৪১ পয়সার লেনদেনেও জুয়ার ছোঁয়া, আন্তর্জাতিক চক্রের ফাঁদে বাংলাদেশ
দেশজুড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে অনলাইন জুয়া। যা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে দুবাই-মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে টার্গেট করে আন্তর্জাতিক চক্রগুলো অনলাইনে ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রলোভনমূলক বিজ্ঞাপনের ফাঁদ। আর সেই ফাঁদে জেনে-বুঝে কিংবা কৌতূহলী হয়ে পা দিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। আবার এসব বেটিং অ্যাপের আড়ালেই গড়ে উঠেছে এক বিশাল অবৈধ অর্থ লেনদেনের নেটওয়ার্ক। যেখানে লাখ-লাখ টাকার পাশাপাশি সর্বনিম্ন ৪১ পয়সার লেনদেনের তথ্যও পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
এমন পরিস্থিতির লাগাম টানতে যৌথ টাস্কফোর্স গঠন, কনটেন্ট ফিল্টারিং ও অ্যালগরিদমিক নজরদারি বাড়ানোসহ কঠোর পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। সম্প্রতি অনলাইন জুয়া, বেটিং ও পর্নোগ্রাফি সাইট বন্ধ করতে সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি), বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মোবাইল অপারেটর এবং মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের সভায়ও অনলাইন জুয়া-বেটিং এবং এর মাধ্যমে অর্থপাচারের বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে।
দেশের নেটওয়ার্কে অনলাইন জুয়ার অবাধ প্রবেশ, ফাঁদে তরুণরা
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এখন খুব সহজেই অসংখ্য অনলাইন জুয়ার সাইটে প্রবেশ করতে পারছেন। সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি থাকা সত্ত্বেও নতুন নতুন ডোমেইন, ভিপিএন ও সোশ্যাল মিডিয়া লিংকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বেটিং সাইটগুলো সহজেই বাংলাদেশে সক্রিয় রয়েছে। বিভিন্ন টেলিগ্রাম চ্যানেল, ফেসবুক গ্রুপ ও ইউটিউব ভিডিওতে দেওয়া হচ্ছে প্রলোভনমূলক অফার— ‘মাত্র ১০ টাকা বাজি ধরুন, হাজার জিতুন’। এসব সাইটে অর্থ লেনদেনে ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো বিকল্প মাধ্যম। ফলে জুয়ায় আসক্ত অনেক তরুণ অজান্তেই আন্তর্জাতিক অর্থপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- জুয়া
- অনলাইন জুয়া