লবণাক্ততা-পরগাছায় সংকটে সুন্দরবনের ‘সুন্দরী’
বলা হয়, সুন্দরী গাছের আধিক্যের কারণেই পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্যটি ‘সুন্দরবন’ নামে পরিচিত পেয়েছে। কিন্তু বনের মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধির পাশাপাশি এক ধরনের ‘পরগাছা’র অস্বাভাবিক বিস্তারে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে সেই সুন্দরী গাছ।
বনজীবী ও বন কর্মকর্তারা বলছেন, আগে থেকেই সুন্দরী গাছের ‘আগা মরা’ রোগ আছে। সুন্দরবনের পানি ও মাটিতে লবণাক্ততা বাড়ায় চারা না টেকায় বনে নতুন গাছও জন্মাছে কম। তার সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে লতা-জাতীয় একশ্রেণির ‘পরগাছা’র অস্বাভাবিক উপদ্রবে সুন্দরী গাছের অস্তিত্ব চরম হুমকিতে পড়েছে।
বনবিভাগ বলছে, এই পরজীবী ধীরে ধীরে সুন্দরী গাছের শ্বাসরোধ করছে। এরা মূল গাছের রস শোষণ করে বাঁচে। ফলে ধীরে ধীরে গাছ দুর্বল হয়; পাতা হলুদ হয়ে ঝরে যায় এবং এক পর্যায়ে গাছ মরে দাঁড়িয়ে থাকে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, পূর্ব বনবিভাগের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ সুন্দরী গাছ, বিশেষ করে বয়স্ক গাছে পরগাছা বাসা বেঁধেছে।
“আগে শাখা-প্রশাখায় সীমাবদ্ধ থাকা পরগাছা এখন গাছের মূল অংশ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এতে গাছ দুর্বল হয়ে একসময় শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।”
তবে এ নিয়ে কোনো গবেষণা না থাকায় কীভাবে সুন্দরী গাছ বাঁচানো যাবে, তা বলতে পারছে না বনবিভাগ। বিষয়টি এখন বন কর্মকর্তাসহ সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট সবার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।