চট্টগ্রামের দুটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন : আসলাম-আব্বাসের অনুসারীদের বিস্ময়
চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মনোনয়নপ্রাপ্ত নেতাদের অনুসারীরা উল্লাস-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তবে ত্যাগী ও জেল-জুলুমের শিকার নেতারা মনোনয়ন না পাওয়ায় তাদের অনুসারীরা অবাক ও বিস্মিত হয়েছেন। কোথাও কোথাও তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে লায়ন আসলাম চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে আলী আব্বাসের নাম বাদ পড়ায় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। অনেকে আবার এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতেও পারছেন না। আব্বাসের অনুসারীরা শান্ত থাকলেও আসলামের অনুসারীরা রাতেই রাজপথে নামেন। মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন। দলের দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন না-এমন দুজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
আবার কোনো কোনো আসনে ত্যাগীরা মূল্যায়িত হওয়ায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছেন। এদিকে যে ছয়টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি, সেসব আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। চট্টগ্রামের তিন হেভিওয়েট নেতার তিন ছেলে মনোনয়ন পেলেও একজনের ছেলে বাদ পড়েছেন। যেসব আসনে ত্যাগীরা বাদ পড়েছেন, তাদের ধারণা-কারও দ্বারা হাইকমান্ড কোনো না কোনোভাবে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে। তবে তাদের বিশ্বাস-বাদ পড়া ত্যাগীদের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করবে দল। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য লায়ন আসলাম চৌধুরী ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন। তৎকালীন প্রশাসনের প্রধান টার্গেটও ছিলেন তিনি। আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে ১৬ বছরে তিনি ৭৪টি মামলার আসামি হয়েছেন। একটানা ৯ বছর জেল খেটেছেন। ৫ আগস্ট সরকারের পট পরিবর্তনের পর চট্টগ্রাম কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল আসলাম চৌধুরী মনোনয়ন পাবেন। কিন্তু চট্টগ্রাম-৪ আসনে (সীতাকুণ্ড) তার নাম না দেখে অনুসারীর বিস্মিত ও হতভম্ব হয়েছেন। তারা রাস্তায় নেমে আসেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। তবে মধ্যরাতে আসলাম চৌধুরীর নির্দেশে সড়ক থেকে তারা চলে যান। মঙ্গলবার বিকালে সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা সমাবেশ করেন। সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. কমল কদর জানান, আসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন না দিলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে। নয়তো তারা দল থেকে গণপদত্যাগ করবেন।