নভেম্বরেই ‘দুঃস্বপ্ন’ হতে পারে ডেঙ্গু : ফের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের ইঙ্গিত
ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসার কথা ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরের বাস্তবচিত্র একেবারেই উল্টো। বর্ষা শেষে, এমনকি শীতের দোরগোড়ায় এসে ডেঙ্গু এখন নতুন করে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। রাজধানী থেকে জেলা শহর, এমনকি গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। গত তিন মাসের তথ্য দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, প্রতি মাসে গড়ে দেড় গুণ হারে বেড়েছে রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। নভেম্বরের প্রথম সাত দিনেই প্রাণ গেছে ২৯ জনের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ধরন পাল্টে যাওয়ায় মশার প্রজনন চক্রও দীর্ঘ হয়েছে। ফলে একসময় কেবল বর্ষার রোগ হিসেবে যেটি দেখা দিত, এখন তা সারাবছরের আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রশাসনিক দুর্বলতা। নিষ্ক্রিয় মশা নিধন কর্মসূচি, অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও আগাম প্রস্তুতির অভাব। সবমিলিয়ে ডেঙ্গু এখন শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, বরং নতুন এক জনস্বাস্থ্য মহামারির আশঙ্কা তৈরি করছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আগস্টে সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১০ হাজার ৪৯৬ জন, মৃত্যু ৩৯ জনের। সেপ্টেম্বরে ভর্তি হওয়া রোগী বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৮৬৬ জনে, মৃত্যু হয় ৭৬ জনের। অক্টোবরে হাসপাতালে ভর্তি হন ২২ হাজার ৫২০ জন, মারা যান ৮০ জন। আর নভেম্বর মাসের প্রথম সাত দিনেই ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ৬৫২ জন, মৃত্যু ২৯ জনের। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসেই (নভেম্বর) রোগী ৩০ হাজার ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।
গত বছরের পরিসংখ্যান আরও উদ্বেগজনক। ২০২৪ সালে সারাদেশে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগী ছিলেন এক লাখ এক হাজার ২১১ জন। এর মধ্যে সর্বাধিক রোগী ভর্তি হয় নভেম্বরে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, এবারও সেই ধারার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, বরং বাড়তি তীব্রতা নিয়ে।

- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- ডেঙ্গুজ্বর
- এডিস মশা