You have reached your daily news limit

Please log in to continue


মৃত্যুদণ্ড প্রদানই যথেষ্ট নয়, কার্যকর করতে হবে

১৮ নভেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবারের একটি পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার মৃত্যুদণ্ড।’ অন্য ৩টি পত্রিকার শিরোনাম যথাক্রমে, ‘গণহত্যায় হাসিনার ফাঁসির দণ্ড, ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডে হাসিনার মৃত্যুদণ্ড, এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড’। দেখা যাচ্ছে ১৮ নভেম্বরের প্রায় প্রতিটি দৈনিকের প্রধান শিরোনামে বড় ধরনের কোনো পার্থক্য নেই। কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে যত বিচার-আচার হয়েছে, তার মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারটি বিশাল তাৎপর্যবহ। বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে বিচারে আর কোনো সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানের মৃত্যুদণ্ড হয়নি। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে প্রমাণিত হলো ক্ষমতার সিংহাসন থেকে ফাঁসির রজ্জু বেশি দূরে নয়। একজন শাসক যদি দেশ চালাতে গিয়ে মানবতা হারিয়ে জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়, তখন তাকে ইতিহাস ক্ষমা করে না। দুনিয়ার তাবৎ ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শাসককে কোনো না কোনোভাবে এক সময়ে এসে করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। হিটলার, মুসোলিনি, ফ্রাংকো, সালাজার, পিনোশে, মার্কোস, দুভেলিয়ারসহ সব স্বৈরশাসককে করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। এদের সবার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। এমনটি নয়, কিন্তু শেষ পরিণতি ছিল চরম দুর্ভোগের। এরা ছাড়াও আরও অনেক স্বৈরাচারী শাসক ছিলেন, যাদের ভয়াবহ পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। ইরানের শাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অকৃত্রিম অনুগ্রহপুষ্ট ছিলেন, কিন্তু ইরান বিপ্লবের পর তাকে স্বদেশ ছেড়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার আশ্রয় হয়নি। তিনি দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসার নিয়ে মিসরে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছিল। রুমানিয়ার স্বৈরশাসক চচেস্কুর বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান ঘটলে চচেস্কু ও তার স্ত্রীকে সংক্ষিপ্ত বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়। চচেস্কুর শেষ শয্যা রুমানিয়ার মাটিতে হয়নি। তার লাশ হেলিকপ্টারে বহন করে কৃষ্ণসাগরে ফেলে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত জানা তথ্যে দেখা যায়, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন আলোচিত ৪৮ রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, এদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আমির আব্বাস হুবেইদা, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো, ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিস লুমুম্বা, ডি আর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলা, ইতালির প্রধানমন্ত্রী বেনিতো মুসোলিনি, রুমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নিকোলাই চচেস্কু, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফিদেকি তোজো, গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জর্জিও পাপাডোপুলোস, রুমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইয়ন আন্তেনেস্কু, দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট চুন দু-হুয়ান, পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফসহ ৪৮ জন। এদের মধ্যে রায় কার্যকর হয় ৩৫ জনের। তবে এদের মধ্যে দু-তিনজন রয়েছেন যাদের দণ্ড বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। এরা হলেন প্যাট্রিস লুমুম্বা, জুলফিকার আলী ভুট্টো ও সাদ্দাম হোসেন। বিশেষ করে প্যাট্রিস লুমুম্বার কাহিনিটি খুবই মর্মান্তিক। তিনি ছিলেন বেলজিয়াম সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কঙ্গোর জাতীয় নেতা। কঙ্গো খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ একটি দেশ। দেশটিকে স্বাধীনতা দিলেও বেলজিয়াম সাম্রাজ্যবাদীরা এটাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখতে চেয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেফতার করে হত্যা করা হয়। আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার জনগণ লুমুম্বার হত্যায় অশ্রু সংবরণ করতে পারেনি। লুমুম্বার মুত্যুর পর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘The most henious murder’, অর্থাৎ জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। তাই মৃত্যুদণ্ড হলেই সবক্ষেত্রে তাকে ন্যায্যতা দেওয়া যায় না।

শেখ হাসিনার ২টি সাজা হয়েছে-একটিতে মৃত্যুদণ্ড, অপরটিতে স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাবাস। শেখ হাসিনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব অপরাধ প্রমাণিত, তা হলো, আন্দোলনকারীদের শনাক্তে ড্রোন ও হেলিকপ্টার মোতায়েন, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশে রাজধানীর চানখারপুলে গুলি করে ৬ জনকে হত্যা এবং সাভারের আশুলিয়ায় গুলি করে ৬ জনকে হত্যার আদেশ। আসাদুজ্জামান খান কামাল যেসব অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে চানখারপুলে অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা দেওয়া ও প্রতিরোধের ব্যর্থতা এবং আশুলিয়ায় অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা দেওয়া ও প্রতিরোধে ব্যর্থতা। অভিযুক্ত ও দণ্ডিত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল আগেই দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। ভারতীয় সূত্রগুলো বলছে, লক্ষাধিক আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। অপরাধবোধ না থাকলে কেন এত বিশালসংখ্যক আওয়ামী লীগার দেশ থেকে পালিয়ে যাবে এবং ভারতে আশ্রয় নেবে? আরও কয়েকটি দেশে আওয়ামী লীগাররা পালিয়ে আছে। তৎকালীন পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ‘রাজসাক্ষী’ হয়ে অপরাধ প্রমাণে সহায়তা করায় তার শাস্তির মাত্রা কম বলে জানিয়েছেন বিচারক। তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তুষ্ট শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তবে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা তারা মেনে নিতে পারছেন না। তার সাজা আরও বাড়ানোর দাবি তুলেছে পরিবারগুলো। তারা দ্রুত রায় কার্যকরেরও দাবি জানিয়েছেন। শহীদ পরিবারের সদস্যদের এ প্রতিক্রিয়া খুবই স্বাভাবিক। আপনজনদের হারিয়ে তারা কি ক্ষমা অথবা প্রতিশোধ না গ্রহণের কথা বলতে পারেন? সর্বোচ্চ দণ্ডও তাদের দুঃখ লাঘবের জন্য যথেষ্ট নয়।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের যে কটি অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলোই কি তাদের একমাত্র অপরাধ? সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে শত শত ব্যক্তিকে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম করে রাখা, আয়নাঘরে গোপন বন্দি হিসাবে রাখা, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে লাখ লাখ মানুষকে জর্জরিত করা এবং ভিটামাটি ছাড়া করে ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করা, এ ধরনের নৃশংস অপরাধের শিরোমনি ছিলেন শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর বিপথগামী কিছু কর্মকর্তা। সব অপরাধ প্রমাণ করতে পারলে শেখ হাসিনাসহ অনেকেরই শতবার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। অবাক করা বিষয় হলো, এই অপরাধীরা তাদের অপকীর্তির জন্য অনুতপ্ত নয় এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে রাজি নয়। এদের ঔদ্ধত্য সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন