পড়ে আছে ৮ হাজার কোটি টাকার পাইপলাইন
সাগরে অপেক্ষমাণ বড় ট্যাংকার থেকে পাইপের মাধ্যমে সরাসরি জ্বালানি তেল খালাসের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে গত বছরের আগস্টে। কিন্তু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগ না হওয়ায় এক বছরের বেশি সময় ধরে অলস পড়ে আছে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটি।
তেল খালাসে খরচ ও সময় বাঁচাতে ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ বা ভাসমান জেটি নির্মাণের এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট। এরপর চার দফা মেয়াদ বাড়ে। আর ব্যয় ৫ হাজার কোটি থেকে বেড়ে ৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পক্ষে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)।
এই প্রকল্পের নির্মাণ (ইপিসি) ঠিকাদার ছিল চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (সিপিপিইসি)। প্রকল্পের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকাদার হিসেবে সিপিপিইসিকে নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনাও এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গত বছর দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সেই আলোচনা থেমে যায়। এরপর দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে বিপিসি।
বিপিসি সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ঠিকাদার নিয়োগে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। দুটি প্রতিষ্ঠান এই কাজে আগ্রহ দেখায়। একটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে যোগ্যও বিবেচিত হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির দর বিপিসির বার্ষিক প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৫১ শতাংশ বেশি। এ কারণে শেষ পর্যন্ত আর প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর দরপত্র প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।
জানতে চাইলে বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্পটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তিন বছরের যে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল, দরদাতা প্রতিষ্ঠান তার চেয়ে ৫১ শতাংশ বেশি অর্থ দাবি করেছে। এ কারণে দরপত্রটি বাতিল করা হয়। এখন জিটুজি বা সরকার টু সরকার ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া বিবেচনায় রয়েছে। চীন ও ইন্দোনেশিয়ার দুটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে, তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই চলছে। আগামী বছরের মার্চে প্রকল্পটি চালুর লক্ষ্য রয়েছে।
তবে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি হলে জিটুজি অনুমোদন পাওয়া নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে। সেটি হলে মার্চে প্রকল্পটি চালু করা যাবে কি না, এ নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।