা সর্বোচ্চ অবস্থায় থাকে ২০-৩০ বছর বয়সে। ৩৫ বছরের পর থেকে ডিম্বাণু রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করে। বাহ্যিকভাবে সুস্থ থাকলেও ডিম্বাণু রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে, যা বোঝা মুশকিল। এক বছর নিয়মিত ও অসুরক্ষিত সহবাসের পরও গর্ভধারণ না হলে তাকে ইনফার্টিলিটি বলা হয়। ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা ছয় মাস ধরা হয়।
নারীদের ক্ষেত্রে ডিম্বাণু রিজার্ভ কমে যাওয়া ইনফার্টিলিটির একটি বড় কারণ। রিজার্ভ কম থাকলে নিয়মিত ডিম্বস্ফোটন ব্যাহত হতে পারে। গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায় এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। তবে মনে রাখতে হবে, ডিম্বাণু রিজার্ভ কম মানেই গর্ভধারণ অসম্ভব, এমন নয়।
ডিম্বাণু রিজার্ভ কমে কেন
বয়স বৃদ্ধি ছাড়াও ডিম্বাণু রিজার্ভ কমে যাওয়ার পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে। পরিবারের কারও হলে, ডিম্বাশয়ে অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশন, এন্ডোমেট্রিওসিস, দীর্ঘদিন ধূমপান, অটোইমিউন রোগ, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ইত্যাদি। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই অল্প বয়সে ডিম্বাণু রিজার্ভ কমে যেতে পারে, যাকে বলা হয় প্রিম্যাচিউর ওভারিয়ান ইনসাফিসিয়েন্সি।