You have reached your daily news limit

Please log in to continue


তাজউদ্দীন আহমদের সতর্কবার্তা আজও প্রাসঙ্গিক

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১, কেবল সন্ধ্যা নেমেছে। কলকাতার ৮ নম্বর থিয়েটার রোডে প্রবাসী সরকারের প্রধান কার্যালয়। সেখানে একটি কক্ষে একা বসে আছেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। কনকনে শীতের বাতাস তাঁকে ছুঁয়ে যাচ্ছে, তবে সেদিকে মনোযোগ নেই গভীর চিন্তায় নিমগ্ন এই প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ফারুক আজিজ খান কক্ষে ঢুকে বিস্মিত হয়ে গেলেন। চারদিকে বিজয়ের উচ্ছ্বাস, অথচ প্রধানমন্ত্রী চিন্তাচ্ছন্ন!

ফারুক সাহেব তাজউদ্দীনের শরীরে একটি কম্বল জড়িয়ে দিলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘স্যার, আপনাকে অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে। কী ভাবছেন?’ তাজউদ্দীন উত্তর দিলেন, ‘দেশ তো স্বাধীন হলো, কিন্তু এই দেশ মানুষের বসবাসের যোগ্য হবে তো?’

তাজউদ্দীনের এই আশঙ্কা স্বাধীনতার কয়েক বছরের মধ্যেই বাস্তবে রূপ নেয়। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারের জনগণের রাষ্ট্র গড়ার বদলে শুরু হয় ক্ষমতার লড়াই। শুরু হয় দুর্নীতি, অবিচার, সন্ত্রাস ও হত্যার মচ্ছব। সপরিবার নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জেলখানায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন তাজউদ্দীন আহমদসহ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতা। দেশ স্বাধীন হলো বটে, কিন্তু জনগণের মুক্তি মিলল না অমানুষদের হাত থেকে।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর, যেদিন ভারত বাংলাদেশকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, সেদিনও তাজউদ্দীন স্ত্রীর কাছে আশঙ্কাপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন। সৈয়দা জোহরার সামনে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত পারিবারিক জীবন যাপন করবেন না। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই তিনি নিজেকে পরিবার থেকে দূরে রেখেছিলেন, যেন নেতৃত্বে থেকেও একই ত্যাগের উদাহরণ হতে পারেন।

স্বীকৃতির পর উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ফ্ল্যাটে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক শেষে ফেরার পথে তিনি আমাদের ফ্ল্যাটে এসেছিলেন। খুব অল্প সময়ের জন্য। তখনো তাঁর মুখ ছিল মলিন এবং চোখ ছিল অজানা ভবিষ্যৎ নিয়ে মগ্ন।

আমাদের শোবার ঘরে গিয়ে তিনি জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সংযমের প্রতীক তাজউদ্দীনের চোখ দিয়ে সেদিন অঝোরে অশ্রু ঝরছিল। তিনি কাঁদছিলেন, অবিরাম। তাঁর সহধর্মিণী বুঝেছিলেন, তিনি প্রিয় মুজিব ভাইকে মনে করছেন, যিনি তখন পাকিস্তানে বন্দী। বাংলাদেশের জন্য এত বড় অর্জন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি—অথচ মুজিব ভাই পাশে নেই।

তাজউদ্দীন কখনোই এই যাত্রা একা করতে চাননি। মুজিব ভাইকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুজিব ভাই সিদ্ধান্ত নেন যুদ্ধে না আসার, কোনো দিকনির্দেশনাও পাওয়া যায়নি। তবু তাজউদ্দীন আহমদ নিজের দায়িত্ব পালন করে যান। বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে গঠন করেন কার্যকর মুজিবনগর সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বেই অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধে বিজয়, অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। 

মাত্র ৯ মাসে যুদ্ধকালীন প্রশাসন, আন্তর্জাতিক কূটনীতি, শরণার্থী ব্যবস্থাপনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের দক্ষতার সঙ্গে সংগঠিত করে এই সরকার বিজয় নিশ্চিত করে। একটি সফল সরকারের নেতার আচরণ কেমন হওয়া উচিত, তা যুদ্ধকালে তাজউদ্দীন আহমদকে পর্যবেক্ষণ করলেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

যুদ্ধ বিজয়ী তাজউদ্দীনের সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। খন্দকার মোশতাক ও শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক চক্র তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন, সেই সময় তাজউদ্দীন আহমদ স্বগতোক্তি করেছিলেন, ‘মুজিব ভাই, আপনি আমাকে এত বড় বিপদের মধ্যে ফেলে গেলেন!’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন