ব্যান্ড সদস্যদের একক গান করা উচিত নয়
কণ্ঠশিল্পী একটি ব্যান্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁর কণ্ঠেই জীবন্ত হয়ে ওঠে দলের গান। কণ্ঠশিল্পীকে দিয়েই কোনো ব্যান্ডকে সহজে চিনে নেন শ্রোতারা। তাই অন্য সদস্যদের চেয়ে সহজেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ব্যান্ডের ভোকাল আর্টিস্ট বা কণ্ঠশিল্পী। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক শিল্পী ব্যান্ডের বাইরে মিক্সড অ্যালবামে গেয়ে থাকেন। একক অ্যালবামও করেন কেউ কেউ। তবে ব্যান্ড সদস্যদের একক গান করা উচিত নয় বলে মনে করেন সোলস ব্যান্ডের ভোকাল পার্থ বড়ুয়া।
সম্প্রতি নব্বইয়ের দশকের ব্যান্ডের গল্প নিয়ে সাজানো একটি টিভি চ্যানেলের ‘নাইনটিজ মিউজিক স্টোরি’ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন পার্থ বড়ুয়া। কিবোর্ডিস্ট হিসেবে সোলসে এসে পরবর্তী সময়ে মূল শিল্পী হয়ে ওঠা, সেই সময়ের রেকর্ডিং, স্টুডিও কালচার, গানের আড্ডাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
পার্থ বড়ুয়া বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ব্যান্ডের শিল্পীর কোনোভাবেই আলাদা গান করা উচিত নয়। কারণ, একটা ব্যান্ডে চার-পাঁচজন যারাই থাকুক সবার এফোর্ট থাকে। যে গান গায় সে হলো ফ্রন্টলাইনার। ফ্রন্টলাইনারকে সবাই বেশি চেনে। তাই কণ্ঠশিল্পী সবার আগে জনপ্রিয় হয়ে যায়। খ্যাতির লোভটা ভয়ানক একটা বিষয়। সে যদি (আরও খ্যাতির আশায়) ব্যান্ড থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে মিক্সড অ্যালবাম বা সলো ক্যারিয়ার গড়ে তাহলে ব্যান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবেই। এটা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই।’
ব্যান্ডের বাইরে মিক্সড অ্যালবামেও গান করেছেন পার্থ। জানালেন বাড়তি টাকা আয়ের জন্যই গেয়েছেন মিক্সড অ্যালবামে। তবে তাঁর মতে, ব্যান্ডে থাকাকালে শিল্পীদের একক গান প্রকাশ করা ঠিক নয়। পার্থ বলেন, ‘মিক্সড অ্যালবামে গান করে কিছু টাকা পাওয়া যেত। এ কারণেই করা। যদিও মিক্সড অ্যালবামে আমার কিছু ভালো গান রয়েছে। কিন্তু আমি কখনো সলো অ্যালবাম করিনি। আমার বেশ ভালো অফার ছিল তখন। সে সময় যদি সলো অ্যালবাম করতাম তাহলে অনেক টাকা পেতাম। আমি যেটা বিশ্বাস করি, আমি সোলসের হয়ে গান গেয়ে পরিচিতি পেয়েছি। আমার প্রাপ্তি তো এমনিতেই অন্য সদস্যদের চেয়ে একটু বেশি, সেখানে নিজেকে সামলাতে দোষটা কোথায়?’
সময়ের বিবর্তনে এখন কমেছে অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। শিল্পীরা নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে গান প্রকাশ করছেন। এই বিষয়ে পার্থ বলেন, ‘এখন আমাদের সংগীত ইন্ডাস্ট্রিতে প্রযোজক কে আর শিল্পী কে, এটার পার্থক্য বোঝা কষ্টকর। দেখছি প্রযোজকই গান গায়। যে শিল্পী প্রযোজনা করছে তার আরেকজনের গান নেওয়ার দরকার কী। এ ছাড়া যে কয়েকটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের অনেক ধরনের চাহিদা। গানটি এমন হতে হবে, অমন হতে হবে। প্রযোজকদের কথা শুনে মনে হয়, গানবাজনা না করাই ভালো। কারণ, সে গানের কী বোঝে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। অথচ, সবাই নিজের মতো করে গান করবে, নতুন কেউ তার মতো করে নতুন কিছু করবে—এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু তাকে যখন বলা হয় এমন না, ওই গানের মতো করো, তাহলে নতুনত্ব কীভাবে আসবে। তাই যে যার মতো করে নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে গান আপলোড করছে।’