জোহরান মামদানির ‘দুনিয়া কাঁপানো ২১ মিনিট’
আজ থেকে শতবর্ষেরও বেশি আগে মার্কিন সাংবাদিক ও সমাজবাদী জন রিড লিখেছিলেন, 'টেন ডেস দ্যাট শুক দ্য ওয়ার্ল্ড'—বাংলা অনুবাদে—দুনিয়া কাঁপানো দশদিন। বহু বছর তার সেই বইটি কাঁপিয়েছিল বহু দেশের পাঠক-হৃদয়। ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় অক্টোবর বিপ্লবকে তিনি খুব কাছে থেকে দেখেছিলেন। সেটাই তার বইয়ের বিষয়বস্তু।
এই লেখার আলোচ্য বিষয় ভিন্ন হলেও প্রেক্ষাপট যুক্তরাষ্ট্র। কুশীলবও এক মার্কিনি। আর এটি দশদিনের ঘটনা নয়, এটি মাত্র ২১ মিনিটের গল্প-কবিতা-উপন্যাস-চিত্রশিল্প। এটি উপস্থাপিত হয়েছিল নিউইয়র্ক নগরীর ব্রুকলিনে।
গত ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কে জোহরান মামদানির বিজয়ের মধ্য দিয়ে যে ইতিহাস তৈরি হয়, তা বিশ্ব রাজনীতির জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ বললে খুব বেশি বলা হবে না। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে কীভাবে বিজয় অর্জন করতে হয়, সারা বিশ্বের রাজনীতিকদের জন্য সেই 'সহজপাঠ' তৈরি করেছেন জোহরান মামদানি। তারা শিক্ষা নিতে পারেন জোহরান মামদানির নির্বাচনী প্রচারণা কৌশল থেকে।
শুধু নির্বাচনে জেতাই যে একজন নেতার মূল লক্ষ্য হতে পারে না তা পরিষ্কার বোঝা গেল বিজয়মঞ্চে বিজয়ীর 'দুনিয়া কাঁপানো' ভাষণে। প্রায় ২১ মিনিটের সেই ভাষণে জোহরান মামদানি প্রমাণ করলেন, 'সততা শুধু সর্বোত্তম, নয় একমাত্র পন্থা', যা কোনো রাজনীতিবিদের কাছে আজকাল কেউ প্রত্যাশা করেন না। কেননা, সারা বিশ্বে সাধারণ দৃশ্য হলো—রাজনীতিবিদরা জনকল্যাণের কথা বলে নির্বাচনে জয়ী হলেও দিন শেষে তারা নিজেদেরই ভাগ্য-উন্নয়নে ব্যস্ত থাকেন।
বিজয়ের মঞ্চে সেই 'দীর্ঘ ঐতিহ্য' ভাঙার প্রতিশ্রুতিই দিলেন জোহরান মামদানি। বললেন, 'আজ সেই রাজনীতির মৃত্যু হলো, যে রাজনীতি বেশিরভাগ মানুষকে ত্যাগ করে শুধুমাত্র নিজেদের মানুষকে গ্রহণ করে।' স্বর আরও একধাপ চড়িয়ে বললেন, 'আমরা নতুন যুগের নেতৃত্ব শুরু করতে যাচ্ছি। আমরা আপনাদের জন্য লড়াই করবো। কারণ, আমরা আপনাদেরই লোক।'
- ট্যাগ:
- আন্তর্জাতিক
- নির্বাচনে জয়ী