কিশোর প্রেম : মোহের নকশা থেকে মৃত্যুর নাট্যমঞ্চে

জাগো নিউজ ২৪ মাহফুজা অনন্যা প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৯

সুহানার বয়স সবে ষোলোতে পড়েছে। চোখে তার স্বপ্নের নীলাভ মায়া, আর হৃদয়ে কিশোর প্রেমের অচেনা কাঁপন। সে বিশ্বাস করত, ভালোবাসা মানে মুক্তি—প্রেমিকের হাত ধরলেই পৃথিবীর সব ভয় থেমে যাবে। কিন্তু পৃথিবী তাকে খুব নিষ্ঠুরভাবেই বুঝিয়ে দেয়—স্বপ্নের দিগন্তে সবচেয়ে বেশি অন্ধকারই লুকিয়ে থাকে।


এক সন্ধ্যায় তার প্রেমের কথা বাড়িতে ফাঁস হয়ে গেল। বাবা-মায়ের মুখ বিকৃত ক্রোধে ভরে ওঠে। মা কাঁদতে কাঁদতে বলে–মেয়ের জন্য সমাজে লজ্জায় মুখ দেখানো দায় হয়ে পড়েছে! বাবা ভেতরের দরজা বন্ধ করে চরম শাসনের ভাষায় বলে–“আর একপা ঘরের বাইরে দিলে পা ভেঙে দেবো!”


সুহানার বুকের ভেতর তখন একটা অদৃশ্য দেওয়াল চূর্ণ হতে থাকে। সে অনুভব করে—এই ঘর, এই রক্তের সম্পর্ক তাকে মানতে রাজি নয়। তার মনে পড়ে প্রেমিকের কণ্ঠস্বর– “তুমি এলে আমিই তোমার ঘর হবো—শুধু আমার কাছে চলে এসো”


রাত যখন গভীর হয়, চাঁদের আলো ঠান্ডা হয়ে জমে আসে গায়ে, সুহানা আলমারির গহনা আর টাকা ব্যাগে গুছিয়ে নেয়। কেউ তাকে ডাকে না, তবুও তার মনে হচ্ছিল—প্রতিটি জিনিস তোলার শব্দেই আকাশ কেঁপে উঠছে। তার কাঁপা হাত, আর বুকের ভেতর বৃষ্টি নামানো ভয় নিয়ে সে বেরিয়ে পড়ে অন্ধকার রাস্তায়।


রাস্তার বাতিগুলো তখন নিস্তব্ধতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে। সে দাঁড়িয়ে থাকে, অপেক্ষা করে—প্রেমিক আসবে। ঘণ্টা পেরোয়, রাত আরও গভীর হয়, কাঁধের চাদর পড়ে যায়, কিন্তু অপেক্ষার শেষ হয় না। হঠাৎ তার মনে হয়— প্রেমিক আসবে না। প্রতিজ্ঞা ছিল মধুর, কিন্তু পরিণতি হল প্রতারণার।


অন্ধকারে হাহাকার করা কয়েকটি ছায়া তার দিকে এগিয়ে আসে। তার চিৎকার শহরের বাতাস গিলে ফেলে। এক রাতেই সুহানা হারায় নিজের দেহ, হারায় নিজের আকাশ, হারায় সর্বশেষ নিরাপত্তার সবটুকু।


ভোরবেলায় রক্তমাখা এক কিশোরীকে উদ্ধার করে থানাপুলিশ। কেউ তাকে বলে – কচি মাল, কেউ বলে ‘পালিয়ে আসা মেয়ে’। কিন্তু কেউ একবারও বলেনি—“সে এখনও অবুঝ, কৈশোর পেরোয়নি তার”!


সমাজ তার প্রতি সকল দরজা বন্ধ করে দেয়। আইনের ফাঁক গলে, মানুষের চোখের ঘৃণার তাপে, সুহানাকে ঠেলে দেওয়া হয় সেই গলিতে—যেখানে মেয়েদের নাম থাকে না, থাকে শুধু দাম।


সেখানে তার নতুন নাম রাখা হয়—মল্লিকা! তার আগের নাম, আগের স্বপ্ন, আগের লজ্জা—সব তার থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। এক রাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজেকে দেখে।


চোখ দুটো যেন আর তার নয়—এ যেন কোনো মৃত সাগরের জল। তার হৃদয় নিঃশব্দে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—"ভালোবেসেছিলাম বলেই কি আজ আমি অপরাধী? আজ আমি শুধু ধর্ষিতা নই, ধর্ষিত আমার বিশ্বাসও!”

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও