ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ইতিহাস বেশ পুরনো। মূলত ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস বেলফোরের একটি ঘোষণার মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় তারা ফিলিস্তিনে একটি ‘ইহুদি জাতীয় আবাসভূমি’ প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে। বেলফোর এ ঘোষণা ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে, ফিলিস্তিন তথা আরব-ইসরায়েল সংকটের মূল সূত্রপাত ঘটায় এবং ফিলিস্তিনে ব্যাপক ইহুদি অভিবাসন শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রস্তাব ১৮১ গ্রহণ করে, যেখানে ব্রিটিশ ম্যান্ডেটভুক্ত ফিলিস্তিনকে দুটি রাষ্ট্রে ভাগ করার প্রস্তাব দেয়া হয়—একটি ইহুদি রাষ্ট্র, অন্যটি আরব। আরব দেশগুলো এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটার আগের দিন, অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ডেভিড বেন-গুরিয়নের (তৎকালীন ইহুদি এজেন্সির প্রধান এবং পরে ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী) ‘ডিক্লারেশন অব দ্য এস্টাবলিশমেন্ট অব দ্য স্টেট অব ইসরায়েল’ ঘোষণার মাধ্যমে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পার্শ্ববর্তী আরব দেশগুলো (মিসর, সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন ও ইরাক) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে, যা ‘প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ’ নামে পরিচিত। এ যুদ্ধের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের অনেক অংশ ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১৯৬৭ সালের জুনে ইসরায়েল মিসর, জর্ডান ও সিরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে। সেই যুদ্ধে ইসরায়েল-পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে জর্ডানের কাছ থেকে, গাজা উপত্যকা দখল করে মিসরের কাছ থেকে এবং গোলান মালভূমি দখল করে সিরিয়ার কাছ থেকে। ১৯৬৭ সালের এ যুদ্ধের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পুরোপুরি ইসরায়েল দখল করে নেয়। ইসরায়েলের এ দখলদারত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ফিলিস্তিনের জনগণ রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করে আসছে কয়েক দশক ধরে।