You have reached your daily news limit

Please log in to continue


মেট্রোরেলের বিয়ারিং দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই

মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আমাদের পিছু ছাড়ছে না। কখনো অগ্নিদুর্ঘটনা, কখনো সড়ক দুর্ঘটনা, কখনো ভবন ধসের দুর্ঘটনা, আবার কখনো গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে মানুষের মৃত্যু-এর সবকিছুই যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি সভ্য দেশের সংজ্ঞা কী? সভ্য দেশের সংজ্ঞা হয়তো অনেকভাবেই দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয়, যে দেশ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে পারে, অর্থাৎ দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু অথবা আহত হওয়ার ঝুঁকি যে দেশে সবচেয়ে কম বা আপেক্ষিকভাবে কম, সে দেশ ততটাই সভ্য। আমাদের দৃষ্টিতে যেসব দেশকে সভ্য বলে গণ্য করি, সেসব দেশে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে না-এমন নয়। কিন্তু এমন দুর্ঘটনার ঘটন সংখ্যা অনেক কম। বাংলাদেশে আমরা প্রতিনিয়ত উন্নয়নের কথা বলে চলেছি। উন্নয়ন যে কিছুটা হয়নি, তাও না। কিন্তু এর পাশাপাশি দুর্ঘটনার চিত্রগুলো রাখলে বুঝতে কষ্ট হবে না, আমাদের যে উন্নয়ন হচ্ছে তা আসলেই ফাঁপা।

প্রতিদিনের মতো গত রোববার সকালে অফিসের কাজে নারায়ণগঞ্জ থেকে মতিঝিলে আসেন আবুল কালাম। ট্রাভেল এজেন্সির চাকরির সুবাদে মতিঝিল থেকে বের হয়ে ফার্মগেট যান তিনি। হঠাৎ ফার্মগেট মেট্রো স্টেশনের ৪৩৩ নম্বর পিলারের বিয়ারিং প্যাড খসে পড়ে আবুল কালামের মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। নিহত আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর। সঙ্গে পাওয়া পাসপোর্ট থেকে তার নাম আবুল কালাম (৩৫) বলে জানা যায়। পাসপোর্টে মালয়েশিয়ার ভিসা লাগানো ছিল। পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে তাকে শনাক্ত করা হয়।

আবুল কালাম ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতেন। পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায় থাকতেন। আবুল কালামের মা-বাবা নেই। স্ত্রী আর দুটি সন্তান আছে। আকাশ থেকে বজ্রাঘাতের মতো আবুল কালামের অকস্মাৎ মৃত্যুতে তার স্ত্রী চোখে শুধু অন্ধকার দেখছেন। অশ্রুর বন্যা থামানো যাচ্ছে না। তার চেয়েও কঠোর বাস্তবতা হলো-সংসারের একমাত্র রোজগারের মানুষটির মৃত্যুর পর সংসারটি চলবে কী করে। সংসারে একজনের মৃত্যু ঘটলে জীবন হয়তো থেমে থাকে না। কিছু সময় বিরতির পর জীবন হয়তো চলতে শুরু করে নতুন কিছুকে আশ্রয় করে। কিন্তু এই থেমে যাওয়া এবং আবার চলতে শুরু করার মাঝখানে সময়টুকু খুবই কষ্টের। জীবন যখন আনন্দের ছন্দ হারিয়ে দুর্যোগের কুজ্ঝটিকায় ছেয়ে যায়, তখন কষ্টের কোনো সীমা থাকে না। সেই কষ্ট অন্যরা বোঝে না, বোঝে শুধু ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, কম্পন প্রতিরোধের জন্য সেতু বা উড়াল সেতুতে ইলাস্টোমোরিক বিয়ারিং প্যাড বসানো থাকে। এ প্যাড নিওপ্রেন বা প্রাকৃতিক রাবার দিয়ে তৈরি, যা পিলার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো হয়। কোনোটির ভেতরে কয়েক পরতে থাকে স্টিলের কাঠামো। আর উপরে থাকে রাবার। এগুলো ওজনে অনেক ভারী হয়। বিয়ারিং প্যাডের ওজন ছিল ১০০ কেজির বেশি। বিয়ারিং প্যাডটি পিলার থেকে ছিটকে সরাসরি ওই পথচারীর মাথায় পড়ে।

গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। এ কারণে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। এ ঘটনায় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর নিরাপত্তার উদ্বেগ তৈরি হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ল।

অল্প সময়ের মধ্যে দুবার বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার ঘটনায় মন্তব্য করতে হয় যে, মেট্রোরেল নির্মাণে যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। গত বছর মৃত্যুর মতো অঘটন না ঘটলেও এবার গেছে একটি প্রাণ। ত্রুটি চিহ্নিত করে সারাতে না পারলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। রাজধানীর বুক চিরে গড়ে ওঠা ৩৩ হাজার কোটি টাকার স্বপ্নের মেট্রো লাইনের নিচের অংশ এভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত রোববার একজনের মৃত্যুর পর দেশের বৃহৎ এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ নিয়ে নানা প্রশ্ন সামনে আসছে। প্রশ্ন উঠছে নকশার ত্রুটি, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের গাফিলতিকে কেন্দ্র করে। জানা গেছে, বিয়ারিং প্যাড স্থাপনের সময় বুয়েটের ল্যাব টেস্টে মান উত্তীর্ণ হয়নি। তাছাড়া ফার্মগেট থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত নকশা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে।

রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে মেট্রোরেল ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২ ধাপে চালু হয়। এখনো তিন বছর হয়নি। অথচ বিয়ারিং প্যাডের নকশাগত আয়ুষ্কাল থাকে ২০-৩০ বছর। এমন দুর্ঘটনা বিয়ারিং প্যাডের বয়সের কারণে নয়; বরং গভীরতর ও মৌলিক ত্রুটির ইঙ্গিত বহন করে। রাজধানীর ফার্মগেট স্টেশন এলাকায় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনাটিতে একটি বিয়ারিং খুলে নিচে পড়ে যায়, যা ইঙ্গিত করে যে, এটি আর পিয়ার ও ডেকের মধ্যে সংযোগ অবস্থায় ছিল না। এখানে অল্প কবছরে অকাল ক্ষয় বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবজনিত দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।

মেট্রোরেল প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল ২০১২ সালে। অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য জাইকার কাছ থেকে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। এটির প্রতি কিলোমিটারে নির্মাণ ব্যয় আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি এবং বিশ্বে প্রায় শীর্ষে। এ থেকেই বোঝা যায়, প্রকল্পটির ওপর ভর করে যাদের পক্ষে সম্ভব তারা অনেক মাখন তুলে নিয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন